After ED summon it seems Tollywood Actor Bonny Sengupta was connected to TMC despite joining BJP dgtl
Tollywood Actor Bonny Sengupta
ছবি মুক্তির মুখেই ইডির তলব! বিজেপিতে গিয়েও ‘তলে তলে তৃণমূলে’? বনি কি অভিনয়ের ছদ্মনাম?
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এর আগে অভিনয় জগতের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কাউকে তলব করেনি ইডি। প্রথম তলব এল এমন একজনের হাত ধরে, যিনি তৃণমূল নয়, অতীতে একাধিক বার শিরোনামে উঠে এসেছেন বিজেপির সূত্রে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০২৩ ১৩:০২
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তে টলিউড অভিনেতা বনি সেনগুপ্তকে তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। অভিযোগ, এই মামলায় ধৃত কুন্তল ঘোষের ব্যাঙ্কের নথিতে তাঁর নাম মিলেছে।
০২১৫
বৃহস্পতিবার সকাল সকাল এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরেই টলিপাড়ায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে এর আগে অভিনয় জগতের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কাউকে তলব করেনি ইডি। প্রথম তলব এল এমন একজনের হাত ধরে, যিনি শাসকদল নয়, অতীতে একাধিক বার শিরোনামে উঠে এসেছেন বিজেপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে।
০৩১৫
২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে, যখন দলে দলে টলিউডের এক ঝাঁক তারকা তৃণমূল কিংবা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছিলেন, তখন পারিবারিক সম্পর্ককে দূরে ঠেলে রাজনীতিতে চমকে দেন বনি। মা এবং প্রেমিকার উল্টো পথে হাঁটেন। যে সিদ্ধান্তে বিস্মিত হয়েছিলেন অনেকেই।
০৪১৫
বনির মা অভিনেতা তথা পরিচালক সুখেন দাসের কন্যা পিয়া সেনগুপ্ত। তিনি শাসকদলের ঘোষিত সমর্থক। একুশের নির্বাচনের আগে আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন পিয়া। সঙ্গে ছিলেন বনির দীর্ঘ দিনের প্রেমিকা তথা অভিনেত্রী কৌশানী মুখোপাধ্যায়। কৌশানীকে বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে টিকিটও দিয়েছিল তৃণমূল।
০৫১৫
মা এবং প্রেমিকা তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরেই হঠাৎ দেখা যায়, উল্টো পথে হেঁটেছেন বনি। তিনি আনুষ্ঠানিক ভাবে নাম লেখান পদ্ম শিবিরে। জানান, মানুষের জন্য, বিশেষত টালিগঞ্জের ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
০৬১৫
বিজেপিতে যোগ দিলেও বনিকে বিধানসভা ভোটে টিকিট দেয়নি পদ্মশিবির। তারা ক্ষমতা দখল করতেও ব্যর্থ হয়। এর পর টলিউডের রাজনীতিতে আরও এক বার উল্টো স্রোত বয়ে গিয়েছিল। যাঁরা ভোটের আগে রাজনৈতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, তাঁরা দল ছাড়েন। কেউ কেউ যোগ দেন তৃণমূলে। বনিও গত বছর জানুয়ারি মাসে বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করে দেন।
০৭১৫
বিজেপি ত্যাগ করার পর তৃণমূলের একাধিক রাজনৈতিক প্রচারমূলক কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছিল বনিকে। অনেকে বলেন, নির্বাচনের আগেও শাসকদলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা ছিল। বনির কথায়, ‘‘শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা আমায় ভালবাসেন। আশা, খুব শিগগিরিই হয়তো দলে থেকে কাজের সুযোগও মিলবে।’’
০৮১৫
এখন প্রশ্ন, প্রথম থেকেই কি তলে তলে তৃণমূলে ছিলেন বনি? মা এবং প্রেমিকার সূত্রে শাসকদলের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের সুযোগ ছিল। সেই সূত্র ধরেই কি যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষের সঙ্গে বনির যোগাযোগ হয়েছিল? নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে কি তিনিও কোনও ভাবে জড়িয়ে পড়েছিলেন?
০৯১৫
কৌতূহলের বিষয় হল, বনি কিন্তু অভিনেতার আসল নাম নয়। বাংলা চলচ্চিত্রের পরিচালক তথা প্রযোজক অনুপ সেনগুপ্তের পুত্র বনি। বাবা এবং মায়ের নামের সঙ্গে মিলিয়ে তাঁর নাম রাখা হয় অনুপ্রিয়।
১০১৫
টালিগঞ্জে অবশ্য অনুপ্রিয়কে চেনেন না প্রায় কেউই। সুখেন দাসের নাতি টলিপাড়ায় বনি নামেই পরিচিত। ২০১৪ সালে রাজ চক্রবর্তীর পরিচালনায় ‘বরবাদ’ ছবির হাত ধরে অভিনয়ের জগতে প্রথম পা রাখেন বনি। সেই ছবিতে তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন অভিনেত্রী ঋত্বিকা সেন।
১১১৫
বনির দ্বিতীয় ছবি ‘পারব না আমি ছাড়তে তোকে’। এই ছবিতে তাঁর নায়িকা হিসাবে দেখা যায় কৌশানীকে। রাজের পরিচালিত এই ছবির শুটিং সেটেই বনি, কৌশানীর প্রেমের কুঁড়ি ফুটেছিল বলে গুঞ্জন টলিপাড়ায়। ক্রমে সে কুঁড়ি ফুল হয়ে ফুটেছে।
১২১৫
প্রথম দুই ছবিতে বক্স অফিসে সাফল্য পেয়েছিলেন বনি। রাজনীতির আঙিনায় সে সময় তাঁকে বড় একটা দেখা যেত না। মন, প্রাণ ঢেলে অভিনয় করতেন। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে প্রথম রাজনীতির খবরে শিরোনামে আসেন বিনোদনের বনি।
১৩১৫
রাজনীতি বাদ দিলে অভিনয় জগতে বনির কেরিয়ারের গ্রাফ মন্দ নয়। ‘বরবাদ’, ‘পারব না আমি ছাড়তে তোকে’-র পর একে একে ‘জিও পাগলা’, ‘রাজা রানি রাজি’, ‘লাভস্টোরি’, ‘জানবাজ’, ‘বিয়ে ডট কম’, ‘আজব প্রেমের গল্প’ প্রভৃতি বাণিজ্যিক বাংলা ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
১৪১৫
শুক্রবারই বনির নতুন ছবি মুক্তি পাচ্ছে। ‘আর্চির গ্যালারি’ ছবিতে বনির সঙ্গে অভিনয় করেছেন আয়ুষী তালুকদার। শহরের অলিগলি এই ছবির পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছে। তার মুখেই নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে নাম জড়াল অভিনেতার।
১৫১৫
ইডির তলব প্রসঙ্গে বনি জানিয়েছেন, তিনি অবশ্যই হাজিরা দিতে যাবেন। আনন্দবাজার অনলাইনের প্রশ্নে বলেন, ‘‘হ্যাঁ হ্যাঁ! না যাওয়ার কী আছে?’’ বৃহস্পতিবারই ইডি দফতরে হাজিরা দিয়েছেন বনি।