Aftab Amin Poonawalla take inspiration from American tv series Dexter while disposing of Shraddha walker body parts dgtl
Shraddha walker Murder case
দিল্লিতে প্রেমিকার দেহ টুকরো করার নেপথ্যে কী ভূমিকা ছিল টিভি সিরিজ ‘ডেক্সটার’-এর
‘ডেক্সটার’ আমেরিকার একটি ক্রাইম থ্রিলার টেলিভিশন সিরিজ়। যার কাহিনি আবর্তিত হয়েছে মূল চরিত্র ডেক্সটার, তাঁর জীবন, পরিবার এবং তাঁর করা নৃশংস সব খুনের ঘটনা নিয়ে।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২২ ১৫:৫১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২২
দিল্লির মেহরৌলিতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধা ওয়াকারকে শ্বাসরোধ করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে ছড়িয়ে দেন প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালা। আর সেই খুনের ঘটনার নৃশংসতায় স্তম্ভিত সারা দেশ।
০২২২
পুলিশ তদন্তে জানিয়েছে, প্রেমিকাকে খুন করার পর দেহ লোপাট করার ছক কষার আগে আমেরিকার টেলিভিশন সিরিজ় ‘ডেক্সটার’ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছিলেন আফতাব। আর সেই কারণেই আফতাব হয়ে উঠেছেন ‘দিল্লির ডেক্সটার’।
০৩২২
কী ছিল সেই আমেরিকান টিভি সিরিজ়ে, যা দেখে শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে দিল্লির বিভিন্ন জায়গা জুড়ে ছুড়ে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন আফতাব?
ছবি: সংগৃহীত।
০৪২২
‘ডেক্সটার’ আমেরিকার একটি ক্রাইম থ্রিলার টেলিভিশন সিরিজ়। যার কাহিনি আবর্তিত হয়েছে মূল চরিত্র ডেক্সটার, তাঁর জীবন, পরিবার এবং তাঁর করা নৃশংস সব খুনের ঘটনা নিয়ে।
০৫২২
২০০৬ থেকে আমেরিকার টেলিভিশন চ্যানেল শোটাইম-এ দেখানো শুরু হয় এই টেলিভিশন সিরিজ। ৮টি সিজ়ন নিয়ে হওয়া এই টেলিভিশন সিরিজের এপিসোড সংখ্যা ৯৬। কিন্তু প্রথম সিজ়নের পর থেকেই এই সিরিজ় জায়গা করে নিয়েছিল দর্শক-মনে।
০৬২২
সিরিজ় অনুযায়ী, ডেক্সটার (মাইকেল সি. হল) ছিলেন এক জন সিরিয়াল কিলার। মাত্র তিন বছর বয়সে নিজের মাকে চোখের সামনে খুন হতে দেখেছিলেন তিনি। বাবার খোঁজ আগে থেকেই ছিল না। এর পর তাঁকে দত্তক নেন মিয়ামি পুলিশ অফিসার হ্যারি মরগান (জেমস রেমার)।
০৭২২
ছোটবেলায় মাকে খুন হতে দেখে ডেক্সটার মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। বড় হতেই খুন করার নেশা চেপে ধরে তাঁকে। তবে খুন করতেন কেবল সমাজের দুর্নীতিগ্রস্ত এবং অপরাধীদের। যদিও দিল্লির আফতাব সে রকম কোনও কারণে খুন করেননি।
০৮২২
সিরিজ়ের ডেক্সটার ছিলেন শিক্ষিত। পুলিশের ফরেন্সিক বিভাগেই চাকরি পান তিনি। আর সেই কারণে তিনি নিজের অপরাধ ঢাকা ডেক্সটারের জন্য আরও সহজ হয়ে গিয়েছিল। খুন করার পর মৃতদেহ লোপাট করার নানান ফন্দিও জানতেন তিনি।
০৯২২
হাতে গ্লাভস পরে প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো ‘কিল রুম’-এ মৃতদেহগুলিকে টুকরো টুকরো করে অতলান্তিক মহাসাগরে ভাসিয়ে দিতেন ডেক্সটার। মাঝেমধ্যে ফ্রিজেও রেখে দিতেন সেই দেহের টুকরোগুলি। মৃতদেহগুলি টুকরো টুকরো করে ভাসিয়ে দেওয়ার কারণে সেগুলি খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনাও থাকত কম।
১০২২
গল্প যত নতুন মোড় নেয়, তত খুলতে থাকে ডেক্সটারের জীবনের জট। জানতে পেরেছিলেন যে তাঁর জন্মদাতা বাবাও ছিলেন সিরিয়াল কিলার। সিরিয়াল কিলার ছোট বোনও।
১১২২
সিরিজ়ের পরের দিকে সেই বোনের সঙ্গে যৌনসঙ্গমেও লিপ্ত হয়েছিলেন ডেক্সটার।
১২২২
আমেরিকার এই ক্রাইম থ্রিলার সিরিজ আদপে জেফ লিন্ডসের লেখা ‘ডার্কলি ড্রিমিং ডেক্সটার’ নামে এক উপন্যাসের উপর আধারিত। আর সেই কাহিনি থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই নৃশংসতার পথে হেঁটেছেন ‘দিল্লির ডেক্সটার’ আফতাব।
১৩২২
ছ’মাস আগে ১৮ মে প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন আফতাব। এর পর ডেক্সটার সিরিজ় দেখা শেষ করে একটি ফ্রিজ় কিনেছিলেন অভিযুক্ত। দীর্ঘ দিন সেই ফ্রিজ়েই রাখা ছিল শ্রদ্ধার দেহাংশ।
১৪২২
পরে সেই মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে কেটে ফেলেন আফতাব। ১৮ দিন ধরে সেই দেহের টুকরোগুলি ছড়ানো হয়েছিল দিল্লির ছতরপুর ছিটমহল জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায়।
১৫২২
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শেষে শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করেন মেহরৌলি থানার পুলিশ।
১৬২২
দক্ষিণ দিল্লির অতিরিক্ত ডিসিপি-১ অঙ্কিত চৌহান জানিয়েছেন, মুম্বইতে একটি ‘ডেটিং অ্যাপের’ মাধ্যমে পরিচয় হয়েছিল শ্রদ্ধা এবং আফতাবের। তাঁরা তিন বছর ধরে একত্রবাস করছিলেন এবং দিল্লিতে চলে গিয়েছিলেন।
১৭২২
শ্রদ্ধা-আফতাবের সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি ছিল শ্রদ্ধার বাবা বিকাশ ওয়াকারের। না-ও জানিয়ে দিয়েছিলেন এই প্রেম তাঁরা মেনে নিতে পারবেন না। বাবা-মা প্রেমকে মান্যতা না দেওয়ায় ঘর ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। দীর্ঘ দিন পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি তিনি।
১৮২২
দিল্লিতে চলে যাওয়ার পর পরই, আফতাবকে বিয়ের কথা বলতে থাকেন শ্রদ্ধা। এই নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত এবং তা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেত।
১৯২২
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, তাঁরাও অনেক বার শ্রদ্ধা এবং আফতাবের বাড়ি থেকে চিৎকার-চেঁচামেচি এবং মারধরের আওয়াজ পেতেন।
২০২২
এর পর বিয়ে নিয়ে ঝামেলা চলাকালীন ১৮ মে আফতাব মেজাজ হারিয়ে শ্রদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে খুন করেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
২১২২
পুলিশ তদন্ত করে এ-ও জানতে পেরেছে, শ্রদ্ধার দেহ ফ্রিজে থাকার সময়েও একাধিক মহিলাকে নিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে আনতেন আফতাব। তাঁদের সঙ্গে লিপ্ত হতেন উদ্দাম যৌনতাতেও।
২২২২
সময় যতই পেরোচ্ছে, ততই আরও জট খুলছে শ্রদ্ধা-খুনের ঘটনার। ঘণ্টায় ঘণ্টায় পুলিশের হাতে উঠে আসছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। সূত্রের খবর, পুলিশ মনে করছে, শুধু শ্রদ্ধাই নন, একই ভাবে আরও অনেক মহিলাকে খুন করেছেন আফতাব। তা নিয়েই জোরালো তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশে তদন্তকারী দল।