Actor Prithivi who was considered as one film wonder, says he was tied by a contract that changed his life dgtl
Actor Prithvi
মহিলা ভক্তরা গাড়ির সামনে শুয়ে পড়তেন, সেই বলি অভিনেতা হারিয়ে যান একটি চুক্তির ভুলে!
শাহরুখের আত্মপ্রকাশের আগেই বলিউডে এসে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন এই অভিনেতা। দিব্যা ভারতীর বিপরীতে নবাগত নায়ককে দেখে আমির খান, সলমন খানের মহিলা অনুরাগীর সংখ্যায় নাকি ভাঙন ধরেছিল।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:০৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
তিনি শাহরুখ ‘পাঠান’ খানের সমসাময়িক অভিনেতা। বয়সে শাহরুখের থেকেও বছর তিনেকের ছোট। ১৯৯২ সালে মুক্তি পেয়েছিল তাঁর প্রথম ছবি ‘দিল কা কেয়া কসুর’। ওই একই বছরে মুক্তি পায় শাহরুখের প্রথম ছবি ‘দিওয়ানা’। নায়িকাও এক— দিব্যা ভারতী। ৩১ বছর পর শাহরুখের ছবি ‘পাঠান’ সুপারহিট। আর তাঁকে চেনা তো দূর অস্ত্ নামই শোনেননি নতুন প্রজন্মের সিনেমাপ্রেমীরা।
০২১৯
তিনি পৃথ্বী। শাহরুখের আত্মপ্রকাশের আগেই বলিউডে এসে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন এই অভিনেতা। ‘দিওয়ানা’ মুক্তি পেয়েছিল জুনে। পৃথ্বীর প্রথম ছবি মুক্তি পায় জানুয়ারিতে। দিব্যা ভারতীর বিপরীতে নবাগত নায়ককে দেখে আমির খান, সলমন খানের মহিলা অনুরাগীর সংখ্যায় নাকি ভাঙন ধরেছিল।
০৩১৯
ছবি বক্স অফিসে দারুণ হিট করেছিল, তা নয়। তবে ছবির প্রত্যেকটা গান এবং তাতে নায়ক-নায়িকার দৃশ্যায়ন সাড়া ফেলেছিল। রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন পৃথ্বী। হাতে আসতে শুরু করেছিল একের পর এক বড় প্রযোজনা সংস্থার ছবিতে কাজ করার প্রস্তাব। কিন্তু তার পরও বলিউডে নিজের কেরিয়ার বেশি দূর এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেননি অভিনেতা।
০৪১৯
বেশ কয়েক বছর ছোটখাটো পার্শ্বচরিত্র করার পর এক সময়ে বলিউড থেকে পুরোপুরি বিদায় নেন অভিনেতা। সম্প্রতি তিনি তাঁর বলিউড-অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখ খুলেছেন। এক সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিনেতা জানিয়েছেন, একটি চুক্তিপত্রই তাঁর কেরিয়ারের সর্বনাশের কারণ।
০৫১৯
ওই সাক্ষাৎকারে পৃথ্বী দাবি করেছেন ওই চুক্তিপত্রের জন্য বহু ছবি হাতছাড়া হয়েছে তাঁর। এমনকি, যে ‘দিওয়ানা’ ছবিতে বলিউডে শাহরুখের হাতেখড়ি, সেই ছবিটি করার প্রস্তাবও প্রথমে এসেছিল তাঁরই কাছে।
০৬১৯
১৯৯৩ সালে শাহরুখ অভিনীত আরও একটি জনপ্রিয় ছবির প্রস্তাবও প্রথম তাঁর কাছেই এসেছিল বলে দাবি করেছেন পৃথ্বী। ছবির নাম ‘ডর’। যশ চোপড়া পরিচালিত এবং প্রযোজিত ওই ছবিতে শাহরুখ ছাড়াও অভিনয় করেছিলেন সানি দেওল এবং জুহি চাওলা। ছবিটি সেই সময়ে বক্স অফিসে ‘ব্লক বাস্টার হিট’ ছিল। পৃথ্বীর দাবি, এই ছবিও তাঁর করা হয়নি ওই চুক্তিপত্রের জন্যই।
০৭১৯
বদলে ওই সময়ে পৃথ্বী অভিনয় করেন ‘দিলওয়ালে কভি না হারে’, ‘মেরি আন’, ‘প্ল্যাটফর্ম’, ‘ইক্কে পে ইক্কা’, ‘পাণ্ডব’, ‘দরার’, ‘কমসিন’-এর মতো ছবিতে। সব ছবিতেই পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। কোথাও মূল অভিনেতা রাহুল রায় কোথাও অজয় দেবগন কোথাও আবার অক্ষয় কুমার।
০৮১৯
সেই পার্শ্বচরিত্রের প্রস্তাবও ক্রমে কমতে শুরু করে। ১৯৯৮ সালে আমির এবং রানি মুখোপাধ্যায়ের ছবি ‘গুলামে’ অভিনয় করেছিলেন পৃথ্বী। ২০০২ সালে অক্ষয় খন্না, ববি দেওল এবং আমিশা পটেল অভিনীত ‘হামরাজ’ ছবিতেও দেখা গিয়েছিল তাঁকে। তবে এতটাই ছোট ছিল তাঁর চরিত্র যে অনেকের নজরেই পড়েননি।
০৯১৯
২০০৩ সালে একটি ছবিতে মূল চরিত্রের প্রস্তাব পান পৃথ্বী। ছবির নাম ‘খঞ্জর’। কিন্তু সেই ছবি ফ্লপ করে। বলিউডে পৃথ্বীর শেষ ছবি মুক্তি পায় ২০০৮ সালে। অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর ছেলে মিমো চক্রবর্তীর প্রথম ছবি ‘জিমি’তে মিমোর বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পৃথ্বী। তবে সেই শেষ। এর পর বলিউড থেকে পুরোপুরি বিদায় নেন পৃথ্বী।
১০১৯
পরিবারের কেউ অভিনয় জগতে ছিল না। ১৯৬৮ সালে দিল্লিতে জন্ম পৃথ্বীর। তাঁর আসল নাম ছিল আজান আলি।
১১১৯
এক প্রযোজক মুকেশ দুগ্গল ছিলেন, বাবার বন্ধু। তিনিই সুপুরুষ পৃথ্বীকে তাঁর ছবিতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন।
১২১৯
প্রথম ছবিতেই ‘চকোলেট হিরো’ হিসাবে পরিচিতি পান পৃথ্বী। যদিও তত দিনে বলিউড আমির খানকে পেয়েছে। পৃথ্বী সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘সেই সময়টাকে আমি নিজেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। অনুরাগীরা আমাকে দেখে পাগলামি করতেন। মেয়েরা আমার গাড়ির সামনে শুয়ে পড়তেন। গাড়ি থেকে নেমে অটোগ্রাফ না দিলে এবং ছবি না তোলালে পথ ছাড়তেন না তাঁরা।’’
১৩১৯
সেখান থেকে আজ পৃথ্বী হারিয়ে গেলেন শুধু একটি চুক্তিপত্রের জন্য? কী এমন ছিল সেই চুক্তিপত্রে?
১৪১৯
পৃথ্বী জানিয়েছেন, চুক্তিপত্রের জন্য তিনি মুম্বইয়ে থাকতেই পারেননি সে ভাবে। তাঁকে বেঙ্গালুরুতে থাকতে হত। এই একটি কারণেই দিব্যা ভারতীর সঙ্গে খুব ভাল বন্ধুত্ব থাকা সত্ত্বেও নায়িকার মৃত্যুর খবর শুনে দেখা করতে যেতে পারেননি অভিনেতা। ১৯৯৩ সালের ৫ এপ্রিল মারা যান দিব্যা। পৃথ্বী সেই সময়ে বেঙ্গালুরুতে ব্যস্ত।
১৫১৯
একটি ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই চুক্তিপত্র প্রসঙ্গে পৃথ্বী জানিয়েছেন, ‘‘আমি ওই চুক্তির ফাঁদে পা দিয়ে নিজের ফিল্ম কেরিয়ার পুরোপুরি নষ্ট করে ফেলেছিলাম। আমি এমনই একটা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিলাম, যা থেকে বেরিয়ে আসা শুধু দুরূহ নয়, অসম্ভব।’’
১৬১৯
কারা ওই চুক্তিপত্রে সই করিয়েছিল তাঁকে, তা ওই সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট করেননি পৃথ্বী। তবে চুক্তি প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘‘আমাকে আমার কেরিয়ারের সবচেয়ে ভাল সময়ে বেঁধে রেখেছিল ওরা। আমি বহু চেষ্টা করেও সেই জটিল চুক্তি এড়াতে পারিনি।’’
১৭১৯
কোনও প্রযোজনা সংস্থা কি তাঁকে বেঁধেছিল ওই চুক্তিতে? তা-ও বলেননি পৃথ্বী। শুধু বলেছেন, ‘‘বহু হিট ফিল্ম আমার হাতে আসেনি ওই চুক্তিপত্রের জন্যই। কিন্তু তার পরও ওরা আমার অনুরাগীদের মন থেকে মুছে ফেলতে পারেনি। কারণ কোনও চুক্তির সেই ভালবাসা কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা নেই।’’
১৮১৯
তবে বলিউড থেকে ১৫ বছর আগে বিদায় নিলেও আবার ফিল্ম জগতে ফিরতে চান পৃথ্বী। তাঁর বক্তব্য, অভিনেতা হিসাবে না হলেও এ বার পরিচালক হয়ে ফিরতে চান তিনি। কারণ তাঁর অনেক গল্প বলার আছে।
১৯১৯
সেই গল্প কি বলিউডেরই কোনও অজানা গল্প? তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার গল্প? একদা শাহরুখ আমিরদের জনপ্রিয়তায় টক্কর দেওয়া পৃথ্বী অবশ্য তা খোলসা করেননি।