A steel sphere inside Taiwan’s tallest building saves it during Earthquake dgtl
Taiwan Earthquake
ভূমিকম্পও টলাতে পারে না! প্রবল কম্পনে তাইওয়ানের উচ্চতম বহুতল রক্ষা করল পেন্ডুলাম
ইউনাইটেড স্টেটস জিয়োলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস)-র তরফে জানানো হয়েছিল, কম্পনের উৎসস্থল তাইওয়ানের দক্ষিণে হুয়ালিয়েন সিটি থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ভূগর্ভ থেকে ৩৪.৮ কিলোমিটার গভীরে।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০৮
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
বুধবার সকালে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল তাইওয়ানের একাংশ। রিখটার স্কেলে এই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৪। স্থানীয় সময় অনুযায়ী বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ কেঁপে ওঠে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেই এবং তার পার্শ্ববর্তী এলাকা।
০২১৫
ইউনাইটেড স্টেটস জিয়োলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস)-র তরফে জানানো হয়েছিল, কম্পনের উৎসস্থল তাইওয়ানের দক্ষিণে হুয়ালিয়েন সিটি থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে ভূগর্ভ থেকে ৩৪.৮ কিলোমিটার গভীরে।
০৩১৫
শক্তিশালী ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছে তাইওয়ান। কম্পনের কারণে একাধিক বহুতল ভেঙে গিয়েছে। অনেক বাড়ি হেলে পড়েছে। সেই ভূকম্পনে তাইওয়ানে এখনও পর্যন্ত ন’জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম প্রায় হাজার জনের কাছাকাছি। নিখোঁজ রয়েছেন পঞ্চাশ জনের বেশি, যাঁদের মধ্যে দু’জন ভারতীয়।
০৪১৫
ভূমিকম্পে তাইওয়ানের রাজধানী তাইপেইয়ের বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ঠায় দাঁড়িয়ে তাইপেই তথা তাইওয়ানের উচ্চতম ভবন ‘তাইপেই ১০১’। বিন্দুমাত্র ক্ষতি হয়নি সেই গগনচুম্বীর। ৭.৪ মাত্রার ভূমিকম্পকে সহজেই পাশ কাটাতে পেরেছে সেটি।
০৫১৫
‘সিএনএন’-এর মতে, ৫০৮ মিটারের ‘তাইপেই ১০১’-এর বিপুল ‘সহ্যশক্তি’র নেপথ্যে রয়েছে এর উদ্ভাবনী নকশা। এবং রয়েছে একটি বিশাল পেন্ডুলাম, যা আসলে একটি ইস্পাত গোলক। বহুতলের কেন্দ্রে থাকা ওই বড় হলুদ পেন্ডুলামটি ভূমিকম্পজনিত যে কোনও ধরনের কম্পন প্রশমিত করতে সক্ষম।
০৬১৫
‘তাইপেই ১০১’-এর কেন্দ্রে থাকা ওই পেন্ডুলামটির নাম ‘ড্যাম্পার বেবি’। ‘ড্যাম্পার’ কথার অর্থ এমন এক বস্তু বা প্রাণী, যার বাধা দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে।
০৭১৫
‘তাইপেই ১০১’-এ ওই ইস্পাত গোলকটিকে ভূমি থেকে হাজার ফুট উচ্চতায় ঝোলানো হয়েছে। ৮৭ তলা থেকে ৯২ তলার মধ্যে ঝুলে থাকে সেটি। গোলকটির ওজন প্রায় ৬ লক্ষ ৬০ হাজার কেজি।
০৮১৫
গোলকটি ৪১টি ইস্পাতের স্তর দিয়ে তৈরি। ব্যাস প্রায় ১৮ ফুট।
০৯১৫
ভূমিকম্প বা ঘূর্ণিঝড়ের সময় বহুতলটি যাতে না নড়ে তা নিশ্চিত করতে গোলকটি নিজে থেকে দুলতে থাকে। ফলে ভবনটির নড়াচড়া প্রায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। তবে গোলকটি ৫৯ সেমির মাপকাঠির মধ্যেই দুলতে পারে।
১০১৫
‘তাইপেই ১০১’ এক সময় বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ভবন ছিল। ভূমিকম্পপ্রবণ তাইওয়ানে সমস্ত ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে সেটির নকশা করা হয়েছিল। তৈরিও হয়েছিল অত্যাধুনিক প্রযুক্তি মেনে।
১১১৫
‘তাইপেই ১০১’-এ থাকা ওই ইস্পাত গোলকের প্রযুক্তিগত নাম ‘টিউনড মাস ড্যাম্পার (টিএমডি)’। বিভিন্ন ভবনের প্রয়োজন বুঝে সেটি তৈরি করা হয়।
১২১৫
টিএমডি-র প্রধান উদ্দেশ্য হল প্রবল ঝড় বা ভূমিকম্পে বহুতলকে ক্ষতির মুখ থেকে রক্ষা করা। একটি বহুতলে ড্যাম্পার এমন ভাবে রাখা হয়, যাতে তা কারও নজরে না পড়ে। তবে ‘তাইপেই ১০১’-এর ড্যাম্পারটি এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। ড্যাম্পারটি এমন ভাবে ঝোলানো হয়েছে, যাতে সবাই তা দেখতে পায়। সেই গোলক ‘তাইপেই ১০১’-এর অন্যতম আকর্ষণও বটে।
১৩১৫
‘তাইপেই ১০১’-এর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ভূমিকম্প বা টাইফুনের সময় ইস্পাতের গোলকটি তীব্র কম্পনের শক্তিকে প্রশমিত করে।
১৪১৫
ইঞ্জিনিয়ারদের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় এটি বিল্ডিংয়ের গতিবিধি ৪০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে। যার ফলে বহুতলে সে ভাবে কম্পন অনুভূত হয় না। আর সেই কারণেই বুধবারের শক্তিশালী ভূমিকম্পেও ‘তাইপেই ১০১’-এর কোনও ক্ষতি হয়নি।
১৫১৫
উল্লেখ্য, প্রায় ২৫ বছর পর তাইওয়ানে এই ধরনের প্রবল ভূমিকম্প হয়েছে। এর আগে ১৯৯৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তাইওয়ানে ভূমিকম্পের ফলে মারা গিয়েছিলেন ২,৪০০ জন। সেই কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.৬।