বিজ্ঞানীদের একাংশের বক্তব্য অবশ্য অন্য রকম। তাঁদের দাবি, পরমাণু বিস্ফোরণের ফলেই নাকি ধ্বংস হয়েছে দুই প্রাচীন শহর। এই ঘটনার নাকি প্রমাণও পেয়েছেন তাঁরা।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২৪ ০৮:১৬
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৬
ইতিহাস বলে, অতিরিক্ত বন্যা অথবা খরার মতো কোনও প্রাকৃতিক দুর্ষোগের কারণে সিন্ধু সভ্যতার দুই প্রাচীন শহর হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদাড়ো ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিজ্ঞানীদের একাংশের ব্যাখ্যা অন্য রকম। তাঁদের দাবি, পরমাণু বিস্ফোরণের ফলেই নাকি ধ্বংস হয়েছে এই দুই শহর। এই ঘটনার নাকি প্রমাণও পেয়েছেন তাঁরা।
০২১৬
১৯৪৫ সালে হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পরমাণু বিস্ফোরণের ভয়াবহতা বিশ্ববাসীকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। বিস্ফোরণ-পরবর্তী তেজস্ক্রিয়তার ফলে কম ক্ষতি হয়নি। তবে বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, পারমাণবিক বিস্ফোরণ আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগেও ঘটেছে।
০৩১৬
আমেরিকার এক সংস্থার অধিকর্তা, লেখক এবং বিজ্ঞানী বিলি কারসন দাবি করেন, আজ থেকে ৩৭০০ বছর আগে পারমাণবিক বিস্ফোরণের কারণেই ধ্বংস হয়ে যায় হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদাড়ো।
০৪১৬
রাজস্থানের জোধপুর থেকে ১৬ কিলোমিটার পশ্চিমে, সাড়ে সাত বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে তেজস্ক্রিয় পদার্থের মোটা আস্তরণ পড়ে রয়েছে বলে দাবি করেন বিজ্ঞানীদের একাংশ। বর্তমানে সেই এলাকা পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশের মধ্যে পড়ে।
০৫১৬
তেজস্ক্রিয়তার চিহ্ন পেয়ে বিজ্ঞানী এবং প্রত্নতত্ত্ববিদেরা মিলে নির্দিষ্ট এলাকায় গবেষণা শুরু করেন। খননকার্যের পর সেখানে একটি প্রাচীন আবাসন আবিষ্কার করেন তাঁরা।
০৬১৬
বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, ওই এলাকায় যাঁরা বসবাস করতেন, তাঁদের অধিকাংশই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছিলেন। এমনকি, সেখানে সুস্থ সন্তানের জন্মের হারও অনেকটা কম ছিল বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।
০৭১৬
ওই এলাকায় তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ এতটাই বেশি যে, সুরক্ষার খাতিরে নাকি সেই জায়গাটি নিরাপত্তা বেষ্টনীতে মুড়ে রাখা হয়েছে। বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, আজ থেকে হাজার হাজার বছর আগে ওই এলাকায় পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটেছিল।
০৮১৬
বিস্ফোরণের ফলে এলাকার বহু অধিবাসী মারা গিয়েছিলেন। বহু আবাসন ভেঙে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। ওই এলাকার কাছেই ছিল হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদাড়ো শহর।
০৯১৬
গবেষকদের একাংশের মতে, হাজার বছর আগে যে পরমাণু বিস্ফোরণ হয়েছিল, তার অভিঘাত ১৯৪৫ সালে জাপানে ফেলা আমেরিকার বোমার সমান। ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, ১৯৪৫ সালে নয়, পারমাণবিক বোমা আবিষ্কার হয়েছিল বহু বছর আগেই।
১০১৬
বিজ্ঞানীদের দাবি, মহাভারতেও নাকি এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বিস্ফোরণে চারদিক কাঁপানো একটি শব্দ হয়। সঙ্গে ভয়াবহ আগুন এবং ধোঁয়া। মৃতদেহগুলি এমন ভাবে পুড়ে গিয়েছিল যে, সেগুলি চেনাই নাকি মুশকিল হচ্ছিল। খাদ্যশস্য নষ্ট হয়ে যায়। আগুনের হাত থেকে নিজেদের বাঁচাতে নাকি নদীতে ঝাঁপ দেন মানুষ।
১১১৬
বিজ্ঞানীদের একাংশের দাবি, হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদাড়ো শহরেও পারমাণবিক যুদ্ধ হয়েছিল। পরমাণু বিস্ফোরণের ফলে সিন্ধু সভ্যতার একাংশ ধ্বংস হয়ে যায়।
১২১৬
এমনকি, খননকার্যের সময় প্রত্নতত্ত্ববিদেরা লক্ষ করেন যে, রাস্তায় কঙ্কালের সারি। দেখে মনে হয় মৃত্যুর সময় যেন সবাই প্রিয়জনের হাত ধরে ছিলেন।
১৩১৬
কঙ্কাল পরীক্ষা করে দেখা যায়, কোনও দুর্ঘটনার কারণে তাঁদের মৃত্যু হয়নি। বহু বছর মাটির তলায় চাপা থাকলেও কঙ্কালের বিশেষ ক্ষয় হয়নি।
১৪১৬
রাশিয়ার কয়েক জন বিজ্ঞানী কঙ্কালগুলি নিয়ে গবেষণা করে জানতে পারেন যে, এগুলি হাজার হাজার বছরের পুরনো। এমনকি কঙ্কালের মধ্যে তেজস্ক্রিয় পদার্থের উপস্থিতিও টের পান বিজ্ঞানীরা।
১৫১৬
বিজ্ঞানীরা কঙ্কালের তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ পর্যবেক্ষণ করে জানান যে, তার পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় ৫০ গুণ বেশি। এই পরিমাণ তেজস্ক্রিয়তা কী ভাবে সম্ভব হয়েছিল? এর সঠিক ব্যাখ্যা মেলেনি।
১৬১৬
তবে হরপ্পা, মহেঞ্জোদাড়োর ধ্বংসের নেপথ্যে যে পারমাণবিক বিস্ফোরণের ঘটনা রয়েছে, তা উড়িয়ে দিয়েছেন বিজ্ঞানীদের অধিকাংশ। গুজব রটিয়ে মানুষের মনে ভয় জাগানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তাঁরা।