A giant gate to hell opened in russia’s ski resort dgtl
Russia
‘নরকের দরজা’ খুলল! বরফে ঢাকা বিলাসবহুল রিসর্টের সঙ্গে জুড়ে গেল খনির রাস্তা
এলাকাটি জনবহুল নয়। মোট ৪টি বসতবাড়ি। তবে বাকি বরফে ঢাকা ধূ-ধূ প্রান্তরে তৈরি করা হয়েছে স্কি রিসর্ট। সাইবেরিয়ার ওই রিসর্টের নাম শেরেগেশ। পর্যটক মহলে বেশ জনপ্রিয়।
সংবাদ সংস্থা
মস্কোশেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ১০:৫০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
রাশিয়ার সাইবেরিয়ার ওই রিসর্টের নাম শেরগেশ। পর্যটকদের বিশেষ পছন্দ তালিকায় রয়েছে এই রিসর্ট। তার দু’টি মূল কারণ। এক— শেরগেশের মনভোলানো প্রাকৃতিক দৃশ্য। দুই— এর বরফে মোড়া ধূ-ধূ সমতল উপত্যকা, যা বরফে স্কি করার জন্য উপযুক্ত।
০৩১৯
এমনিতে সাইবেরিয়ার এই এলাকাটি বিশেষ জনবহুল নয়। শেরগেশ লাগোয়া এই এলাকাটির নাম কামেরোভো। হাতেগোনা ৪-৫টি পরিবারের বাস এখানে। তাঁদেরই থাকার বাড়ি ঘর ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল শেরগেশের আশপাশে।
০৪১৯
দিন কয়েক আগে তেমনই একটি বাড়িকে গিলে খেয়েছে এক বিশালাকৃতি ‘সিঙ্কহোল’।
০৫১৯
দিনের আলোতেই ঘটে ঘটনাটি। ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে স্কি রিসর্টের গায়েই তৈরি হয়েছে প্রায় ১০০ ফুট চওড়া একটি গহ্বর।
০৬১৯
একটি দশ তলা বাড়িকে আড়াআড়ি মাটিতে শুইয়ে দিলে যতটা জায়গা নেবে, এই গহ্বরের ব্যাস ততটাই।
০৭১৯
বিকট আওয়াজ করে মাটি ফেটে সেই গহ্বর তৈরি হওয়ার সময়েই একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে তার ভিতরে। দেখা যায় গহ্বরের ভিতর থেকে গলগলিয়ে বেরিয়ে আসছে ধোঁয়া।
০৮১৯
ওই এলাকায় মাটির নীচেই ছিল একটি আকরিক লোহার খনি। গহ্বরে উঁকি দিয়ে দেখা যায় বিলাসবহুল স্কি রিসর্টের গার্ড ওয়ালের গা বেয়েই সোজা নেমে যাওয়া যাচ্ছে খনির ভিতরে।
০৯১৯
যদিও ঘটনাটি যখন ঘটে তখন খনিতে কাজ চলছিল না। তাই বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে রাস্তা ধসে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় পরিবহণের অধিকাংশ পরিষেবা।
১০১৯
স্থানীয় সংবাদ সংস্থা এই বিপর্যয়কে ‘নরকের দরজা খোলা’ বলে বর্ণনা করেছে। তবে বিষয়টি যে আদতে একটি সিঙ্কহোল সে বিষয়ে মোটামুটি একমত স্থানীয় ভূতত্ত্ববিদেরা। যদিও কেন হঠাৎ এমন সিঙ্কহোল তৈরি হল তার কারণ খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন তাঁরা।
১১১৯
‘সিঙ্কহোল’ হল মাটির নীচের গভীর গহ্বর, যা মূলত ভূপৃষ্ঠের নীচের ফাঁপা এলাকায় উপরের স্তরের মাটি ধসে তৈরি হয়।
১২১৯
পৃথিবী জুড়ে এমন বহু সিঙ্কহোল রয়েছে, যা দর্শকের মনে বিস্ময় জাগাতে পারে।
১৩১৯
চিনে এমন একটি সিঙ্কহোলের ভিতরে রয়েছে একটি বিশাল অরণ্য।
১৪১৯
শুনে অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ডের গল্পের কথা মনে পড়ে যেতে পারে। সেখানেও গর্তের মধ্যে দিয়ে এক অন্য দুনিয়ায় পৌঁছে যেত ছোট্ট অ্যালিস। সাইবেরিয়ার সিঙ্কহোলে অবশ্য তেমন সুযোগ নেই।
১৫১৯
খনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বেশ কিছু দিন আগে থেকেই তাঁরা একটি বিপর্যয়ের আন্দাজ করছিলেন। খনির উপরের জমির অংশটি স্থিতিশীল নয় বলে মনে হচ্ছিল তাঁদের। তবে বিপর্যয় যে এ ভাবে আসতে চলেছে তা বুঝতে পারেননি।
১৬১৯
বিজ্ঞানীরা অবশ্য এই দুর্ঘটনার একটি প্রাথমিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তাঁরা জানিয়েছেন, ভূপৃষ্ঠের নীচের স্তরে তৈরি মিথেন গ্যাস বিস্ফোরণ হয়েই এমনটা ঘটতে পারে। বিশেষ যে সমস্ত এলাকায় তাপমাত্রা অত্যন্ত কম। সেখানেই ওই গ্যাস দীর্ঘ দিন চাপা থেকে এ ভাবে বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।
১৭১৯
এ ক্ষেত্রে ভূপৃষ্ঠের নীচের ফাঁকা অংশটিও তৈরি হয় দীর্ঘ দিন ধরে জমে থাকা মিথেন গ্যাসের চাপেই।
১৮১৯
তবে এই ধরনের সিঙ্কহোল তৈরির ঘটনা সাধারণ নয়। বরং বিরল। ২০১৪ সালের পর থেকে গত ৮ বছরে এমন ২০টি গহ্বরের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটির ব্যাপ্তি শেরগেশের গহ্বরের ৬ গুণেরও বেশি। গিডান পেনিনসুলার গহ্বরটি চওড়ায় অন্তত ৬৫০ ফুট।
১৯১৯
এই ধরনের ভূপৃষ্ঠ বিস্ফোরণ উষ্ণায়নের কারণেও হতে পারে। তবে শেরগেশের ঘটনার তদন্তকারী বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের খোঁজে রাশিয়ার মরিয়া চেষ্টার কারণেও রাশিয়ার মাটি দুর্বল হচ্ছে। যা ক্রমে রাশিয়াকে ‘নরকের দরজা খোলা’র দিকে এগিয়ে দিচ্ছে।