61 Year old grocery shop owner travelled 11 countries in 10 years dgtl
Tour
Kerala: জীবন উপভোগ করতে হবে, ১০ বছরে ১১ দেশ ঘুরেছেন সব্জি বিক্রেতা বৃদ্ধা!
স্থানীয়রা এই দেখছেন ভোরবেলা সব্জি বিক্রি করছেন বৃদ্ধা। পর দিন দেখলেন দোকান বন্ধ। মলি তত ক্ষণে বেরিয়ে পড়েছেন না দেখা কোনও জায়গার উদ্দেশে।
সংবাদ সংস্থা
কোচি (কেরল)শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২২ ১৩:৪১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২১
বাজারে সব্জি বিক্রি করেন। তবে সেই উপার্জন দিয়ে শুধু খেয়ে-পরে দিন কাটাতে নারাজ ৬১ বছরের বৃদ্ধা। তাঁর জীবনের দর্শনই হল, কাজ করো, টাকা জমাও আর দুনিয়া দেখো।
ছবি: সংগৃহীত।
০২২১
নাম মলি। বয়স ৬১ বছর। থাকেন কেরলের এর্নাকুলামে। পেশা সব্জি বিক্রি। তবে শুধু এই পরিচয়ে বন্দি হতে চান না মলি। জীবন চাইছে আরও বেশি কিছু। কয়েক মাস পর পরই তাই ‘উধাও’ হয়ে যান তিনি। আবার দোকান খোলেন। ক্রেতাদের কাছে অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে উপুড় করেন তাঁর বেড়িয়ে আসার গল্পও।
প্রতীকী চিত্র।
০৩২১
মলির পায়ের তলায় সর্ষে। স্থানীয়রা এই দেখছেন ভোরবেলা সব্জি বিক্রি করছেন বৃদ্ধা। পরের দিন এসে দেখলেন দোকান বন্ধ। মলি তত ক্ষণে বেরিয়ে পড়েছেন না দেখা কোনও জায়গার উদ্দেশে। এখন দোকান বন্ধ থাকলে ক্রেতাদেরও বুঝে নিতে দেরি হয় না যে বেড়াতে গিয়েছেন বৃদ্ধা।
প্রতীকী চিত্র।
০৪২১
সব্জি বিক্রি করে যা উপার্জন করেন তাতে নিজের দিব্যি খেয়ে-পরে চলে যায়। তবে প্রতি দিনের রোজগার থেকে একটা অংশ সরিয়ে রাখেন। লক্ষ্য, নতুন কোনও গন্তব্যের উদ্দেশে বেরিয়ে পড়া।
প্রতীকী চিত্র।
০৫২১
এই ভাবে গত ১০ বছরে দেশের বিভিন্ন জায়গা তো ঘুরেইছেন, ১১টি দেশও চষে ফেলেছেন এই সব্জি বিক্রেতা।
প্রতীকী চিত্র।
০৬২১
প্রায় ২৬ বছর আগে সব্জির দোকানটা করেছিলেন মলির স্বামী। ১৮ বছর আগে তিনি মারা যান। স্বামী ছিলেন শ্রমিক। স্ত্রী চালাতেন সব্জির দোকান।
ছবি: সংগৃহীত।
০৭২১
স্বামীর মৃত্যুর পর এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে অকূলপাথারে পড়েন মলি। একার উপার্জনে কী ভাবে দুই সন্তানকে বড় করবেন! না। হাল ছাড়েননি শান্ত প্রকৃতির এই মহিলা।
প্রতীকী চিত্র।
০৮২১
সব্জির ব্যবসা করে দুই সন্তানকে মানুষ করেছেন। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেও চাকরি করেন। এখন যে যার মতো প্রতিষ্ঠিত।
প্রতীকী চিত্র।
০৯২১
ব্যাস! মলির আর কী চিন্তা। বৃদ্ধা জানান, ছেলে এবং মেয়ে বড় হয়েছেন। তিনি নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করেছেন। এখন কিছুটা সময় দিচ্ছেন নিজের জন্য।
প্রতীকী চিত্র।
১০২১
দোকান খোলা, রান্না-খাওয়া, দোকান বন্ধ— রোজ এই দিনযাপন করতে নারাজ মলি। একাকীত্বকে কোনও ভাবে ঘাড়ে চেপে বসতে দিতে নারাজ তিনি।
প্রতীকী চিত্র।
১১২১
বেড়ানোর পরিকল্পনার শুরু কী ভাবে? বছর ১১ আগে এক প্রতিবেশী উটি বেড়াতে যাচ্ছিলেন। খানিক সৌজন্যের খাতিরেই মলির কাছে জানতে চেয়েছিলেন, ‘‘একা মানুষ কোথাও বেরোও না। যাবে?’’ এক কথায় রাজি হয়ে যান মলি। সেই তাঁর প্রথম বেড়াতে যাওয়া।
প্রতীকী চিত্র।
১২২১
প্রথম বার বেড়িয়ে এসে জাঁকিয়ে বসে ভ্রমণের নেশা। মলি ঠিক করে ফেলেন, এ বার নিয়ম করে বেড়াতে যাবেন।
প্রতীকী চিত্র।
১৩২১
এ ভাবে টুকটাক কাছেপিঠে বেড়াতে যেতেন। এ ভাবেই বিদেশ ভ্রমণের ইচ্ছে মাথাচাড়া দেয় মলির।
প্রতীকী চিত্র।
১৪২১
যেই ভাবা সেই কাজ। কাজ করে টাকা জমাচ্ছিলেন। প্রথম বিদেশ ভ্রমণের সুযোগ করলেন ২০১২ সালে। ২০১০ সালেই পাসপোর্ট বানিয়ে নিয়েছিলেন। প্রথম বারেই ইউরোপ-ভ্রমণ। ১০ দিনের সফর ছিল।
প্রতীকী চিত্র।
১৫২১
কেরলের সব্জি বিক্রেতা মলি একে একে সিঙ্গাপুর, মালেয়েশিয়া, নেদারল্যান্ডস, ইটালি, আমেরিকা ঘুরে বেড়িয়েছেন।
প্রতীকী চিত্র।
১৬২১
বেড়াতে যাওয়ার তালিকা এখনও বাকি। কিন্তু এতগুলো দেশ ঘুরে জমানো টাকা শেষ। মলি জানান, আমেরিকা ভ্রমণের পরই প্রায় সব জমানো টাকা শেষ হয়ে গিয়েছে। সে বার ১০ লক্ষ টাকা খরচ করেছিলেন তিনি!
প্রতীকী চিত্র।
১৭২১
কিন্তু মলি থামতে চান না। এই বয়সে রোজ দোকান খোলেন। ব্যবসা করেন। আর কাজের ফাঁকে চোখ বুলিয়ে নিলেন ভ্রমণ পত্রিকায়। সেখান থেকেই ঠিক করে নেন, পরের বার কোথায় বেড়াতে যাবেন।
প্রতীকী চিত্র।
১৮২১
মলি জানান, বেড়ানোর জন্য তিনি যে কোনও ‘ট্রাভেল এজেন্সি’-র উপর নির্ভর করেন। এতে খরচও কম হয়। আর এই বয়সে একা বেড়ানোটাও এড়ানো যায়।
প্রতীকী চিত্র।
১৯২১
সব্জি বিক্রেতা জানান, ভ্রমণের শখ পূরণ করতে কখনও কারও কাছে ধার করেননি। যতগুলো দেশ ঘুরেছেন, সব নিজের জমানো টাকায়। সব্জির দোকানটাই তাঁর একমাত্র আয়ের উৎস। কখনও কখনও অবশ্য নিজের গয়না বন্ধক দিয়ে বেড়াতে গিয়েছেন। তবে ফিরে এসে জমিয়ে ব্যবসা করে সেই গয়না ছাড়িয়ে এনেছেন।
প্রতীকী চিত্র।
২০২১
মলির কথায়, ‘‘দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছি। তার পর বাবা-মা বিয়ে দিয়ে দিয়েছিলেন। শখ বলতে তো কিছুই ছিল না। জীবনে কোনও খেদ-ও নেই। তবে মনের গোপনে লালন করতেন বেড়ানোর ইচ্ছে। ভেবে রেখেছিলেন শখপূরণ করবেনই করবেন।
প্রতীকী চিত্র।
২১২১
দেশ-বিদেশ ঘুরেছেন। কোন শহর সবচেয়ে ভাল লেগেছে? বৃদ্ধার জবাব, লন্ডন। ১৫ দিনের ব্রিটেন সফরে গিয়েছিলেন। লন্ডন বড় ভাল লেগেছে তাঁর। তা ছাড়া আমস্টারডাম, রোমের ভ্রমণ অভিজ্ঞতাও দুর্দান্ত। কিন্তু এক কথায় যদি কেউ জানতে চান বেড়ানোর সেরা মুহূর্ত কোনটি, মলির জবাব, ‘‘দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে নায়গ্রা জলপ্রপাত দেখা।’’