600 old castle discovered under hotel in France dgtl
600 Old Castle in France
হোটেলে মদ রাখার ঘরের মাটি খুঁড়তেই বেরিয়ে এল ৬০০ বছরের পুরনো দুর্গ!
ফ্রান্সের ব্রিটানি অঞ্চলের ভানে রয়েছে সেই হোটেল। নাম লাগোর্স। সেই হোটেলের উঠোন এবং সেলার খনন করেই মিলেছে দুর্গ।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতাশেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৩:১০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
সন্দেহ ছিল। হোটেলের উঠোন এবং মাটির নীচে মদ রাখার সেলার খনন করছিল প্রত্নতাত্ত্বিকদের একটি দল। তা করতে গিয়ে যে কী রহস্য বেরিয়ে আসবে, তা ভাবতেও পারেনি তারা। খননের পর বেরিয়ে এসেছিল আস্ত এক দুর্গ। তা-ও মধ্যযুগীয়। বয়স প্রায় ৬৪০ বছর। ফ্রান্সের ঘটনা।
০২১৫
ফ্রান্সের ব্রিটানি অঞ্চলের ভানে রয়েছে সেই হোটেল। নাম লাগোর্স। সেই হোটেলের উঠোন এবং সেলার খনন করেই মিলেছে দুর্গ। নাম ‘শাতো দ লার্মি’।
০৩১৫
অষ্টাদশ শতকে তৈরি হয়েছিল হোটেলের ভবনটি। ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ প্রিভেন্টিভ আর্কিয়োলজিক্যাল রিসার্চের প্রত্নতত্ত্ববিদেরা ২০২৩ সালের বসন্তে সেই হোটেলে খননকার্য চালিয়েছিলেন।
০৪১৫
প্রত্নতত্ত্ববিদেরা জানিয়েছিলেন, প্রাচীন সেই দুর্গের উপরেই তৈরি হয়েছিল হোটেল। দুর্গটি তৈরি হয়েছিল ১৩৮১ সালে। সেখানে বাস করতেন ব্রিটানির ডিউক চতুর্থ জন।
০৫১৫
দশম থেকে ষোড়শ শতক পর্যন্ত ব্রিটানিতে রাজ করতেন সামন্তপ্রভুরা। ওই অঞ্চলে জলদস্যুদের দারুণ উৎপাত ছিল। তাদের সেখান থেকে তাড়িয়ে দেন ডিউকেরা।
০৬১৫
১৩৬৫ সালে ব্রিটানির ডিউক হন চতুর্থ জন। গোটা ব্রিটানি জুড়ে পাহাড় কেটে একের পর এক দুর্গ তৈরি করিয়েছিলেন তিনি। তার মধ্যেই ছিল ‘শাতো দ লার্মি’। ১৩৮১ সালে রাজধানী ভানেতে সেই দুর্গ তৈরি করান তিনি।
০৭১৫
কিন্তু ক্রমেই জৌলুস হারায় ভান। চতুর্থ জনের নাতি দ্বিতীয় ফ্রান্সিস নিজের রাজধানী ভান থেকে সরিয়ে নেন। নতুন রাজধানীতে একের পর এক নতুন স্থাপত্য তৈরি করতে শুরু করেন তিনি।
০৮১৫
অষ্টাদশ থেকে বিংশ শতকের মধ্যে ভানের প্রাচীন সেই দুর্গগুলির উপর নতুন স্থাপত্য নির্মাণ শুরু হয়। সে ভাবেই চতুর্থ জনের তৈরি দুর্গের উপর তৈরি হয়েছিল ব্যক্তিগত প্রাসাদ।
০৯১৫
উনিশ শতকে সেই প্রাসাদের দখল নেয় ফরাসি সরকার। কখনও সেখানে তৈরি হয় স্কুল, কখনও তৈরি করা হয় কোষাগার, কখনও আবার সংরক্ষণাগার। পরে সেই প্রাসাদে তৈরি হয় লাগোর্স হোটেল।
১০১৫
শুধু ‘শাতো দ লার্মি’ নয়, ভানে মধ্যযুগে তৈরি বেশ কিছু প্রাচীন স্থাপত্যের উপর বিশ্ববিদ্যালয়, অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি দফতর তৈরি হয়। মুছে যায় সামন্ততান্ত্রিক ইতিহাস।
১১১৫
২০২৩ সালে সেই লাগোর্স হোটেল খনন করতেই প্রকাশ্যে আসে ‘শাতো দ লার্মি’ দুর্গ। দুর্গের দৈর্ঘ্য ১৩৮ ফুট। চওড়া প্রায় ৫৬ ফুট। এক-একটি প্রাচীরের উচ্চতা ১৮ ফুট।
১২১৫
দুর্গের মধ্যে মিলেছে একাধিক সিঁড়ি, দরজার কাঠামো, শৌচালয়, নালা। মানুষের বসবাসের একাধিক চিহ্নও মিলেছে। ঘর-গেরস্থালির জিনিসপত্র খুঁজে পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। মিলেছে রান্নার বাসন, মুদ্রা, গয়না।
১৩১৫
দুর্গের মধ্যে একটি খাঁড়িরও হদিস পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। সেই খাঁড়িতে প্রবেশ করত মার্লে নদীর জল। জলের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য ছিল গরাদের বাঁধ।
১৪১৫
এই দুর্গ থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে রয়েছে ‘শাতো দ সুসিনিয়ো’ দুর্গ। তার শৈলীও এই ‘শাতো দ লার্মি’-র মতোই। মনে করা হয়, একই সময় তৈরি হয়েছিল দুই দুর্গ।
১৫১৫
কেন সেই দুর্গের উপর গড়া হয়েছিল নতুন প্রাসাদ, তা নিয়ে রয়েছে অনেক মত। প্রত্নতাত্ত্বিকদের একাংশের মতে, শত্রুদের আক্রমণে দুর্গ ভেঙে গিয়েছিল। অনেকে মনে করেন, দীর্ঘ দিন পরিত্যক্ত থাকার কারণেই ভগ্নপ্রায় হয় ওই দুর্গ। অবশেষে হোটেল খুঁড়ে মিলল সেই প্রাচীন স্থাপত্য।