18 years old Canadian Girl bought a lottery ticket for the first time and won rupees 290 crore hitting jackpot, bought a plane and five Mercedes Car dgtl
Juliette Lamour
জীবনে প্রথম বার লটারি কেটেই ২৯০ কোটি! অষ্টাদশীর ভাগ্য ফেরার গল্প ঈর্ষা করার মতো
দাদুর কথাতেই লটারির টিকিট কাটেন জুলিয়েট। আগে কখনও কাটেননি বলে দোকানদারকেই বলেছিলেন টিকিটের নম্বর বেছে দিতে।
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লিশেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৪৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
‘বিগিনার্স লাক’ বলে একটা শব্দ আছে ফাটকা খেলার দুনিয়ায়। শুরুয়াতি সৌভাগ্য। সোজা কথায় যার মানে, ভাগ্যের খেলায় প্রথম বার যোগ দিলে না কি কিছু না কিছু লাভ হবেই। ১৮ বছরের জুলিয়েটের সঙ্গেও সম্ভবত তা-ই হল।
০২১৯
সাধারণ কলেজছাত্রী থেকে একটি আস্ত বিমানের মালিক! নিমেষে নিজের জীবনকে এ ভাবেই বদলে যেতে দেখলেন ওই অষ্টাদশী।
০৩১৯
সদ্য কৈশোর পেরিয়ে সাবালক হয়েছেন জুলিয়েট ল্যামোর। কানাডার বাসিন্দা এই ছাত্রী জীবনে প্রথম বার লটারির টিকিট কেটেছিলেন। আর প্রথমবারেই লক্ষ্যভেদ। লটারিতে এই তরুণী জিতেছেন ৪ কোটি আশি লক্ষ ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় হিসাব করলে যা দাঁড়ায় ২৯০ কোটি টাকায়।
০৪১৯
কানাডার লটারির ইতিহাসে এত অল্প বয়সে এমন বিপুল টাকার লটারি আগে কেউ জেতেননি। আবার জুলিয়েটও নাকি পুরস্কারের অঙ্ক না দেখেই কিনেছিলেন টিকিট। একখানা আইসক্রিম কিনতে গিয়ে ওই লটারির টিকিট কেটে ফেলেন তিনি।
০৫১৯
কিছু দিন আগেই জুলিয়েটের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৪ কোটি আশি লক্ষ ডলারের চেক। মঞ্চে দাঁড়িয়ে চেক হাতে নিয়ে সে দিনের ঘটনা শুনিয়েছেন অষ্টাদশী।
০৬১৯
জুলিয়েট জানিয়েছেন, ঘটনাটি যে দিন ঘটে তার দিন কয়েক আগেই ১৮ বছরের জন্মদিন পালন করেছেন তিনি। কলেজে ভর্তি হয়েছিলেন আগেই। হাতখরচ চালানোর জন্য একটি ওষুধের দোকানে সেলসগার্লের কাজ শুরু করেছেন দিন কয়েক আগে। যদিও সে দিন তাঁর কলেজ বা কর্মক্ষেত্রে যাওয়া হয়নি। জুলিয়েটের কথায়, ‘‘সে দিন আমি বাড়িতেই ছিলাম। বাবার বন্ধুরা এসেছিলেন বাড়িতে। বাবা বেরিয়েছিলেন দাদুর সঙ্গে দেখা করতে যাবেন বলে। বন্ধুদের আসার খবর পেয়ে মাঝপথ থেকে ফিরে আসেন।’’
০৭১৯
এর পর দাদুর সঙ্গে দেখা করার দায়িত্ব দেওয়া হয় জুলিয়েটকে। জুলিয়েট বেরিয়ে পড়েন। দাদুর জন্য আইসক্রিম কিনতে একটি দোকানের সামনে দাঁড়ান। ১৮ বছরের ছাত্রী জানিয়েছেন, ‘‘দাদু কী আইসক্রিম খাবে, জানতে ওকে ফোন করেছিলাম। শুনে উনি বললেন, ‘আরে তুমি তোমার জমানো টাকা আমার উপর খরচ করবে কেন। ১৮ বছর হয়েছে, একটা লটারির টিকিট কেটে ফেল’।’’
০৮১৯
সে দিন দাদুর কথাতেই লটারির টিকিট কাটেন জুলিয়েট। আগে কখনও কাটেননি বলে দোকানদারকেই বলেছিলেন টিকিট বেছে দিতে। তবে সেই টিকিট যে তার জীবন বদলে দিতে পারে ভাবতে পারেননি।
০৯১৯
বাবার কোনও স্থায়ী চাকরি নেই। স্বনিযুক্ত আর্থিক পরামর্শদাতা হিসাবে কাজ করেন। মা সংসার সামলান। জুলিয়েট তাঁদের একমাত্র কন্যা। পড়াশোনায় মেধাবী। ছোট থেকেই চিকিৎসক হওয়ার শখ। তাঁর পড়াশোনায় কোনও খামতি রাখেননি বাবা-মা। সেই মেয়ের স্বপ্নপূরণের বয়স না হোক আপাতত তিনি বিপুল সম্পত্তির মালিক।
১০১৯
কিন্তু লটারি জেতার মুহূর্তের অভিজ্ঞতা কেমন ছিল? কাকে প্রথম ফোন করেছিলেন জুলিয়েট? কানাডার কনিষ্ঠতম লটারি বিজেতা জানিয়েছেন, টিকিট কেটে ভুলেই গিয়েছিলেন তিনি। পার্সেই পড়েছিল সেই টিকিট। এক রবিবার ওষুধের দোকানে কাজ করতে করতে আচমকাই সহকর্মীদের উত্তেজিত কথাবার্তায় জুলিয়েট জানতে পারেন, তাঁর এলাকারই কেউ জ্যাকপট জিতেছেন।
১১১৯
টিভিতে খবরটি ঘোষণা করার পরই সহকর্মীদের মধ্যে যাঁরা টিকিট কেটেছিলেন, তাঁরা নম্বর মেলাতে শুরু করেছিলেন। সাহায্য করছিলেন ওষুধের দোকানি। জুলিয়েট তাঁকে জানান, তাঁর কাছেও একটি টিকিট আছে।
১২১৯
জুলিয়েটের টিকিটের শেষ তিনটি নম্বর ছিল ৬/৪৯। সেই নম্বর মেলাতেই দেখা যায় জুলিয়েটই জিতেছেন লটারি। জুলিয়েট জানিয়েছেন, পুরস্কারের অর্থ দেখে দু’হাতে মাথা ধরে মাটিতে বসে পড়েন ওই দোকানি। এর পর মাকে ফোন করে খবরটা জানান তিনি।
১৩১৯
জুলিয়েটের মা অবশ্য ঘটনাটি বিশ্বাসই করেননি। ফোনে সুখবর দিয়ে জুলিয়েট তাঁর মাকে বলেছিলেন, ‘‘মা আমি লটারি জিতেছি!’’ জবাবে তাঁর মা মুখের উপরেই বলে দেন, ‘‘না, তুমি জেতোনি, জিততেই পারো না ।’’
১৪১৯
শেষ পর্যন্ত অবশ্য মাকে বিশ্বাস করাতে পেরেছিলেন জুলিয়েট। তবে তিনি জানিয়েছেন, তাঁর মা ওই খবর জানার পরও কাজ ছেড়ে বাড়ি ফিরতে দেননি তাঁকে। নিজেই জুলিয়েটের কাছে পৌঁছে গিয়েছিলেন। টিকিটটি নিয়ে বলেছিলেন, বিকেল পাঁচটায় কাজের সময় শেষ হলে তবেই বাড়ি ফিরতে।
১৫১৯
কাঁপা হাতে লটারির টিকিটে সই করে মাকে দিয়েছিলেন জুলিয়েট। পরে সহকর্মীরাই তাঁর মনের অবস্থা বুঝতে পেরে, তাঁকে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। তার পর স্বপ্নের উড়ানে চড়ে লটারির পুরস্কার নিতে মঞ্চে আাসা জুলিয়েটের।
১৬১৯
জুলিয়েট যখন মঞ্চে দাঁড়িয়ে তাঁর এই অভিজ্ঞতার কথা বলছিলেন, তখন তাঁর সামনে দর্শকের ভিড়ে দাঁড়িয়ে চোখ মুছছিলেন মা। দর্শকও ছাত্রীর জীবন বদলে যাওয়ার প্রতি পরতের বিবরণ শুনে অবাক হয়ে হাততালি দিচ্ছিলেন। জুলিয়েট বলেন, ‘‘তবে লটারি জেতার মূল কৃতিত্ব দাদুরই। উনি না বললে টিকিট কাটাই হত না আমার।’’
১৭১৯
জুলিয়েটের কাছে শেষ প্রশ্ন ছিল, এত অর্থ নিয়ে কী করবেন? মঞ্চে দাঁড়িয়ে জুলিয়েট বলেছিলেন, ‘‘এখনও ভাবিনি। তবে পরিবারের কথা মাথায় রেখেই কিছু করব।’’ তবে সিদ্ধান্ত নিতে খুব বেশি দেরি করেননি জুলিয়েট।
১৮১৯
এক সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, লটারি জেতার পর লন্ডনে একটি বাংলো কিনেছেন ছাত্রী। যার দাম ৪০ কোটি টাকা। পরিবারের জন্য কিনেছেন পাঁচ-পাঁচটি মার্সিডিজ গাড়ি। যার এক একটির মূল্য প্রায় ২ কোটি টাকা। এ ছাড়া ১০০ কোটি খরচ করে একটি ব্যক্তিগত জেট বিমানও কিনেছেন জুলিয়েট। তার পরও তার হাতে যা রয়ে গিয়েছে, ভারতীয় মুদ্রায় তার পরিমাণ ১৫০ কোটি টাকা।
১৯১৯
জুলিয়েট জানিয়েছেন, এই অর্থ তিনি রেখেছেন নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য। বাবার সাহায্য নিয়ে ওই অর্থ বিনিয়োগ করবেন তিনি। একই সঙ্গে কানাডার নিউ অন্টারিওর শীর্ষস্থানীয় মেডিক্যাল কলেজ থেকে ডাক্তারি পড়ারও ইচ্ছে রয়েছে তাঁর।