আয়কর রিটার্ন এখনও অনেক করদাতার কাছেই প্রহেলিকা।
আয়কর রিটার্নের দিন যত এগিয়ে আসছে, তত নানান প্রশ্ন করদাতাদের মনে জাগতে শুরু করেছে। আয়কর রিটার্ন এখনও অনেক করদাতার কাছেই প্রহেলিকা।
প্রথমেই আসা যাক চাকরিজীবী এবং একটি বাড়ি বা ফ্ল্যাটের মালিকদের জন্য যে আইটিআর ১ ফর্ম তা নিয়ে। কোনও আর্থিক বছরে এঁদের ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় হলে আইটিআর ১ ফর্ম ভর্তি করতে হয়। কোনও ব্যক্তি বা হিন্দু অবিভক্ত পরিবারের ব্যবসা আর পেশা থেকে লাভ ছাড়া অন্য আয় থাকলে আইটআর ২ ফর্ম ভর্তি করতে হয়। কোনও সংস্থায় অংশিদার হিসাবে থাকা ব্যক্তি ও হিন্দু অবিভক্ত পরিবারকে আইটআর ৩ ফর্ম ভর্তি করতে হয়। বছরে ৫০ লক্ষ টাকার কম আয়ের যে সব ব্যক্তি আয়কর আইনের ৪৪ এডি, ৪৪ এডিএ আর ৪৪— এই সব ধারার আওতাধীন ‘প্রিজামটিভ ইনকাম স্কিম’-এর আওতায় রয়েছেন তাঁদের আইটিআর ৪ ফর্ম ভরতে হয়। ‘প্রিজামটিভ ইনকাম স্কিম’ এর আওতায় থাকলে অডিট থেকে ছাড় মেলে।
বস্তুত আইটআর ১ ফর্ম ভর্তি করার সময় সাধারণ ভাবে কোনও সমস্যা হয় না। তবে আইটিআর ২, আইটিআর ৩ বা আইটিআর ৪ এই সব ফর্ম ভর্তি করা নিয়ে অনেক সময় অনেক ধোঁয়াশা দেখা দেয়।
কী রকম ধোঁয়াশা? একটু বিশদে বলা যাক।
যেমন একের বেশি স্থাবর সম্পত্তি থাকলে সেটা আয়কর রিটার্নে জানাতেই হবে। ১৯৬১ সালের আয়কর আইন অনুসারে এখন দুটো স্থাবর সম্পত্তিতে বসবাস করা হচ্ছে বলা যায়। বাদবাকি স্থাবর সম্পত্তি ‘ভাড়া দেওয়ার যোগ্য’ বলে গণ্য করা যায়। এর অর্থ হল সেই সব সম্পত্তিতে যদি সারা বছর কোনও ভাড়া না থাকে তা হলেও তা করযোগ্য সম্পত্তি হিসাবে গণ্য করা হবে। ভাড়া দিলে কত ভাড়া পাওয়া যেত সেই হিসাব কষে তার উপর কর বসানো হব। ফলে এই সব সম্পত্তির বিশদ আয়কর রিটার্নে জানাতে হবে। অন্যথায় তা কর ফাঁকি হিসাবে গণ্য হতে পারে।
আয়ের উৎস আর সম্পত্তির বিশদ সঠিক তথ্য দেওয়াটাও সমান ভাবে জরুরি। এটা প্রায়শই করদাতারা করেন না। অথচ আইন অনুসারে করদাতারা ইচ্ছাকৃত ভাবে তার সামগ্রিক আয় নিয়ে ভুল তথ্য দিলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ। কারাদণ্ড বা আর্থিক জরিমানা বা দুটোই একসঙ্গে হতে পারে।
আর একটা ব্যাপারও নজর দেওয়া জরুরি। যথাযথ ফর্মে আয়কর রিটার্ন করা জরুরি। ভুল ফর্মে জমা করলে পুরো প্রক্রিয়া বাতিল হয়ে যাবে। মোদ্দা কথা, ভুল তথ্য দিলে করদাতা নিজের বিপদ নিজেই ডেকে আনতে পারেন।
অন্য একটি জরুরি বিষয় হল, অগ্রিম কর জমা দেওয়ার বিষয়টা। অনেক সময় দেখা যায় করদাতা জানেনই না যে তাঁকে অগ্রিম কর দিতে হবে। একটা ব্যাপার অবশ্য এখানে বলে রাখা দরকার। চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে এই ব্যাপারটা দেখে তাদের মালিক বা সংস্থা। কর্মচারীর মাসিক বেতন থেকে তা কেটে নেওয়া হয়। অবশ্য আয়ের আরও উৎস থাকলে তা জানানো উচিত।
আরও একটা ব্যাপারে অনেক সংশয় হতে পারে। অনেক করদাতার ধারণা আছে, যে হেতু আয়ের উৎস থেকে কর কাটা হয়েছে তাই তাকে আর কখনই অগ্রিম কর দিতে হবে না। সেটা কিন্তু ঠিক নয়। করদাতার করযোগ্য অঙ্ক যদি টিডিএসের চেয়ে বেশি হয়, তা হলে সেই ফারাকটা তাঁকে অগ্রিম কর হিসাবে দিতে হবে।
এটাও মনে রাখা জরুরি যে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে অগ্রিম কর জমা দিতে হবে। না হলে শাস্তিস্বরূপ বকেয়া অঙ্কের উপর সুদ ধার্য হবে।
করদাতাদের আরও একটা সাধারণ ভ্রান্তি থাকে। যে সব আয়কে আয়কর থেকে ছাড় দেওয়া হয়, সেগুলোর উল্লেখ না করা। এটা ঠিক নয়। করদাতার মোট আয় বছরে আড়াই লক্ষ টাকা ছাড়ালেই আয়কর রিটার্ন দেওয়ার নিয়ম। এমনকি কোনও কোনও ক্ষেত্রে আড়াই লক্ষের কমেও আয়কর রিটার্ন দেওয়ার নিয়ম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy