প্রতীকী ছবি
আমাদের মধ্যে একটা বড় অংশই সঞ্চয় করি আয়করের হাত থেকে বাঁচতে। আর কর বাঁচানোর তাড়নাতেই দৌড়িয়ে থাকি কর বিশেষজ্ঞদের কাছে। জানতে চাই কী ভাবে আর কতটা করের হাত থেকে রেহাই পেতে পারি। কিন্তু ক’জন মাথায় রাখি যে কোন ধারা বা উপধারায় এই ছাড় পাচ্ছি। আর সেই কারণেই আমরা অনেক সময় জানিও না যে, কোনও কোনও খরচও কর রেহাইয়ের পথ হতে পারে।
৮০ টিটিএ: এই উপধারায় আপনি ব্যাঙ্ক, কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্ক বা পোস্ট অফিসে সঞ্চয় থেকে পাওয়া সুদ বাবদ আয়ে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত কর ছাড় পেতে পারেন। তবে এই ছাড়ের মধ্যে যে সব সঞ্চয়ের সুদ ধরা যাবে না, সেগুলি হল - ফিক্সড ডিপোজিট, রেকারিং ডিপোজিট, রেকারিং ডিপোজিট বা কর্পোরেট ঋণপত্রে বিনিয়োগ।
৮০ জিজি: আপনি যদি হাউস রেন্ট অ্যালাউন্স খাতে অফিস থেকে কিছু না পান, তা হলেও কিন্তু বাড়ি ভাড়া বাবদ কর ছাড় পাওয়ার অধিকারী আপনি। শুধু কয়েকটি শর্ত মেনে চলতে হবে। যেমন,
ক) আপনার নিজের নামে কোনও ফ্ল্যাট বা বাড়ি থাকা চলবে না
খ) যে শহর আপনার কর্মক্ষেত্র, সেখানে নিজের স্ত্রী বা স্বামীর নামে কোনও ফ্ল্যাট থাকা চলবে না
গ) ভাড়া দিয়েই থাকতে হবে এবং কর্তৃপক্ষ দাবি করলে ভাড়ার রসিদ দাখিল করতে হবে
ঘ) উপরের শর্ত মানলে এই কর ছাড় সবাই পেতে পারেন।
তবে কতটা ছাড় পাবেন, তা নির্ভর করবে আপনার আয়ের চরিত্রের উপরে। এ ব্যাপারে কর উপদেষ্টার পরামর্শ মেনে চলুন
৮০ ই: এই উপধারাটি উচ্চশিক্ষার জন্য ঋণের উপর প্রযোজ্য। যে বছর থেকে সুদ দেওয়া শুরু হয়েছে, সেই বছরকে ধরে আট বছর ছাড় পাওয়া যায়। এই ছাড়ের উপর কোনও ঊর্ধসীমা নেই।
৮০ ইই: বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনেছেন। ঋণ শোধ করছেন। মূলের অংশ প্রতি মাসে শোধ করছেন, আর তার উপরে ৮০ সি ধরে কর ছাড়ও পাচ্ছেন। এ বার সুদ দেওয়ার জন্য আপনার আয়ের উপর কর বাবদ রেহাই চান। ধারা ২৪ তো আছেই তবে সঙ্গে রয়েছে ধারা ৮০ ইই-ও। কিন্তু এর সুযোগ নিতে গেলে খেয়াল রাখতে হবে, যাতে আপনার ঋণ যেদিন অনুমোদন পাচ্ছে, সেই তারিখে অন্য কোনও ঋণ বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার জন্য যেন নেওয়া না হয়ে থাকে। আরও একটা কথা, এই ছাড় পেতে গেলে ঋণের একটি নির্দিষ্ট সীমা মেনে চলতে হবে। যে বছর ঋণ নিয়েছেন, সেই বছর এই সীমা কী ছিল, তা কিন্তু দেখে নিতে হবে। এর উপরে অবশ্য ধারা ২৪ অনুযায়ী আপনার জন্য আরও কিছু সুবিধা থাকবে। তবে শর্ত সাপেক্ষে।
৮০ ডি: এই উপধারাটি তৈরি হয়েছে চিকিৎসা বিমার জন্য। সন্তান, স্ত্রী বা স্বামী এবং নিজের জন্য নিলে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় মিলবে প্রিমিয়ামের খরচে। এ ছাড়াও ৬০ বছরের কম বয়স্ক বাবা-মার জন্য আরও ২৫ হাজার টাকা প্রিমিয়াম বাবদ ছাড়। ষাট পেরোলে এই ছাড় বেড়ে দাঁড়াবে ৫০ হাজার টাকায়। করদাতার বয়সও যদি ষাটের উপরে হয়, তা হলে এই ধারায় ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যেতে পারে।
৮০ ডিডি: এই ধারায় বিশেষ ভাবে সক্ষম আত্মীয়ের দেখাশোনা করার খরচের উপর ছাড় পাওয়া যায়।
ক) চিকিৎসা (বাড়িতে রেখে করলেও), নার্সের খরচ, এবং তাঁকে সুস্থ করে তোলার সংশ্লিষ্ট খরচের উপর ছাড় পাওয়া যায়।
খ) বিশেষ কোনও প্রকল্পে নির্ভরশীল বিশেষ ভাবে সক্ষম আত্মীয়ের দেখাশোনার জন্যও ছাড় পাওয়া যায়। তবে এই সুযোগ নিতে গেলে তাঁর বিশেষ ভাব সক্ষমতার শংসাপত্র দাখিল করতে হবে।
কেমন ছাড় এই ক্ষেত্রগুলিতে?
ক)যেখানে অক্ষমতা ৪০ শতাংশের বেশি, কিন্তু ৮০ শতাংশের কম, সেখানে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড়।
খ) যেখানে অক্ষমতা ৮০ শতাংশের উপরে, সেখানে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত কর ছাড় পাওয়া যাবে।
৮০ ডিডিবি: আপনার বয়স যদি ৬০ বছরের নীচে হয়, তবে চিকিৎসার খরচ বাবদ ৪০ হাজার ছাড়। যদি আপনার বয়স ৬০ বছরের উপরে হয়, অথবা আপনার নিকটাত্মীয়ের চিকিৎসার খরচ বহন করে থাকলে তাঁর বয়স ৮০ বছরের উপর হয়, তাহলে আপনি ১ লক্ষ টাকা চিকিৎসা খরচ বাবদ ছাড় পাবেন। তবে মাথায় রাখবেন গোটা ছাড়টাই স্বাস্থ্যবিমা বা সংশ্লষ্ট ছাড়ের অংশ হিসাবে গ্রাহ্য।
৮০ টিটিবি: মাথায় রাখুন এই ধারা অনুযায়ী প্রবীণ নাগরিকদের ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত সুদ বাবদ খরচ আয়কর মুক্ত। সংশ্লিষ্ট আর্থিক সংস্থাকে তা জানানো থাকলে সূত্র থেকেও তা কাটা হবে না।
এ ছাড়াও রয়েছে আরও বিভিন্ন ছাড়, অনেক সময়েই যার সুযোগ আমরা নিই না। মার্চ মাস আসছে। একটু না হয় খোঁজ করেই দেখলেন। লিখতে পারেন আমাদেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy