প্রতীকী ছবি।
যাঁরা কর দেন, তাঁরা ভালই জানেন চলতি অর্থবর্ষের একেবারে শেষে এসে পড়েছি আমরা। আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ বাদেই ৩১ মার্চের ডেডলাইন চলে আসবে। আয়করের নিয়ম অনুযায়ী এখনও করণীয় যা বাকি আছে তা করে ফেলতে হবে। সবথেকে বড় প্রয়োজন ৮০সি ধারার অন্তর্গত সুবিধাটি পাওয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ করা। এই ধারায় যে সব প্রকল্পে আয়কর ছাড় পাওয়া যায় সেগুলির মধ্যে আছে ইএলএসএস, ইউলিপ, এনএসসি, পিপিএফ এবং পাঁচ বছর মেয়াদি জমা।
শেষ তিনটি আজ আলোচনার বাইরে রাখছি। প্রতিশ্রুত রিটার্ন দেয় বলে বিনিয়োগের পন্থা হিসেবে এগুলির নিশ্চয়তা নিয়ে তেমন সন্দেহ নেই। তবে ইএলএসএস না ইউলিপ, এই তর্ক ইদানিং আরও জোরদার হয়েছে। এগুলির রিটার্ন বাজার নির্ভর, অর্থাৎ অনিশ্চিত। ফলে লগ্নির ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে, বিশেষত যেখানে বাজারের পরিস্থিতি টালমাটাল, মুদ্রাস্ফীতি প্রকট এবং সুদের হার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার আশঙঅকা প্রবল।
তর্কে ইন্ধন না দিয়েই বলছি, ইউলিপের জগতে নানা ধরনের বদলের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন বিনিয়োগকারীর একাংশ সেটির দিকে ঝুঁকছেন। এ যুগের ইউলিপে একাধিক বৈশিষ্ট্য আছে যেগুলি সাবেকি প্ল্যানের ক্ষেত্রে তেমন ভাবে দেখা যেত না। ইউলিপের চারিত্রিক পরিবর্তনে বিনিয়োগকারীরা সুবিধাই পেয়েছেন। সে তুলনায় ইএলএসএস প্রায় একই জায়গায় স্থিতিশীল। বদলানোর সম্ভাবনা সেখানে আর নেই বললেই চলে।
সংক্ষেপে বলা যাক চলতি প্রজন্মের ইউনিট-লিঙ্কড জীবনবিমা কী দিতে পারে—
• অ্যালোকেশন চার্জে কাটছাঁট, পলিসি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন চার্জের জন্যও তাই।
• মরটালিটি চার্জ ফেরত। মেয়াদ শেষে তা বিমা গ্রাহকের সবিশেষ প্রাপ্তি।
• নানাবিধ ভ্যালু অ্যাডিশন। প্রয়োজন বুঝে গ্রাহকের ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজি বদলানোর সুবিধা, পরিবারের সদস্যকে যুক্ত করার সুযোগ, আংশিক উইথড্রয়াল, লয়ালটি ইউনিট যোগ করানো ইত্যাদি।
ইএলএসএসের পরিকাঠামোয় অবশ্য এই সমস্ত সুবিধা দেওয়া সম্ভব নয়, ঠিক প্রাসঙ্গিকও নয়। কারণ এটি এমনিতেই ‘লো কস্ট’ ফান্ড যেখানে সব থেকে সংক্ষিপ্ত লক-ইন পিরিয়ড (তিন বছর) একটি প্রধান আকর্ষণ হিসাবে গণ্য। তুলনায় অন্যান্য করছাড়ের প্রকল্পগুলিতে লক-ইনের সময়সীমা বেশি। ইউলিপও তার ব্যাতিক্রম নয়।
বিমা সংস্থাগুলির যুক্তি অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে মূল বিষয়টি হল লগ্নিকারীর হাতে যথেষ্ট ক্ষমতা তুলে দেওয়া এবং অবশ্যই খরচ কমানো। বিমা পরিচালনার খরচ যদি কমিয়ে আনা যায় এবং সেই বাঁচানোর খরচের কিছু অংশ বিমাকারীদের ফেরত দেওয়াও যায়, তা হলে বিমা গ্রাহকরাই উপকৃত হবেন। এখানেই আধুনিক ইউলিপের জয়।
বাকি থাকল সঞ্চয়ের অঙ্কে দক্ষতা। তবে সে ক্ষেত্রে ইএলএসএস এখনও বেশ এগিয়ে। দক্ষতা যাচাই করা হয় লাভের অঙ্কে বা ‘নেট রিটার্ন’ পরিসংখ্যানের নিরিখে। বিনিয়োগের খরচ কমলে লাভের অঙ্কে তা প্রতিফলিত হবে। মাথায় রাখতে হবে ইএলএসএস আর বিমা একেবারেই আলাদা। তাই পরিচালনার খরচ তুলনা করা ঠিক হবে না।
শুধু মাথায় রাখতে হবে দুই দলের পেশাদার ফান্ড পরিচালকরা তাঁদের ফান্ডের দক্ষতা বাড়ানোর দৌড়ে পিছিয়ে থাকতে চান না। কারণ, পেশার জগতে তাঁদের বাজারদর মাপা হয় তাঁদের ফান্ড পরিচালনার দক্ষতা দিয়েই। তাঁরা বাজারের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। আর মজাটা হল এখানেই। ফান্ড পরিচালকরা সারা ক্ষণ সূচকের সঙ্গে লড়াই চালিয়ে যান। যিনি এই কাজটা ভাল পারেন তাঁর দলেই আপনার বিনিয়োগের নাম লেখানো উচিত। অনিশ্চিত রিটার্নের দুনিয়ায় ধারাবাহিক ভাবে যে ফান্ড ম্যানেজার ভাল ফল আনতে সক্ষম, লগ্নির পাল্লা তাঁর দিকেই অবশ্য ঝুঁকতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy