Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
lata mangeshkar

সুরে-স্বরে লতাস্মরণ

অনুষ্ঠান শুরু আমজাদ আলি খানের সরোদে। গণেশ কল্যাণ দিয়ে বাদন শুরু করলেন শিল্পী। তাঁর সঙ্গে তবলা সঙ্গতে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু শুরুতেই প্রবল সমস্যা সাউন্ড সিস্টেমে।

আমজাদ আলি খান।

আমজাদ আলি খান।

সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৬:০৩
Share: Save:

বিশ্ব সঙ্গীত দিবসে বাদনে-সুরে-স্বরে লতা মঙ্গেশকরকে স্মরণ কলকাতার সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে। চোখ ঝলসে দেওয়া মঞ্চসজ্জা। ভাবনা সৌরেন্দ্র-সৌম্যজিৎ জুটির। নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশ-খানিক দেরিতে শুরু।

অনুষ্ঠান শুরু আমজাদ আলি খানের সরোদে। গণেশ কল্যাণ দিয়ে বাদন শুরু করলেন শিল্পী। তাঁর সঙ্গে তবলা সঙ্গতে অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় এবং অনুব্রত চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু শুরুতেই প্রবল সমস্যা সাউন্ড সিস্টেমে। বোঝা গেল, উস্তাদজি নিজের বাজনা শুনতে পারছেন না। সে কথা বারকয়েক জানালেনও প্রবীণ শিল্পী। কিন্তু অধরা রইল সমাধান। সেই অবস্থাতেই বাজালেন আমজাদ আলি খান। প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও তাঁর শিল্প পরিচিত মাধুর্যেই রূপায়িত হল। লতা মঙ্গেশকরের প্রিয় গণেশ কল্যাণের পর আমজাদের অবগাহন রবীন্দ্রনাথে। বাজালেন রবীন্দ্রনাথের দু’টি গানের আঙ্গিকে— ‘কোন খেলা যে খেলব’ এবং ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ’। তুলনাহীন এবং ভাষাতীত পরিবেশনা। শব্দব্যবস্থা যে একেবারেই সহায়ক নয়, শ্রোতাকে খানিকক্ষণের মধ্যেই তা বিস্মৃত হতে বাধ্য করলেন শিল্পী।

শব্দব্যবস্থা অবশ্য এর পরে ঠিক হল। পরবর্তী পর্বে ছিল লতা মঙ্গেশকরের গাওয়া নানা গানের কোলাজ। মূলত ছবির গান, সঙ্গে বেসিকও। এক ঝাঁক শিল্পী। সে তালিকায় শুভা মুদগল, রাশিদ খান, হরিহরণ, উষা উত্থুপ প্রমুখ। ‘কিনারা’ (১৯৭৭) ছবিতে রাহুল দেব বর্মণের সুরে ‘নাম গুম যায়েগা’ গাইলেন সৌম্যজিৎ। অন্বেষা গাইলেন শচীনদেব বর্মণের সুরে ‘শর্মিলী’ (১৯৭১) ছবির ‘মেঘা ছায়ে আধি রাত’। শুভা মুদগলের কণ্ঠে ‘প্রেম পর্বত’ (১৯৭৩) ছবির জয়দেব-সুরারোপিত ‘ইয়ে নীর কাঁহাসে বরসে হ্যায়’ অনবদ্য উপস্থাপনা। সঙ্গে ফিউশন ‘আল্লা তেরো নাম’। শুভমিতার পরিবেশনা হৃদয়নাথ মঙ্গেশকরের সুরে ‘দুয়ো দুয়ো আড়ি’-নির্ভর মেডলি। রাশিদ খানের কণ্ঠে রাহুল দেব বর্মণের সুরে ‘মেহবুবা’ (১৯৭৬) ছবির গান ‘মেরে নয়না সাওন ভাদো’ ছিল অন্যতম প্রাপ্তি। হরিহরণ গাইলেন সলিল চৌধুরী সুরারোপিত ‘পরখ’ (১৯৬০) ছবির ‘ও সজনা, বরখা বাহার আয়ি’ পরে শ্রোতাদের অনুরোধে ‘তু হি রে’ গানের কয়েক পঙ্‌ক্তি। উষা উত্থুপ গাইলেন লক্ষ্মীকান্ত-পেয়ারেলালের সুরে ‘দো রাস্তে’ (১৯৬৯) ছবির গান ‘বিন্দিয়া চমকেগি’। সেলফোনের আলো জ্বালিয়ে শ্রোতারা মাতলেন সে পরিবেশনায়। এ সন্ধ্যার বড় পাওনা পাপনের গাওয়া দু’টি গানের সংমিশ্রণ। পাপন ধরলেন সতীনাথ মুখোপাধ্যায়ের সুরে ১৯৫৬ সালে রেকর্ড করা লতার ‘কত নিশি গেছে’ দিয়ে এবং পরে মদনমোহনের সুরে ‘উয়ো কৌন থি’ (১৯৬৪) ছবির ‘লগ যা গলে’। চমৎকার উপস্থাপনা। এর পরে ছিল এক ঝাঁক সাদা-পোশাকের শিশুকে মঞ্চে নিয়ে সৌম্যজিৎ উপস্থাপিত নানা গানের কোলাজ। অনুষ্ঠানের সমাপ্তি সমবেত গানে। আমজাদ আলি খান ছাড়া মঞ্চে সবাই, সঙ্গে যোগ আরমান খানের। রোশনের সুরে ‘মমতা’ (১৯৬৬) ছবির গান ‘রহে না রহে হম’। শেষে মূল গানটির কিছু অংশ শোনা গেল লতা মঙ্গেশকরের কিন্নরকণ্ঠে।

নামী শিল্পী, ব্যয়-দামি আয়োজন। বিশ্বসঙ্গীতের নক্ষত্র শিল্পীদের ছবি-সংবলিত মঞ্চসজ্জা। ভরা প্রেক্ষাগৃহ। তবে মোটের উপর জগাখিচুড়ি। আমজাদ আলি খানের মাপের কিংবদন্তি মঞ্চাসীন হওয়ার আগে শব্দব্যবস্থা কেন সুপরীক্ষিত ছিল না, সে বিস্ময় স্বাভাবিক। কণ্ঠশিল্পীরা সকলেই নিজেদের শৈলী-মাফিক ভাল। উল্লেখের দাবি রাখে কোরাস, অর্কেস্ট্রা, সৌরেন্দ্রর পিয়ানো ও অবশ্যই অহনা পালচৌধুরীর মার্জিত এবং সংক্ষিপ্ত-সুন্দর ঘোষণা-উপস্থাপনা।

অন্য বিষয়গুলি:

lata mangeshkar Hariharan Rashid Khan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy