গ্রহাণুর বুকে পা ছুঁইয়ে তার ‘মাংস’ উপড়ে আনবে ওসিরিস-রেক্স। ছবি- নাসার সৌজন্যে।
আবার ইতিহাস গড়তে চলেছে মানবসভ্যতা।
কোনও গ্রহ বা উপগ্রহ নয়। ধূমকেতুর পর এ বার কোনও গ্রহাণু (‘অ্যাস্টারয়েড’)-তে পা ছুঁইয়ে তার অনেকটা ‘মাংস’ও উপড়ে আনতে চলেছি আমরা। এই প্রথম।
যা অত্যন্ত বিপজ্জনকও। কারণ, গ্রহাণুদের পিঠ (সারফেস) এতটাই এবড়োখেবড়ো যে সেখানে পা ছোঁয়াতে গেলেই বিপদ ঘটে যেতে পারে যে কোনও মুহূর্তে।
তা-ও আবার আমাদের কাছেপিঠে নয়, সেই গ্রহাণুটি রয়েছে অনেক অনেক দূরে, ২০ কোটি ৭০ লক্ষ মাইল (বা ৩৩ কোটি ৪০ লক্ষ কিলোমিটার)। মঙ্গল আর বৃহস্পতির মাঝখানে রয়েছে যে গ্রহাণপুঞ্জ (‘অ্যাস্টারয়েড বেল্ট’), এই গ্রহাণুর ঠিকানা সেই মুলুকেই। তার নাম- ‘বেন্নু’।
১৬ সেকেন্ডে ৬০ গ্রাম
১৬ সেকেন্ডেরও কম সময়ের জন্য নেমে সেই গ্রহাণুর ‘মাংস’ (মাটি, নুড়ি, পাথর) উপড়ে নিয়ে সেগুলি পৃথিবীতে আনবে নাসার একটি মহাকাশযান। সেই নমুনাও একটু-আধটু নয়। ৬০ গ্রাম।
আকারে বড় একটা ভ্যানের মতো নাসার মহাকাশযান ‘ওসিরিস-রেক্স’। যেন বাজপাখি বা চিল-শকুন! এর আগে যা কখনও আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
পৃথিবীতে আনা হবে ২০২৪-এ
নমুনা সংগ্রহের পর আগামী বছরের মাঝামাঝি বেন্নু ছেড়ে পৃথিবীর উদ্দেশে পাড়ি জমাবে ওসিরিস-রেক্স। সব কিছু ঠিকঠাক ভাবে চললে পৃথিবীতে তার পৌঁছনোর কথা চার বছর পর। ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর।
প্রথম পদার্পণ। গ্রহাণু বেন্নু।
তবে ৬০ গ্রামের বেশি নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব নয় নাসার মহাকাশযানটির পক্ষে। চাঁদে ‘অ্যাপোলো মিশন’গুলির পর অবশ্য এত বেশি পরিমাণে কোনও মহাজাগতিক বস্তুর অংশবিশেষ কুড়িয়ে আনতে পারেনি সভ্যতা।
টাচ অ্যান্ড গো...
নাসার ‘ওসিরিস-রেক্স মিশন’-এর এক সদস্য (নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক) ‘আনন্দবাজার ডিজিটাল’কে জানিয়েছেন, সব কিছু ঠিকঠাক ভাবে চললে আশা করা যায়, নাসার মহাকাশযান ওসিরিস-রেক্স আগামী ২০ অক্টোবর পা ছোঁয়াতে পারবে বেন্নু গ্রহাণুতে। তবে কোনও গ্রহ বা উপগ্রহে যে ভাবে কোনও ল্যান্ডার নামানো হয়, ৪ বছর আগে যে ভাবে প্রথম ল্যান্ডার নামানো হয়েছিল ধূমকেতু ‘৬৭/পি শুরুমোভ-গেরাশিমেঙ্কো’তে, এ বার বেন্নুতে সভ্যতার পদার্পণ ঠিক সে ভাবে হবে না। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্য পা ছুঁইয়েই বেন্নু থেকে নমুনা উপড়ে আনা হবে। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘টাচ অ্যান্ড গো' (সংক্ষেপে 'টিএজি' বা 'ট্যাগ')।
২০ অক্টোবর নাইটিঙ্গেলে
তিনি এও বলেছেন, ‘‘কয়েক সেকেন্ডের জন্য পা ছুঁইয়ে বেন্নুর নুড়ি, পাথরের নমুনা উপড়ে আনার জন্য চেষ্টা চালানো হবে তিন দফায়। তার প্রথম পর্বটি হবে ২০ অক্টোবর।’’
নাসার মহাকাশযানটির রোবটের পা বেন্নুকে ছোঁবে তার উত্তর গোলার্ধে। জায়গাটার নাম- ‘নাইটিঙ্গেল’। খুবই এবড়োখেবড়ো। পাহাড়ি এলাকা। যার ব্যাস ৫২ ফুট বা ১৬ মিটার।
কেন পছন্দের নাইটিঙ্গেল?
ওসিরিস-রেক্স মিশনের ওই সদস্য জানিয়েছেন, ‘‘তবু ওই জায়গাটিকেই বেছে নিয়েছি আমরা। মন্দের ভাল বলে। কয়েক হাত দূরেই চার পাশে খাড়াই পাহাড়। খুব লম্বা বহুতলের মতো। তারই মাঝখানে একটা ছোট্ট জায়গায় পাথর অতটা এবড়োখেবড়ো, উঁচু নয়। বরং সেখানে ধূলিকণাটাই যেন বেশি। আর সেই ধূলিকণার মধ্যেই মিশে রয়েছে নানা ধরনের মৌল ও যৌগিক পদার্থ। খনিজ। তাই পা ছোঁয়ানোর জন্য ওই জায়গাটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে।’’
টার্গেট ‘নাইটিঙ্গেল’। যেখানে নামবে ওসিরিস-রেক্স (বাঁ দিকে দেখানো হয়েছে)
পা ছোঁওয়ানোর পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক এলাকা। যে কোনও মুহূর্তে পাহাড়ের চূড়ায় ধাক্কা লেগে ভেঙে গুঁড়িয়ে যেতে পারে নাসার মহাকাশযান। যেখানে পা ছোঁয়াবে সেই মহাকাশযানের ‘রোবোটিক আর্ম’, হিসেবে একটু ভুলচুক হলে সেটাও আশপাশের পাহাড়গুলির তলদেশে ধাক্কা খেয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে যেতে পারে বরাবরের মতো। তাই তিন বারের চেষ্টায় চার পাশের বিপদসঙ্কুল পরিবেশের মধ্যে অত অল্প পরিসর থেকে নমুনা তুলে আনতে সাড়ে ৪ ঘণ্টার মতো সময় লাগবে ওসিরিস-রেক্সের।
চেকপয়েন্ট ম্যানুভার
কী ভাবে নামবে, উপড়ে নেবে নমুনা? নাসার তরফে সবিস্তারে জানানো হয়েছে তার প্রত্যেকটি ধাপ।
বড়ই এবড়োখেবড়ো বেন্নুর পিঠ।
প্রথমত, অবতরণের প্রক্রিয়া শুরু হবে নাসার মহাকাশযান যখন থাকবে বেন্নুর পিঠ থেকে ঠিক আড়াই হাজার ফুট (৭৭০ মিটার) উপরে। চালু করা হবে মহাকাশযানে থাকা ‘থ্রাস্টার’টিকে। অবতরণের জন্য মহাকাশযানটিকে বেন্নুর কক্ষপথ থেকে বেরিয়ে আসার শক্তি জোগাতে। তার পরের ৪ ঘণ্টা ধরে বেন্নুর পিঠে ধীরে ধীরে নামতে শুরু করবে নাসার মহাকাশযান। এই পর্যায়টির নাম- ‘চেকপয়েন্ট ম্যানুভার’। ওসিরিস-রেক্স যখন বেন্নুর পিঠের প্রায় ৪১০ ফুট (১২৫ মিটার) উপরে তখন মহাকাশযানটি যাতে খাড়া ভাবে (কোনও দিকে না হেলে, তা হলে আশপাশের পাহাড়ে ধাক্কা খেতে পারে) নামে, সে জন্য থ্রাস্টারের কাজ হবে ওসিরিস-রেক্সের অবস্থান ও গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করা।
ম্যাচপয়েন্ট ম্যানুভার
তার ঠিক ১১ মিনিট পর থেকেই শুরু হবে অবতরণের দ্বিতীয় পর্যায়। যার নাম- ‘ম্যাচপয়েন্ট ম্যানুভার’। ওসিরিস-রেক্স তখন থাকবে বেন্নুর পিঠ থেকে প্রায় ১৭৭ ফুট (৫৪ মিটার) উপরে। তখন অবতরণের গতিবেগ আরও কমিয়ে ফেলা হবে দ্রুত। নিজের চার পাশে বেন্নু যে ভাবে লাট্টুর মতো ঘুরছে তার উপর নির্ভর করে ঠিক কোন জায়গায় নিরাপদে নামা যায় তা খোঁজার কাজও শুরু হবে তখনই। সেটা সবচেয়ে ভাল ভাবে করা সম্ভব হবে ওসিরিস-রেক্স যখন বেন্নুর পিঠ থেকে থাকবে ঠিক ১৬ ফুট উপরে।
জ্বালানো হবে তিনটি বোতলে ভরা নাইট্রোজেন
জায়গা খোঁজার কাজ শেষ হলেই অবতরণে দেরি করবে না ওসিরিস-রেক্স। পা ছোঁয়াবে বেন্নুতে। কিন্তু খুবই অল্প সময়ের জন্য। ১৬ সেকেন্ডেরও কম। নাসার মহাকাশযানের ভিতরে খুব চাপে রাখা আছে নাইট্রোজেন গ্যাসের তিনটি বোতল। সেই গ্যাস জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গেই তা বেন্নুর ‘মাংস’ উপড়ে তুলে আনবে। সেগুলি রাখা থাকবে মহাকাশযানে থাকা ‘কালেক্টর হেড’-এ।
নাসার ওসিরিস-রেক্স মিশনের খুঁটিনাটি: দেখুন ভিডিয়োয়
কাজ শেষ। বিপজ্জনক এলাকা ছে়ড়ে যত তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসা যায় ততই মঙ্গল। তাই ওসিরিস-রেক্স মহাকাশযানকে এ বার উঠে আসতে হবে বেন্নুর পিঠ থেকে। তার জন্য আবার চালু হবে থ্রাস্টার।
পৃথিবী থেকে কমান্ড পাঠিয়ে ভুল শোধরানো অসম্ভব
পা ছোঁয়ানোর সময় পৃথিবী থেকে বেন্নু আর মহাকাশযান ওসিরিস-রেক্স থাকবে ২০ কোটি ৭০ লক্ষ মাইল দূরে। ফলে, মহাকাশযানের কোনও ভুলচুক হচ্ছে বোঝা গেলে তাকে গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে ‘কমান্ড’ দিয়ে শুধরে দেওয়ার জন্য কোনও সিগন্যাল পাঠানো হলেও তা মহাকাশযানে পৌঁছতে সময় নেবে প্রায় সাড়ে ১৮ মিনিট। এর আগে সেই সিগন্যাল কিছুতেই পৌঁছনো সম্ভব নয় তখন ওসিরিস-রেক্সে। কিন্তু ১৬ সেকেন্ডেরও কম সময় পা ছুঁইয়ে রাখতে পারবে নাসার মহাকাশযান। তাই গ্রহাণু বেন্নুতে ওসিরিস-রেক্সের গোটা অবতরণ প্রক্রিয়াটাই হবে স্বনিয়ন্ত্রিত। ঠিকঠাক ভাবে কাজগুলি হবে কি হবে না তা নির্ভর করবে সেই সময় ওসিরিস-রেক্সের ‘লাস্ট মিনিট্স পারফরম্যান্স’-এর উপরেই। ভুলচুক হলে গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে কমান্ড পাঠিয়ে তাকে শুধরে দেওয়ার সময় মিলবে না যে।
খুব কঠিন প্রযুক্তির পরীক্ষা দিচ্ছে এই অভিযান
নাসার জেট প্রোপালসন ল্যাবরেটরির (জেপিএল) ‘নিসার মিশন’-এর ইন্টারফেস ম্যানেজার আলোক চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘প্রযুক্তির নিরিখে আমি বলব, এটা পুরোপুরি রোবট-নির্ভর জটিলতম মহাকাশ অভিযানগুলির অন্যতম। এখানে গ্রহাণু বেন্নুতে পা ছোঁয়ানোর সময় তাকে গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে কমান্ড পাঠানোর কোনও সুযোগই পাওয়া যাবে না। ফলে, আমাদের পুরোপুরি নির্ভর করতে হবে ওসিরিস-রেক্সের ভিতরে থাকা যন্ত্রগুলির উপর। এমনিতেই গ্রহাণুদের মতো খুব ছোটখাটো মহাজাগতিক বস্তুতে নামার কাজটা জটিল বললেও কম বলা হয়। সেই অবতরণ নিখুঁত না হওয়ার সম্ভাবনাটাই বেশি। তার উপর বেন্নু থেকে খুব অল্প সময়ে নমুনা সংগ্রহ আর সে সব পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার কাজটাও এই অভিযানে স্বনিয়ন্ত্রিত ভাবেই করবে ওসিরিস-রেক্স। প্রয়োজনের সময় আমাদের পাঠানো কমান্ড কাজে লাগবে না দূরত্ব অনেক বেশি হওয়ায়।’’
কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা? সন্দীপ চক্রবর্তী (বাঁ দিকে) ও আলোক চট্টোপাধ্যায়।
আলোক এও জানাচ্ছেন, এই প্রযুক্তির সাফল্যের উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। প্রচুর খনিজ ও মূল্যবান ধাতুতে ভরা এই সব গ্রহাণুগুলি থেকে আগামী দিনে সেগুলি আমরা কী ভাবে উত্তোলন করব আর সে সব নিয়ে আসতে পারব উত্তরোত্তর প্রাকৃতিক সম্পদ ফুরিয়ে আসা পৃথিবীতে, তার অগ্নিপরীক্ষা হবে এই অভিযানেই। এ ছাড়াও এই গ্রহাণুগুলির রাসায়নিক উপাদান সঠিক ভাবে জানা গেলে সৌরমণ্ডলের সৃষ্টি-কাহিনী আর তার ভবিষ্যতে কী লেখা আছে সেটাও বোঝা যাবে স্পষ্ট ভাবে।
কেন বেন্নু?
কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান সেন্টার ফর স্পেস ফিজিক্স (আইসিএসপি)’-এর অধিকর্তা জ্যোতির্বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, এই সৌরমণ্ডলে প্রায় ৫ লক্ষ গ্রহাণু রয়েছে। এদের মধ্যে আমরা যেমনটি চাইছি অনেকটা সেই রকম গ্রহাণুই বেন্নু। পৃথিবী থেকে সূর্যের যা দূরত্ব (যাকে বলা হয় এক ‘অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিট’ বা ‘এইউ’), আমাদের থেকে বেন্নু রয়েছে তার চেয়ে সামান্য দূরে। ১.৩ এইউ বা ২০ কোটি কিলোমিটারের কিছু বেশি। সূর্যকে প্রদক্ষিণের সময় যখন বেন্নু আমাদের সবচেয়ে কাছে চলে আসে তখন পৃথিবী থেকে তার দূরত্ব হয় ৩ লক্ষ কিলোমিটারের মতো। মোটামুটি চাঁদের দূরত্বে। তা ছা়ড়া অন্য গ্রহাণুগুলির কক্ষপথ যতটা পাগলাটে, এর ততটা নয়। বহু বছর আগে দেখা তার কক্ষপথ সে ভাবে বদলে যেতে দেখা যায়নি। ফলে, এদের গতিবিধি আঁচ করাটাও সহজ। তাই বেন্নুতে অবতরণও অন্য গ্রহাণুগুলির তুলনায় সহজ। অনেকের ধারণা, আগামী শতাব্দীতে এই বেন্নুই ধাক্কা মারতে পারে পৃথিবীকে।
সন্দীপের কথায়, ‘‘বেন্নুকে বেছে নেওয়ার আরও কয়েকটি কারণ রয়েছে। তুলনায় আমাদের কাছেপিঠে থাকা ও অনেকটাই কম পাগলাটে কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করা গ্রহাণু বেন্নুর মতো আরও অন্তত ২০০টি রয়েছে। তবু বেন্নুকে বেছে নেওয়ার কারণ এর ব্যাস ৫০০ মিটার। বাকিদের চেয়ে বেশি। তাতে মোটামুটি নিরাপদে অবতরণের জায়গা বেছে নিতে মুশকিলটা কম হয়। তবে সবচেয়ে বড় কারণ, বেন্নুতে রয়েছে প্রচুর কার্বন। অনেকটা আমাদের পৃথিবীর মতোই। প্রচুর কার্বনে ভরা যে ৫টি গ্রহাণুর উপর আমরা নজর রেখে চলেছি অবতরণের জন্য, বেন্নু পড়ে তাদের মধ্যেই।’’
আর তাদের মধ্যে বেন্নুই আমাদের সবচেয়ে কাছে বলেই সে আমাদের নজর কেড়েছে, জানাচ্ছেন সন্দীপ।
কেন উপড়ে আনা হচ্ছে বেন্নুর ‘মাংস’?
সন্দীপের বক্তব্য, অনেকগুলি উদ্দেশ্য রয়েছে। আমরা জানতে চাইছি এই গ্রহাণুগুলিতে কোন কোন রাসায়নিক মৌল ও যৌগ রয়েছে? তাদের রাসায়নিক গঠনটা ঠিক কী রকম? সেখানে এমন কোনও জৈব যৌগ রয়েছে কি, যেগুলি সৌরমণ্ডল সৃষ্টির আদিপর্বে তৈরি হয়েছিল? এটাও জানতে চাইছি, বেন্নুর মতো গ্রহাণুগুলিতে কোনও বিষাক্ত পদার্থ রয়েছে কি না। কারণ, যদি আগামী শতাব্দীতে খুব কাছে এসে পড়ে বেন্নু, ধাক্কাও মারে আমাদের তা হলে কোনও বিষাক্ত পদার্থের নির্গমনে আমাদের অস্তিত্বের সংকট দেখা দেবে কি না। তাই ওসিরিস-রেক্স মিশন গোটা সভ্যতার পক্ষেই খুব তাৎপর্যপূর্ণ। ফলাফলও যার সুদূরপ্রসারী হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
আগের চেষ্টায় ব্যর্থতা, কিছু সাফল্য
আলোক ও সন্দীপ দু’জনেই জানাচ্ছেন, গ্রহাণুতে অবতরণের চেষ্টা আগেও হয়েছিল। তবে সে ভাবে সফল হয়েছে, বলা যায় না। ২০০৩ সালে গ্রহাণু ‘ইতোকাওয়া’য় নামার চেষ্টা করেছিল জাপানের মহাকাশযান ‘হায়াবুসা-১’। বেশ কয়েক বারের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছিল। শেষমেশ মাত্র কয়েক মাইক্রোগ্রাম ওজনের ‘মাংস’ উপড়ে আনতে পেরেছিল। যা তেমন কাজে লাগেনি পরিমাণ খুব সামান্য হওয়ায়। পরে জাপানেরই ‘হায়াবুসা-২’ মহাকাশযান অবশ্য আরও দূরে থাকা গ্রহাণু ‘রিউগু’র অংশবিশেষ তুলে আনার চেষ্টা করে। তবে এখনও সেই মহাকাশযান ফিরে আসেনি। তাই তার সাফল্য কতটা, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।
ওসিরিস-রেক্সের দিকেই তাই তাকিয়ে আছে সভ্যতা। তার ভবিষ্যতের ভাবনাটা যে নির্ভর করছে নাসার মহাকাশযানের সাফল্যের উপরেই!
ছবি ও ভিডিয়ো সৌজন্যে: নাসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy