ইনসেটে, অধ্যাপক অরিন্দম বন্দোপাধ্যায়। গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
তিন শত্রুকে এ বার ঘায়েল করা যাবে একই অস্ত্রে। একই সঙ্গে।
আমাদের ‘জীবন’ জলকে বাঁচানো যাবে তিন শত্রুর হানাদারি থেকে। এই প্রথম।
শিল্পবর্জ্য মেশা জলে আমাদের সেই তিন শত্রুকেই এক অস্ত্রে কুপোকাৎ করার অভিনব উপায় খুঁজে বের করলেন এক বঙ্গসন্তান। অধ্যাপক অরিন্দম বন্দোপাধ্যায়। কলকাতার ইন্ডিয়ান ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স (আইএসিএস)’-এর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের বিভাগীয় প্রধান।
অরিন্দম ও তাঁর সহযোগীদের গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান-জার্নাল ‘ল্যাংমুর’-এ। গত সপ্তাহে।
জলের ৩ শত্রুকে হাপিশের ব্রহ্মাস্ত্র
অরিন্দমরা আবিষ্কার করেছেন এমন একটি অণু যা শুষে নিতে পারে শিল্পবর্জ্য মেশা জলে লুকিয়ে থাকা সিসা ও ক্যাডমিয়ামের মতো ধাতব বিষ। একই সঙ্গে গোগ্রাসে গিলে নিতে পারে জলে ভেসে থাকা কেরোসিন, গ্যাসোলিন ও নানা ধরনের অপরিশোধিত তেলের মতো বিষাক্ত পদার্থ এমনকী নানা ধরনের জৈব রাসায়নিক রংও। বিশেষজ্ঞদের মতে, জলের বিষ ঝেড়ে ফেলার কাজে এই আবিষ্কার কার্যকরী হতে পারে ভবিষ্যতে।
গবেষকদল। দীপায়ন বৈরাগী (বাঁ দিক থেকে), নিবেদিতা নন্দী, অরিন্দম বন্দোপাধ্যায়, বিপ্লব মণ্ডল এবং বিশ্বনাথ হাঁসদা।
শিল্পবর্জ্য মেশা নদী বা পুকুরের জলে যারা থাকে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে। যাদের জন্য পানীয় ও অন্যান্য কাজকর্মে ব্যবহৃত জল উত্তরোত্তর বিপজ্জনক হয়ে উঠছে আমাদের পক্ষে। তা হয়ে উঠছে ব্যবহারের অযোগ্যও।
জলের সেই সব শত্রু
শিল্পবর্জ্য এসে মেশা নদী বা পুকুরের জলে থাকে নানা ধরনের বিষাক্ত রং। যেগুলি অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ, ওই সব রং সাধারণত জলে বা পরিবেশে অনেক দিন থাকার পরেও অন্য কোনও পদার্থে রূপান্তরিত হয় না চট করে। ফলে খুব অল্প পরিমাণে থাকলেও তাদের থেকে আমাদের ও অন্যান্য জীবের বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়।
শিল্পবর্জ্য মেশা জলে প্রচুর পরিমাণে থাকে অত্যন্ত বিষাক্ত সিসা ও ক্যাডমিয়াম ধাতুর আয়ন। এই ধাতব আয়নগুলি আসে মূলত ব্যাটারি, ত়ড়িৎদ্বার (‘ইলেক্ট্রোপ্লেট’) এবং রং-এর শিল্পক্ষেত্র থেকে। পানীয় বা অন্যান্য কাজে ব্যবহারের ফলে জল থেকে ওই ধাতব আয়নগুলি আমাদের শরীরে ঢোকে, পরিবেশে মেশে। আর সেগুলি দীর্ঘ দিন থেকেও যায় অবিকৃত ভাবে।
ক্যাডমিয়াম আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে জমে। ফলে তা বেশ প্রভাব ফেলে খাদ্যশৃঙ্খলের উপর।
আর সিসার আয়ন আমাদের শরীরে খুব অল্প পরিমাণেও যদি ঢোকে তা হলেও তা আমাদের স্নায়ু, অন্ত্র, দেহের স্বাভাবিক প্রতিরোধী ব্যবস্থা ও কার্ডিওভাসক্যুলার সিস্টেমের দারুণ ক্ষতি করতে পারে। হাড়ে, মস্তিষ্কে, কিডনি ও মাংসপেশিতে সিসা জমার দরুন নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা, রোগ হতে পারে। এমনকী মৃত্যুও ডেকে আনতে পারে।
আরও পড়ুন- হকিং, পেনরোজ কি উদ্ভাসিত অমল আলোয়? কী বলছে ইতিহাস
তাই শিল্পবর্জ্য মেশা জল থেকে কত তাড়াতাড়ি ও কত বেশি পরিমাণে নানা ধরনের বিষাক্ত রং ও ধাতব আয়নগুলি দূর করে সেই জলকে বিষমুক্ত করা যায় তা নিয়ে এখন গোটা বিশ্বজুড়েই চলছে গবেষণা।
শত্রু হঠানোর চালু পদ্ধতিগুলি
সেই গবেষণায় যে পদ্ধতিগুলির এখন ব্যবহার চলছে সবচেয়ে বেশি তাদের মধ্যে অন্যতম মেমব্রেন সেপারেশন, ফ্লক্যুলেশন, আয়ন এক্সচেঞ্জ এবং ইলেক্ট্রো-কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট। যদিও পদ্ধতিগত জটিলতা, তাদের সাফল্য ও খরচের নিরিখে ওই সব পদ্ধতিরই বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
নতুন অণুর অভিনবত্ব
‘অ্যাডজরপশন’ পদ্ধতির সেই সীমাবদ্ধতাগুলি অনেক কম। অ্যাডজরপশন বা শোষণ এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে জলে দ্রবীভূত বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থকে শোষণ করা সম্ভব হয়। আর সেটা করা সম্ভব হয় বহুরন্ধ্রবিশিষ্ট (‘পোরাস’) পদার্থের ভিতরের অনুকূল রাসায়নিক পরিবেশকে ব্যবহার করে।
এই গবেষণায় আবিষ্কৃত অণুটি দিয়ে তৈরি হাইড্রোজেলটিকে খুব কম চাপে ও খুব কম তাপমাত্রায় (-৭৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস) জলমুক্ত করে তাকে একটি বহুরন্ধ্র পদার্থে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
এই পদার্থের ট্যাবলেট জৈব রাসায়নিক রং মিশে থাকা জলের মধ্যে ফেলে দিলে তা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে জল থেকে রং শুষে নিয়ে জলকে পরিশুদ্ধ ও রঞ্জকহীন করে তুলতে পারে।
অরিন্দমদের কৃতিত্ব, তাঁরা এই প্রথম এমন একটি অণুর আবিষ্কার করেছেন যা একই সঙ্গে জলে গুলে যায় আবার পুরোপুরি গুলে যায়ও না। সেই অণুটি তেলেও গুলে যায় আবার তেলেও পুরোপুরি গুলে যায় না।
যারা কোনও দিনই একে অন্যের সঙ্গে মিশ খায় না বলে আমরা জানি, সেই জল আর তেলকে কার্যত ‘একই ঘাটে জল খাইয়েছেন’ অরিন্দমরা, তাঁদের সদ্য আবিষ্কৃত অণুটির দৌলতে। এই অণু জলের সঙ্গে যে আচরণ করে সেই আচরণই করে তেলের সঙ্গেও।
তার ফলে জলে পুরোপুরি মিশে যায় এমন সব বিষ (ধাতব ও নানা ধরনের জৈব রাসায়নিক রং) যেমন শুষে নিতে পারে অরিন্দমদের আবিষ্কৃত অণু, তেমনই জলে মেশে না এমন তেলজাতীয় পদার্থের গরলও তা টেনে নিতে পারে শিল্পবর্জ্যে ভরা জল থেকে। এটাই তাঁদের গবেষণার অভিনবত্ব।
আরও পড়ুন- এ বারের নোবেলজয়ী গবেষণার অন্তরালে এই বাঙালিও
‘‘একই সঙ্গে শিল্পবর্জ্য মেশা জলের তিন প্রধান শত্রুকে একই অস্ত্রে ঘায়েল করার ক্ষমতা রাখে এমন অণু এর আগে বিশ্বের আর কোথাও খুঁজে পাওয়া গিয়েছে বলে আমাদের জানা নেই’’, বলছেন অরিন্দম।
এর ব্যবহারে আমাদের ক্ষতি হবে না তো?
তাঁদের গবেষণায় যার হদিশ মিলেছে সেটি আসলে একটি পেপটাইডের অণু। যা অনেকগুলি অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়ে তৈরি। অ্যামাইনো অ্যাসিড দিয়েই তৈরি হয় নানা ধরনের প্রোটিন। অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলিই বিভিন্ন প্রোটিন তৈরির ‘ইট-বালি-চুন-সুড়কি’। আর আমাদের জীবনটাই বিভিন্ন রকমের প্রোটিনের উপর নির্ভরশীল।
‘‘তাই শিল্পবর্জ্য মেশা জলকে দূষণের কলুষমুক্ত করতে এই ধরনের পেপটাইড অণুর ব্যবহার আমাদের পক্ষে ক্ষতিকারক হয়ে উঠবে না’’, বলছেন অরিন্দম।
কী দেখেছেন গবেষকরা?
গবেষকরা দেখেছেন বস্ত্রশিল্পে খুব ব্যবহৃত হয় এমন জৈব রাসায়নিক রং মিথিলিন ব্লু (এমবি) এবং চুলের রং করার কাজে ব্যবহৃত বিসমার্ক ব্রাউন (বিবি)-এর মতো জৈব রাসায়নিক রং শুষে নিতে পারে তাঁদের আবিষ্কৃত পেপটাইড অণুটি। এ ছাড়াও চর্মশিল্প ও বস্ত্রশিল্পে ব্যবহৃত বিভিন্ন জৈব রাসায়নিক রংও পুরোপুরি শুষে নিতে পারে পেপটাইড অণুটি। এমনকী নানা রকমের জৈব রাসায়নিক রঙের মিশ্রণকেও তা শুষে নিতে পারে। একই সঙ্গে পারে সিসা ও ক্যা়ডমিয়ামের মতো অত্যন্ত বিষাক্ত ধাতব আয়নগুলিকেও জল থেকে টেনে বের করে নিতে।
তেল ও জলের মিশ্রণ থেকে তেল শুষে নেওয়া হচ্ছে সদ্য আবিষ্কৃত পেপটাইড অণুর জেল দিয়ে।
পেপটাইড অণু বা পেপটাইড নয় এমন অণু দিয়ে জল থেকে অত্যন্ত বিষাক্ত জৈব রাসায়নিক রং দূর করার আরও অনেক পরীক্ষানিরীক্ষা হয়েছে এর আগে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে।
গবেষকদের দাবি, ‘‘সেই সব পদ্ধতির চেয়েই সদ্য আবিষ্কৃত পেপটাইড অণুটি অনেক দ্রুত গতিতে অনেক বেশি পরিমাণে জল থেকে জৈব রাসায়নিক রঙের বিষ শুষে নিতে পারছে। দেখা গিয়েছে ১২ ঘণ্টার মধ্যেই জলে মিশে থাকা মিথিলিন ব্লু-এর মতো রঙের ৯৮.৮ শতাংশ আর বিসমার্ক ব্রাউনের মতো বিষাক্ত রঙের ৯৮.১ শতাংশ শুষে নিতে পারে এই পেপটাইড অণুটি। এটা একটা চমকপ্রদ ঘটনা।’’
জল থেকে তেল শুষতে পারে ৩০ সেকেন্ডে!
জলদূষণের ক্ষেত্রে আরও একটি গুরুতর সমস্যা হল ভাসমান তেল। সমুদ্র ও মহাসাগরগুলির জলেই এই দূষণ হয় সবচেয়ে বেশি। জাহাজের দুর্ঘটনা থেকে প্রচুর পরিমাণে তেল ছড়িয়ে পড়ে সমুদ্র ও মহাসাগরে। তা জলে ভাসতে থাকে। এই দূষণ ছড়িয়ে পড়ে নদীতেও। ভাসমান তেলের হাত থেকে সমুদ্র ও নদীর জলকে বাঁচানোর জন্য অনেক দিন ধরেই বিভিন্ন পদ্ধতির ব্যবহার চলছে।
গবেষকদের দাবি, সেই সব পদ্ধতির মধ্যে সবচেয়ে বেশি কার্যকর হতে পারে এই ধরনের পেপটাইড অণুর ব্যবহার। যা জলের উপরিতল থেকে অতি দ্রুত ও পুরোপুরি শুষে নিতে পারে ভাসমান তেল বা তেলজাতীয় পদার্থগুলিকে।
আরও পড়ুন- দার্জিলিঙের সকালে রজার আমাকে সৃষ্টির রূপ বোঝাতে শুরু করলেন
অরিন্দমের কথায়, ‘‘আমরা দেখেছি লবণাক্ত জল ও তেলের মিশ্রণ থেকে আমাদের আবিষ্কৃত পেপটাইড অণুটি তেল বা তেলজাতীয় পদার্থগুলিকে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যেই শুষে নিতে পারে। শুষে নিতে পারে কেরোসিন, ডিজেল, পেট্রলের মতো সব রকমের জ্বালানি তেল। এও দেখা গিয়েছে একই কাজে এই অণুটিকে অনেক বার ব্যবহার করা যায়। ফলে অন্যান্য পদ্ধতির ব্যবহারের চেয়ে এর খরচ কম। আমরা দেখেছি এমন ধরনের পদার্থ (পেপটাইড অণু) এক গ্রাম ব্যবহার করলে তা ১৯৪ থেকে ২০৫ গ্রাম পর্যন্ত জ্বালানি তেল শুষে নিতে পারে।’’
তিন শত্রু এক অস্ত্রে কাত: অধ্যাপক শান্তনু ভট্টাচার্য
এই রকম কৃত্রিম ভাবে বানানো কোনও অণু দিয়ে যে তেল ও জলের মিশ্রণ থেকে তেলকে শুষে নেওয়া যায়, ঘটনাচক্রে, সেই পথ বিশ্বে প্রথম দেখিয়েছিলেন এক বঙ্গসন্তানই। ভারতের বিশিষ্ট জৈব রাসায়নিক অধ্যাপক শান্তনু ভট্টাচার্য। ২০০১ সালে, বেঙ্গালুরুর ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (আইআইএসসি)’-এ অধ্যাপনা করার সময়। শান্তনুই সেই সময় জনিয়েছিলেন এই পদ্ধতিতে সমুদ্র ও মহাসাগরে ভাসা তেলকে শুষে নেওয়া সম্ভব। তাঁর কাজের ভিত্তিতে পরে সমুদ্র, মহাসাগরে ভাসা তেলকে শুষে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতির পেটেন্টও হয়েছে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ও সেপারেশন সায়েন্সে।
মতামতে। অধ্যাপক দেবাশিস হালদার (বাঁ দিকে) এবং অধ্যাপক শান্তনু ভট্টাচার্য
এখন কলকাতার ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স (আইএসিএস)’-এর অধিকর্তা অধ্যাপক শান্তনু ভট্টাচার্য মনে করেন, ‘‘এই গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কার্যকরী।’’
শান্তনু জানাচ্ছেন, এমন ধরনের পেপটাইড অণু জল ও তেলে মিশলে এক ধরনের আঠালো (‘জেল’) পদার্থ তৈরি হয়। জলে মিশলে সেগুলিকে বলে ‘হাইড্রোজেল’। আর পেট্রোলিয়াম ইথার, ডিজেল, কেরোসিন এবং পেট্রোলে মিশলে সেগুলিকে বলা হয় ‘অরগ্যানোজেল’।
শান্তনুর কথায়, ‘‘এই গবেষণা দেখাল পেপটাইড হাইড্রোজেলগুলি যেমন জল থেকে বিষাক্ত জৈব রাসায়নিক রং এবং ক্যাডমিয়াম ও সিসার মতো বিষাক্ত ধাতব আয়ন শুষে নিতে পারছে, তেমনই পেপটাইড অরগ্যানোজেলগুলি পারছে পেট্রোলিয়াম ইথার, ডিজেল, কেরোসিন এবং পেট্রোলের মতো তেল ও তেলজাতীয় পদার্থগুলিকেও শুষে নিতে। তার ফলে এই সদ্য আবিষ্কৃত পেপটাইড অণুটি দিয়ে যেমন বিষাক্ত রং এবং ক্যাডমিয়াম ও সিসার মতো বিষাক্ত ধাতব আয়ন হঠিয়ে দিয়ে জলকে পরিশুদ্ধ করে তোলা সম্ভব হবে, তেমনই সমুদ্র, মহাসাগরে ভাসা তেলও সরিয়ে ফেলা যাবে। একই সঙ্গে তিনটি কাজই হচ্ছে এই অণুটি দিয়ে। তাই এটি উল্লেখযোগ্য গবেষণা।’’
তিন কাজে দড় অণুর গঠনও সরল: অধ্যাপক দেবাশিস হালদার
মোহনপুরের ‘ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (আইসার কলকাতা)’-এর কেমিক্যাল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক দেবাশিস হালদার বলছেন, ‘‘খুবই উল্লেখযোগ্য কাজ করেছেন গবেষকরা। যে অণুটি আবিষ্কার করা হয়েছে তার গঠন তেমন জটিল নয়। অথচ তা একই সঙ্গে তিনটি কাজ করতে পারছে। তা যেমন বিষাক্ত ধাতব আয়ন ও নানা রকমের জৈব রাসায়নিক রংকে শুষে নিতে পারে তেমনই পারে তেল বা তেলজাতীয় পদার্থগুলিকে শুষে নিতে। এই অণুটি একাধারে হাইড্রোজেল ও অরগ্যানোজেল তৈরি করতে পারে। যা এই ধরনের পদ্ধতির ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’’
আরও পড়ুন- ‘আমার তত্ত্বের ফাঁকফোকর খুঁজছি, তোমরাও খুঁজে দেখ’, এখনও বলেন জিম পিবল্স
দেবাশিস এও জানিয়েছেন গবেষণার জন্য যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে তা খুবই যথাযথ। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তের গবেষণাগারে অন্য গবেষকরাও যাতে এই অণুটিকে তৈরি করতে পারেন তার জন্য পর্যাপ্ত তথ্যাদিও দেওয়া হয়েছে গবেষণাপত্রে। এই অণুটিকে কী কী ভাবে ব্যবহার করা যেতে পারে জলের দূষণ কমাতে তারও বিশদ ব্যাখ্যা দিতে পেরেছেন গবেষকরা। তবে জল থেকে শুষে নেওয়া তেল ও নানা রকমের রং ওই অণুটি থেকে আলাদা ভাবে নিষ্কাশনের যে পদ্ধতিগুলির (‘লায়োফিলাইজার’, ‘লো ভ্যাকুম রোটারি ইভাপরেটর’) কথা গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে সেগুলির চেয়ে আরও সহজ পদ্ধতিতে সেগুলি করা সম্ভব কি না গবেষকরা আগামী দিনে সে ব্যাপারে আলোকপাত করলে জলকে দূষণমুক্ত করা ও পরে শোষক অণুটি থেকে তেল ও রংকে উদ্ধার করে সেগুলিকে পুনর্ব্যবহারযোগ্য করার কাজটা সহজতর হতে পারে।
গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
ছবি সৌজন্যে: ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কাল্টিভেশন অব সায়েন্স (আইএসিএস), কলকাতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy