শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরে ও আদিত্য ঠাকরে।
সব ঠিক থাকলে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়া নিয়ে তিন দলের চূড়ান্ত ঘোষণা হতে চলেছে আগামিকাল। আজ দিল্লিতে কংগ্রেস ও এনসিপি নেতাদের মধ্যে ন্যূনতম অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে দুই দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ওই কর্মসূচি নিয়ে কাল মুম্বইয়ে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে বৈঠক হবে। বৈঠক ইতিবাচক হলে কালই সরকার গড়ার বিষয়ে চূড়ান্ত ঘোষণা করবে তিন দল। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী পদ পাবে শিবসেনা। কংগ্রেস ও এনসিপি-কে দেওয়া হবে উপমুখ্যমন্ত্রী পদ। আজ রাতে মুম্বইয়ে শরদ পওয়ারের সঙ্গে দেখা করেন উদ্ধব ও আদিত্য ঠাকরে।
গত মাসে মহারাষ্ট্রে ফল ঘোষণার পরেই মুখ্যমন্ত্রিত্বের দাবিতে বিজেপির সঙ্গে দর কষাকষি শুরু করে শিবসেনা। ভেঙে যায় দুই শরিকের জোট। মহারাষ্ট্রে এক দিকে জারি হয় রাষ্ট্রপতি শাসন। অন্য দিকে শিবসেনা, কংগ্রেস ও এনসিপি সরকার গঠনে সক্রিয় হয়। গত কয়েক দিন একাধিক বৈঠকের পরে আজ কর্মসূচির বিষয়টি চূড়ান্ত করতে দিল্লিতে শরদ পওয়ারের বাড়িতে বৈঠকে বসেন কংগ্রেস ও এনসিপির নেতারা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী হবেন শিবসেনা থেকে। ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার সূত্রটিতে শিবসেনাকে পুরোপুরি রাজি করানো না-গেলেও আপাতত অন্য দু’দলই চাইছে, প্রথমে কুর্সিতে বসুন উদ্ধব ঠাকরে।
এনসিপি-র উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দৌড়ে রয়েছেন শরদ পওয়ারের ভাইপো অজিত। এনসিপি-তেই আশঙ্কা রয়েছে, অন্তত উপমুখ্যমন্ত্রী পদ না-পেলে বিজেপিতে চলে যেতে পারেন অজিত। সে ক্ষেত্রে আরও দুর্বল হয়ে পড়বে দল। কংগ্রেস তাদের উপমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কোনও তরুণ মুখকে আনার পক্ষপাতী। বিধায়ক সংখ্যার অনুপাতে শিবসেনা ১৫টি, এনসিপি ১৫টি ও কংগ্রেস ১২টি দফতর পাবে বলে ঠিক হয়েছে।
তিন দলের মনোমালিন্যের সম্ভাবনা এড়াতে তিন শীর্ষ নেতা শরদ পওয়ার, সনিয়া গাঁধী ও উদ্ধব ঠাকরেকে নিয়ে সুপার কমিটি গড়ার প্রস্তাব সম্পর্কে আলোচনা হয়ে বৈঠকে। সূত্রের বক্তব্য, অভিন্ন কর্মসূচিতে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’ শব্দটি রাখার প্রস্তাবও উঠেছিল আলোচনায়। কিন্তু শিবসেনা আপত্তি জানালে কাছাকাছি একটি বিকল্প শব্দ খোঁজার দায়িত্ব দেওয়া হয় জয়রাম রমেশকে। বৈঠক শেষে কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ বলেন, ‘‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত কাল নেওয়া হবে। কাল ফের শরিক-বৈঠকের পরে শিবসেনার সঙ্গে বৈঠকে বসব। আশা করছি কাল সরকার গড়া নিয়ে কোনও একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।’’ এ দিকে আজ লোকসভায় মহারাষ্ট্রের চাষিদের দুর্দশা দূর করার লক্ষ্যে কংগ্রেস ও এনসিপি-কে শিবসেনার সঙ্গে হাত মিলিয়ে দ্রুত সরকার গড়তে বলে আবেদন করেন শিবসেনা সাংসদ ভাবনা গাউলি।
কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়া নিয়ে অবশ্য অসন্তোষ রয়েছে শিবসেনাতেও। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে এ নিয়ে দলের মতপার্থক্য দূর করতে কাল সকালে নিজের বাসভবন মাতোশ্রীতে বৈঠক ডেকেছেন উদ্ধব। দলের সমস্ত বিধায়ককে সেখানে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে আজ উদ্ধবের বিরুদ্ধে ভোটারদের ভুল বোঝানো ও বিশ্বাসভঙ্গ করার অভিযোগ নিয়ে থানায় গিয়েছেন এক ব্যক্তি। অভিযোগকারীর বক্তব্য, উদ্ধব ও তাঁর দলের দুই নেতা ভোটের প্রচারে গিয়ে হিন্দুত্বের স্বার্থে বিজেপি-শিবসেনা জোটকে ভোট দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই মতো তাঁরা বিজেপি-সেনা জোটকে ভোটও দেন। কিন্তু এখন শিবসেনা জোট ভেঙে কংগ্রেস-এনসিপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়ার চেষ্টা করছে। যা ভোটারদের প্রতারণারই নামান্তর। তাই ভোটারদের ধোঁকা দেওয়া হয়েছে বলে আজ অভিযোগ করেন ওই ব্যক্তি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy