মুম্বইয়ের ধারাবী বস্তি। ছবি: পিটিআই
কঠোর ভাবে লকডাউন পালন, সংক্রমিত মহল্লাগুলিকে গণ্ডিতে বেঁধে দেওয়া, নিরন্তর নজরদারি এবং বিপুল সংখ্যায় পরীক্ষা। এ ভাবেই সফল হয়েছে মুম্বইয়ের ধারাবী বস্তির ‘কন্টেনমেন্ট স্ট্র্যাটেজি’। জুন মাসের গোড়াতে সেখানে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা ছড়ালেও পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) প্রধান টেড্রোস অ্যাডহ্যানোম গ্যাব্রিয়েসাস করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় ধারাবী মডেলের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘‘মুম্বইয়ের মতো মহানগরীর ঘনবসতি এলাকায় কোভিড-১৯ মোকাবিলার ক্ষেত্রে এটি একটি নজির।’’
করোনা ঠেকানোর ক্ষেত্রে এশিয়ার বৃহত্তম বস্তি ধারাবীকে ‘দৃষ্টান্ত’ হিসেবে তুলে ধরেছেন হু প্রধান। শনিবার জেনেভায় ভার্চুয়াল প্রেস কনফারেন্সে তিনি বলেন, “স্পেন, ইটালি, দক্ষিণ কোরিয়া এমনকি ঘনবসতিপূর্ণ মুম্বইয়ের ধারাবী এলাকাও ধারাবাহিক লড়াইয়ের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। বিশ্বে একটি নজির স্থাপন করতে পেরেছে।’’
মাত্র আড়াই বর্গ কিলোমিটারের ধারাবী বস্তিতে ন’লক্ষেরও বেশি মানুষের বসবাস। জুন মাসের গোড়ায় ধরাবীতে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে শুরু করেছিল। কিন্তু এর পরেই সক্রিয় হয় মহারাষ্ট্র সরকার ও বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (বিএমসি)। কঠোর ভাবে লকডাউন পালনের মাধ্যমে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। পাশাপাশি, করোনা চেন ভাঙতে ‘টেস্টিং, ট্র্যাকিং, আইসোলেশন অ্যান্ড ট্রিটিং’ নীতি অনুসরণ করা হয়। বাড়ি বাড়ি মোবাইল ভ্যান পাঠিয়ে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে বিএমসি। হু প্রধানের দাবি এই নীতি অনুসরণ করেই মিলেছে সাফল্য।
আরও পড়ুন: ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ২৭১১৪, আট লক্ষ ছাড়াল দেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা
সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, সংক্রমণ কমার পাশাপাশি ধারাবীতে সুস্থ হয়ে ওঠা কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। জুন মাসের গোড়ায় সেখানে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪-এ পৌঁছে গিয়েছিল। জুনের শেষে তা নেমে এসেছে ১৮-য়। জুলাইয়ে তা আরও কমেছে। ১০ জুলাই নতুন ১২ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে ধারাবীতে। অথচ দেশে করোনা আক্রান্তের দৈনিক সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী। ধারাবীতে এখন ১৬৬ জন অ্যাক্টিভ-সহ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ২,৩৫৯। সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ১৯৫২ জন।
আরও পড়ুন: বিকাশ দুবের এনকাউন্টার ঘিরে যে আটটি প্রশ্ন উঠছে
ল্যফ হু প্রধানের মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন, মহারাষ্ট্রের পরিবেশমন্ত্রী আদিত্য ঠাকরে। শিবসেনা প্রধান তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের ছেলের টুইট, ‘‘করোনা মোকাবিলার যুদ্ধে এটা আমাদের বড় প্রাপ্তি। রাজ্য সরকার, আমাদের বিএমসি টিম, নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি এবং সর্বোপরি ধারাবীর বাসিন্দাদের ধন্যবাদ জানাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy