—ফাইল চিত্র।
বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে ‘লভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে আইন আনার প্রস্তুতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে সর্বত্র। তার মধ্যেই বিবাহের নামে ধর্মান্তরণের বিরুদ্ধে অধ্যাদেশ জারি করল উত্তরপ্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার। তাতে বলা হয়েছে, ছল-চাতুরি করে ধর্ম পরিবর্তন করানোর অভিযোগ প্রমাণ হলে সর্বোচ্চ ১০ বছর পর্যন্ত সাজা হবে।
মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই অধ্যাদেশ জারি করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যোগী নিজে এই বেআইনি ধর্মান্তরণ প্রতিরোধ অধ্যাদেশ ২০২০-এ অনুমোদন দেন বলে জানিয়েছেন উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। ওই অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, ধর্মান্তকরণের উদ্দেশে যদি কোনও মহিলাকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করা হয়, তা হলে আইনের চোখে সেই বিবাহ বৈধ নয়। তা বাতিল বলে ধরা হবে।
শুধু তাই নয়, নিজের ইচ্ছেয় যদি কোনও মহিলা ধর্ম পরিবর্তন করতে চান, সে ক্ষেত্রে বিয়ের ২ মাস আগে জেলাশাসকের কাছে সেই মর্মে আবেদন জমা দিতে হবে। অন্যথায় ৪ মাস থেকে ৩ বছর পর্যন্ত সাজা হতে পারে। সেই সঙ্গে জরিমানা দিতে হতে পারে কমপক্ষে ১০ হাজার টাকার।
আরও পড়ুন: জেলবন্দি ২৫ পাকিস্তানিকে ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে ফেরাল ভারত
জোর করে ধর্মান্তরণের ক্ষেত্রে ১ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত সাজা এবং ১৫ হাজার টাকা জরিমানার কথা বলা রয়েছে ওই অধ্যাদেশে। তবে তফসিলি জাতি ও তফসিলি উপজাতি সম্প্রদায়ের কোনও মহিলা এবং অপ্রাপ্তবয়স্কের ধর্ম পরিবর্তন করা হলে, সে ক্ষেত্রে ৩ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাবাস হতে পারে। জরিমানা দিতে হতে পারে ২৫ হাজার টাকা।
হিন্দু মেয়ে এবং মুসলিম ছেলের বিবাহকেই ‘লভ জিহাদ’ আখ্যা দিয়েছে গেরুয়া শিবির। তাদের অভিযোগ, ধর্ম পরিবর্তনের লক্ষ্যেই হিন্দু মেয়েদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম ছেলেরা। বিজেপি নেতাদের মধ্যে এ নিয়ে শুরু থেকে যোগী আদিত্যনাথই সবচেয়ে বেশি সরব ছিলেন। সম্প্রতি এই ‘লভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে আইন আনার চিন্তাভাবনা চলছে বলে জানায় মধ্যপ্রদেশ এবং হরিয়ানা সরকার। তার পর উত্তরপ্রদেশে এ নিয়ে তৎপরতা শুরু হয়ে যায়। রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে এ নিয়ে আইন মন্ত্রকের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়। শেষমেশ এ দিন অধ্যাদেশ জারি করে যোগী সরকার।
আরও পড়ুন: কোভিড রুখতে কেন্দ্রের সঙ্গেই কাজ করবে রাজ্য, মোদীকে বললেন মমতা, দরবার বকেয়া অর্থেরও
গেরুয়া শিবিরে ‘লভ জিহাদ’-এর বিরুদ্ধে সবচেয়ে বেশি সরব উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এর বিরুদ্ধে খুব শীঘ্র রাজ্যে আইন চালু হবে বলে শুক্রবারই জানিয়েছে সেখানকার স্বরাষ্ট্র দফতর। হরিয়ানা এবং মধ্যপ্রদেশ সরকারও একই পথে হাঁটছে। তবে হিন্দু মেয়ের সঙ্গে মুসলিম যুবকের বিয়েতেই যাবতীয় আপত্তি তাদের। মুসলিম মেয়ের হিন্দু পরিবারে বিয়েতে কোনও আপত্তি তোলেনি তারা।
তবে বিজেপি এবং গেরুয়া শিবিরের এই ‘লভ জিহাদ’ তত্ত্বের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন বিরোধী নেতারা। সাম্প্রদায়িক সংহতি নষ্ট করাই তাদের মূল লক্ষ্য বলে মন্তব্য করেছেন অশোক গহলৌতের মতো অনেকেই। সোমবার একটি মামলার রায়ে ইলাহাবাদ হাইকোর্টও জানিয়ে দেয়, নিজের পছন্দ মতো জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়া প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক অধিকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy