কুলদীপ সেঙ্গার। —ফাইল চিত্র।
উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডে নির্যাতিতার বাবাকে খুনের দায়ে উত্তরপ্রদেশের বহিষ্কৃত বিজেপি বিধায়ক কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারকে ১০ বছরের কারাবাস দিল দিল্লির একটি আদালত। কুলদীপ সিংহ সেঙ্গারের ভাই অতুল সেঙ্গারকেও একই সাজা শুনিয়েছেন জেলা আদালতের বিচারক ধর্মেশ শর্মা। নির্যাতিতার পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দিয়েছেন দুই ভাইকে।
নির্যাতিতার বাবাকে খুনের দায়ে বুধবারই কুলদীপ সেঙ্গার, তাঁর ভাই অতুল-সহ সাত জনকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। অনিচ্ছাকৃত হত্যা, অপরাধমূলক এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে ক্ষতিসাধন-সহ একাধিক ধারায় তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। শুক্রবার সাজা ঘোষণার দিন ছিল। সেখানেই কুলদীপ সেঙ্গারকে ১০ বছরের কারাবাস দেয় আদালত।
এ দিন সাজা শোনানোর সময় বিচারক ধর্মেশ শর্মা বলেন, ‘‘নির্যাতিতা বাবাকে হারিয়েছেন। বাড়ি ফেরারও উপায় নেই তাঁর। ওই পরিবারে আরও চারটি ছেলেমেয়ে রয়েছে, যাদের মধ্যে তিন জনই মেয়ে এবং তারা সকলেই অপ্রাপ্তবয়স্ক।’’
আরও পড়ুন: বেঙ্গালুরুতে করোনা আক্রান্ত গুগলের কর্মী, গ্রিস থেকে ফিরেই সংক্রমণ
যে ভাবে ষড়যন্ত্র কষে গোটা ঘটনা ঘটিয়েছেন সেঙ্গার, তাতে তাঁর প্রতি কোনওরকম নরম মনোভাব দেখানো চলে না বলেও জানিয়ে দেন বিচারক ধর্মেশ শর্মা। তিনি বলেন, ‘‘আইন যে লঙ্ঘিত হয়েছে, সে ব্যাপারে সন্দেহের অবকাশ নেই। জনপ্রতিনিধি হিসাবে আইন-কাননুন মেনে চলাই কর্তব্য ছিল সেঙ্গারের। কিন্তু যে ভাবে গোটা অপরাধ সংঘটিত করেছেন তিনি, তাতে তাঁর প্রতি নরম মনোভাব দেখানো যায় না।’’
সেঙ্গারের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে শামিল থাকায়, নির্যাতিতার বাবার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করায় এবং পুলিশি হেফাজতে তাঁর উপর অত্যাচার চালানোয়, অশোক সিংহ ভাদৌরিয়া এবং কেপি সিংহ নামের দুই পুলিশকর্মীকেও ১০ বছরের সাজা শুনিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন: ৪৫ মিনিট বন্ধ রাখায় ঘুরে দাঁড়াল শেয়ার বাজার
চাকরি দেওয়ার নাম করে বাড়িতে ডেকে ২০১৭-র ৪ জুন ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন কুলদীপ সেঙ্গার। পরে তাঁর শাগরেদরা মিলেও ফের এক বার ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে। সেই নিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান নির্যাতিতা। কিন্তু পুলিশ কুলদীপ সেঙ্গারের নামে অভিযোগ নিতে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ। এর পর সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে চিঠি লেখেন নির্যাতিতা।
তার পর বছর ঘুরে গেলেও কুলদীপ সেঙ্গারের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করেনি যোগী সরকার। বরং কুলদীপ সিংহের লোকজন নির্যাতিতার পরিবারকে নানা ভাবে হেনস্থা করতে শুরু করে। উন্নাও আদালতে মামলার শুনানি চলাকালীন নির্যাতিতার বাবাকে মারধর করেন অতুল সিংহ ও তাঁর লোকজন। সেই নিয়ে অভিযোগ জানাতে গেলে বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগে নির্যাতিতার বাবাকেই গ্রেফতার করে পুলিশ।
এমন পরিস্থিতিতে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল যোগী আদিত্যনাথের বাসভবনের সামনে ধর্নায় বসেন নির্যাতিতা ও তাঁর পরিবার। সেখানে গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন নির্যাতিতা। এর পরেই ৯ এপ্রিল পুলিশি হেফাজতে নির্যাতিতার বাবার মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তাঁর রক্তে বিষক্রিয়া এবং কোলনে ফুটো হয়ে যাওয়ার উল্লেখ ছিল। তাঁর শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেও জানা যায়। সেই ঘটনাতেই এ দিন সাজা ঘোষণা হল সেঙ্গারের। নির্যাতিতাকে ধর্ষণের দায়ে গতবছর তাঁকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে দিল্লির তিসহাজারি কোর্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy