মধ্যস্থতা বিতর্কে সংসদে বিবৃতি বিদেশমন্ত্রীর। ছবি: পিটিআই
ট্রাম্পের কাশ্মীর মধ্যস্থতা বিতর্ক নিয়ে সোমবার তোলপাড় হল সংসদ। বিরোধীদের চাপে পড়ে বিবৃতিও দেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। তিনি রাজ্যসভায় বলেন, ‘‘মোদী ট্রাম্পকে কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার কথা কখনই বলেননি।’’ কিন্তু, তাতে শান্ত হয়নি বিরোধীরা। মার্কিন প্রেসিডেন্টের মন্তব্য নিয়ে এ বার প্রধানমন্ত্রীকে টার্গেট করেছে তারা। দাবি করা হয়েছে তাঁর বিবৃতিও।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে বৈঠক করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসে সেই বৈঠকে স্বাভাবিক ভাবেই উঠে আসে কাশ্মীর প্রসঙ্গ। ওভাল অফিসে ইমরানের পাশে বসেই ট্রাম্প মধ্যস্থতার কথা তোলেন। পাক প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি দাবি করেন, ‘‘জাপানের ওসাকায় জি-২০ সামিটে মোদীর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। তিনি জানতে চান, আমি মধ্যস্থতা করতে রাজি কি না। আমি প্রশ্ন করি, কোন বিষয়ে? তিনি বলেন, কাশ্মীর। কারণ, বিবাদটা অনেক দিন ধরে চলছে। আমি ওঁকে জানাই, মধ্যস্থতা করতে পারলে আমি খুশিই হব।’’ সোমবার ইমরান খানকে পাশে নিয়ে বিতর্কের শুরুটা করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিছুক্ষণের মধ্যেই তা ধাক্কা মেরেছিল দিল্লির রাজনীতিতে। মঙ্গলবার, সংসদ শুরু হতেই সেই ঝড়ের গতি যেন বেশ কয়েকগুণ বেড়ে গেল।
মোদী দেশের স্বার্থ বলি দিয়ে ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ করছেন বলে সোমবারই মন্তব্য করেন কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা। সোমবার,কংগ্রেসের তরফে এই মন্তব্য ছিল কার্যত বিরোধিতার ফুলকি মাত্র। মঙ্গলবার এ নিয়ে ঝড় বয়ে যায় সংসদের দুই কক্ষের অধিবেশনেই। লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি বলেন, ‘‘ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাই তাঁকেই বিষয়টি পরিষ্কার করতে হবে। ’’ প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে এসে বিবৃতি দেওয়ার দাবি করেন তিনি। একই পরিস্থিতি হয় রাজ্যসভারও। হইহট্টগোলে সাময়িক ভাবে মুলতুবি হয়ে যায় রাজ্যসভা। পরে অধিবেশন শুরু হলেও ওয়াকআউট করে বিরোধীরা। বিরোধীশূন্য অধিবেশনেই বিবৃতি দেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, ‘‘কাশ্মীর নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কেবলমাত্র দ্বিপাক্ষিক আলোচনাই হবে। ভারত বার বার এই কথাই বলে আসছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে কখনই এমন প্রস্তাব দেননি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তান কড়া পদক্ষেপ করলে তবেই আলোচনার রাস্তা খুলবে।’’ একইসঙ্গে শিমলা ও লাহৌর চুক্তির কথাও তুলে ধরেন বিদেশমন্ত্রী। বক্তৃতায় জয়শঙ্কর হাততালি কুড়োলেও এই বিতর্ক এখনই যে থামছে না, তা একরকম স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতিও দাবি করেছেন বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: অন্ধ্রপ্রদেশে এ বার বেসরকারি চাকরির ৭৫ শতাংশই ভূমিপুত্রদের জন্য
কাশ্মীর বিবাদকে ভারত বরাবরই দ্বিপাক্ষিক সমস্যা বলে মনে করে। ১৯৭২ সালের শিমলা চুক্তিতে কাশ্মীরকে দ্বিপাক্ষিক বিষয় বলেই মেনে নিয়েছিল ভারত ও পাকিস্তান। সেই চুক্তি এবং লাহৌর ঘোষণাপত্রই পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তি হওয়া উচিত বলে মনে করে ভারত। পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা ও বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইকের পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপড়েন তুঙ্গে। তার মধ্যেই নরেন্দ্র মোদীকে টেনে এনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবি ঘরোয়া রাজনীতিতে তুফান তুলেছে।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টে বিদ্রোহী বিধায়কদের মামলার শুনানি পিছিয়ে বুধবার, কর্নাটকে আজও আস্থা ভোট নিয়ে সংশয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy