এনসিবি আজ রিয়াকে গ্রেফতারের পর বিজেপি তথা এনডিএ জোট তাকে স্বাগত জানাল। ছবি: পিটিআই।
উদ্ধব ঠাকরে সরকারের মুম্বই পুলিশ বিহারের ভূমিপুত্র সুশান্ত সিংহ রাজপুতকে ‘ন্যায়’ দিতে পারেনি। মোদী সরকারের সংস্থা নারকোটিক্স কন্ট্রোল বুরো (এনসিবি) রিয়া চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করে সুশান্তকে ‘ন্যায়’ দেওয়ার পথ তৈরি করল। চুম্বকে বিজেপির বার্তা এটাই।
সুশান্তর ছবি নিয়ে বিহারে ইতিমধ্যেই প্রচারে নেমেছে বিজেপি। এনসিবি আজ রিয়াকে গ্রেফতারের পর বিজেপি তথা এনডিএ জোট তাকে স্বাগত জানাল। রিয়াকে গ্রেফতার করার পরে বিজেপি মুখপাত্র তথা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গৌরব ভাটিয়ার মন্তব্য, ‘‘মুম্বই পুলিশ ৬৫ দিন কোনও পদক্ষেপ করেনি। কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত শুরুর ১৯ দিনের মাথাতেই রিয়াকে গ্রেফতার করল।’’ এত দিন উদ্ধব সরকার রিয়াকে বাঁচানোর চেষ্টা করে সুশান্তের প্রতি অবিচার করছিল বলেও বিজেপি অভিযোগ তুলেছে।
বিজেপির এই অবস্থান দেখেই বিরোধী শিবির প্রশ্ন তুলছে, ‘জাস্টিস ফর সুশান্ত’-এর প্রচারে ধুয়ো দিতেই কি রিয়াকে গ্রেফতার করা জরুরি হয়ে পড়েছিল? সে কারণেই কি প্রথমে সিবিআই, তার পরে ইডি, শেষে এনসিবিকে মাঠে নামানো হয়েছে? প্রসঙ্গত এনসিবি-র শীর্ষ পদে রয়েছেন রাকেশ আস্থানা।
আরও পড়ুন: রিয়া চক্রবর্তীর গ্রেফতারির পরে কী বলছে ইন্ডাস্ট্রি?
আরও পড়ুন: বলিউডের ড্রাগস আসক্তির কাহিনি এ বার প্রকাশ্যে
কংগ্রেস, এনসিপি ও শিবসেনা নেতারা মনে করছেন, শুধু বিহারের ভোটে ফায়দা তোলা নয়। একই চালে উদ্ধব সরকারকেও কোণঠাসা করতে চাইছে বিজেপি। এনসিপি নেতা মজিদ মেমন বলেন, ‘‘এ তো রাজ্যের সঙ্গে কেন্দ্র প্রতিযোগিতা করছে। একের পর এক কেন্দ্রীয় সংস্থা তদন্ত করছে। প্রথমে সিবিআই সুশান্তের মৃত্যুতে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কি না, তার তদন্ত করল। তার পর ইডি সুশান্তের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগের তদন্ত করল। কিছু না পাওয়ায় শেষে এনসিবি-র মাদক মামলা।’’
বিহার বিজেপির মুখপাত্র নিখিল আনন্দের পাল্টা দাবি, রিয়ার বিরুদ্ধে ইডি-র তদন্তেও অনেক কেলেঙ্কারি বেরিয়ে আসবে। সিবিআই সুশান্তের মৃত্যুর রহস্য উদ্ধার করে তাঁকে ও তাঁর পরিবারকে ন্যায় পাইয়ে দেবে। এডিএ শরিক, লোক জনশক্তি পার্টির সভাপতি চিরাগ পাসোয়ানেরও মন্তব্য, ‘‘যাঁরা এতদিন রিয়ার পক্ষে ছিলেন, অভিনেত্রীর গ্রেফতারি তাঁদের মুখ বন্ধ করে দেবে।’’
বিজেপি-বিরোধী শিবিরের দাবি, বিচার এমনকি তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই রিয়াকে দোষী সাব্যস্ত করে ফেলার চেষ্টা চলছে। মেমনের যুক্তি, ‘‘রিয়ার গ্রেফতারি দেখে বিহারের মানুষ যদি মনে করেন, সুশান্ত বিচার পেলেন, সেটা ভুল হবে। কারণ, রিয়ার গ্রেফতারির সঙ্গে সুশান্তের মৃত্যুর সম্পর্ক টানা যায় না। এখনও এনসিবি অভিযোগ তোলেনি যে রিয়া সুশান্তকে এত ড্রাগ দিয়েছেন, যার ফলে অভিনেতার মৃত্যু হয়েছে।’’ বিরোধী শিবিরের প্রশ্ন, রিয়া ও সুশান্ত যখন ড্রাগ কিনছিলেন, তখন এনসিবি কী করছিল? মেমনের যুক্তি, বলিউডের অনেকেই নিয়মিত মাদক নিয়ে থাকেন। তা এনসিবি-র আধিকারিকদের অজানা নয়।
এ দিনই মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ জানান, কঙ্গনা রানাউতের বিরুদ্ধে মাদক কেনার অভিযোগের তদন্ত করবে মুম্বই পুলিশ। কঙ্গনা কয়েকদিন ধরে মুম্বই পুলিশ ও শিবসেনা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব। তারই জবাবে কঙ্গনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। তাৎপর্যপূর্ণ হল, দেশমুখ জানিয়েছেন, কঙ্গনার প্রাক্তন প্রেমিক অধ্যয়ন সুমন সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কঙ্গনা ড্রাগ নিতেন, তাঁকেও নিতে বাধ্য করতেন। অধ্যয়ন অভিনেতা শেখর সুমনের ছেলে। তাঁরাও বিহারের ভূমিপুত্র।
কংগ্রেস, বাম শিবির মনে করছে, অর্থনীতির সঙ্কট থেকে নজর ঘোরাতেই রিয়া-কঙ্গনাকে নিয়ে বিতর্ক জিইয়ে রাখতে চাইছে বিজেপি। গুজরাতের বিধায়ক জিগ্নেশ মেবাণী বলেন, ‘‘রিয়ার হোয়াটসঅ্যাপ, মোদীর ময়ূর, রামমন্দির— এর মধ্যে কোথাও ২৩.৯% সংখ্যাটা খুঁজলে মেলে না। বিজেপির উন্নয়নের মডেলের নমুনা হল, দেশের জিডিপি-র ২৩.৯% সঙ্কোচন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy