বিধায়কদের নিয়ে রায় সুপ্রিম কোর্টের
বৃহস্পতিবার আস্থা ভোটের মুখে কর্নাটকের কুমারস্বামী সরকার। তার আগে, বুধবার, সুপ্রিম কোর্টের ‘ভারসাম্যের রায়ে’ ঝুলে রইল কংগ্রেস ও জে়ডিএসের জোট সরকারের ভবিষ্যৎ। বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ইস্তফা মামলা নিয়ে বুধবার শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, কর্নাটকের বিদ্রোহী বিধায়কদের নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বিধানসভার অধ্যক্ষই। তবে একইসঙ্গে, ওই বিধায়কদের জোর করে আস্থা ভোটে হাজির করানো যাবে না বলেও জানিয়েছে আদালত।
গত দু’সপ্তাহে কংগ্রেস-জেডিএস জোটের ১৬ জন বিধায়ক ও ২ নির্দল বিধায়ক ইস্তফা দেন। এরপর, পদত্যাগ পত্র নিয়ে সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রেখেছেন কর্নাটকের স্পিকার, এই অভিযোগে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন ১৫ বিক্ষুব্ধ বিধায়ক। বুধবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ জানিয়ে দিল, ‘‘বিধায়কদের ইস্তফাপত্র গ্রহণ নিয়ে অধ্যক্ষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে না আদালত। এ নিয়ে স্পিকারই সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ তবে, আরও বলা হয়েছে, ‘‘বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের কোনও ভাবেই আস্থা ভোটে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করা যাবে না।’’ এই রায়ে সাংবিধানিক ভারসাম্য রক্ষার কথাও জানিয়েছে আদালত।
আদালতে কর্নাটক বিধানসভার অধ্যক্ষ কেআর রমেশকুমার বলেন, ‘‘বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের অনেকেরই বিধায়কপদ খারিজ হওয়ার মুখে। তাঁরা ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন কি না, সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।’’ তাঁদের ভয় দেখিয়ে দলত্যাগে বাধ্য করা হয়নি বলে এ দিন আদালতকে পাল্টা জানান বিক্ষুব্ধ বিধায়করা। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী রাজীব ধওয়ন বলেন, ‘‘মুম্বইয়ে যে বিধায়করা গিয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকেই মন্ত্রী হতে চান। এটা অধ্যক্ষ বনাম আদালতের লড়াই নয়। বরং, এটা বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রী হতে চান এমন একজন ব্যক্তির মধ্যে লড়াই।’’
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ে বহুতল ধসে মৃত বেড়ে ১৪, এখনও আটকে অনেকে
যাঁকে ঘিরে এত নাটক, সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর, সেই অধ্যক্ষ কে আর রমেশ কুমারের মন্তব্য, ‘‘সুপ্রিম কোর্ট আমার উপর বাড়তি দায়িত্ব দিয়েছে। আমি সংবিধান মেনেই তা পালন করব।’’ এই রায়ে অবশ্য দারুণ উৎসাহিত বিজেপি শিবির। কর্নাটকের বিজেপি সভাপতি বিএস ইয়েদুরাপ্পা বলেন, ‘‘এই রায়ে সংবিধান ও গণতন্ত্রের জয় হয়েছে। নৈতিক জয় হয়েছে পদত্যাগী বিধায়কদের।’’
সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পর, বিধায়কদের আস্থাভোটে হাজির থাকতে দল হুইপ জারি করলেও, তা আর কার্যকর হবে না। ইতিমধ্যেই আস্থাভোটে যোগ না দেওয়ার ঘোষণা করেছেন ১৪ জন বিদ্রোহী বিধায়ক। গত ৬ জুলাই ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে তাঁরা মুম্বইয়ের একটি হোটেলেই রয়েছেন। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর সুর চড়াচ্ছে বিজেপি। ইয়েদুরাপ্পার মন্তব্য, ‘‘কুমারস্বামী সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবারই তাঁর পদত্যাগ করা উচিত।’’
১৮ জন বিধায়ক আস্থাভোটে গরহাজির থাকলে, কংগ্রেস ও জেডিএসের আসন সংখ্যা ১১৮ থেকে ১০০-য় এসে ঠেকবে। তখন, ২২৪ আসনের বিধানসভায় ম্যাজিক ফিগার হবে ১০৫। অন্য দিকে, সরকার গড়ার মতো প্রয়োজনীয় সংখ্যা (১০৭ বিধায়ক) থাকবে বিজেপির হাতে।
বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের ইস্তফাপত্র গৃহীত হলে, ওই ১৬ জন বিধায়কের কেন্দ্র খালি হবে। ফলে, পুনর্নির্বাচন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়বে। অন্য দিকে, কুমারস্বামী আস্থা প্রমাণে ব্যর্থ হলে নতুন সরকার গঠনের দাবি জানাতে পারে বিজেপি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করে বিজেপি সরকার গঠন করলে ওই বিধায়করা মন্ত্রী হওয়ার সুযোগ পেতে পারেন। অর্থাৎ বিজেপি সরকার তাঁদের মন্ত্রী করতে পারে। কিন্তু, সেক্ষেত্রে ৬ মাসের মধ্যে উপনির্বাচনে তাঁদের জিতে আসতে হবে। হেরে গেলে অবশ্য আর মন্ত্রী থাকতে পারবেন না।
আরও পড়ুন: মেয়ে বলে গুরুত্বই দেননি বাবা: সাক্ষী
অবশ্য, এখনও লড়াই ছাড়তে নারাজ কংগ্রেস-জে়ডিএস জোট। শেষ মুহূর্তে পরিস্থিতির মোড় ঘোরানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন কংগ্রেসের ক্রাইসিস ম্যানেজার ডি কে শিবকুমার ও জোটের অন্যান্য নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy