শবরীমালা মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার মামলা বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট।
রায় পুনর্বিবেচনার পক্ষে প্রধান বিচারপতি-সহ তিন বিচারপতি। আর বিপক্ষে একই বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠদের রায় মেনে শবরীমালা মন্দিরে ঋতুযোগ্য মহিলাদের প্রবেশাধিকার সংক্রান্ত আইনি লড়াইয়ের নিষ্পত্তি আপাতত হল না সুপ্রিম কোর্টে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে কেরলের ওই মন্দিরে সব বয়সের মহিলাকে প্রবেশাধিকার দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় ঘোষণা করেছিল, তা পুনর্বিবেচনার আর্জিগুলির শুনানি হবে সাত বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চে। তেমনই নির্দেশ দিয়েছেন সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারপতিরা।
শুধু শবরীমালা নয়, মুসলিম মহিলাদের মসজিদ ও দরগায় প্রবেশ এবং অন্য সম্প্রদায়ের পুরুষকে বিয়ে-করা পার্সি মহিলাদের অগ্নি-মন্দিরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়েও বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র। রায়টি লিখেছেন প্রধান বিচারপতি নিজে। তবে তাঁরা আগের রায়ে স্থগিতাদেশ দেননি। ফলে আগামী ১৬ তারিখে শবরীমালা মন্দিরের দরজা খোলার পরে মহিলা ভক্তদের সেখানে পুজো দিতে বাধা নেই।
জমা পড়েছিল মোট ৬৫টি আর্জি। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য বিচারপতি আর এফ নরিম্যান এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় সেগুলি খারিজই করে দিয়েছেন। গত বছর কোর্টের রায়ের পরেও শবরীমালায় মহিলাদের প্রবেশ রুখতে পথে নেমেছিল বিজেপি-সহ বিভিন্ন গোষ্ঠী। দু’জনের রায়ে বিচারপতি নরিম্যান বলেছেন, ‘‘আমাদের কাছে পবিত্র গ্রন্থ ভারতের সংবিধান। সে জন্য আদালতের রায় সকলকেই মানতে হবে। রায় লঙ্ঘন করার সঙ্ঘবদ্ধ চেষ্টা হলে কড়া হাতে রুখতে হবে।’’ শবরীমালায় সব বয়সের মহিলার প্রবেশের নির্দেশ যে মেনে চলতে হবেই, তা মনে করিয়ে দিয়ে দুই বিচারপতি বলেছেন, এখানে রাজ্যের নিজস্ব ইচ্ছা-অনিচ্ছার প্রশ্ন নেই। প্রসঙ্গত, গত বছর রায় দেওয়ার সময়েও ঐকমত্য হয়নি বেঞ্চে। ভিন্নমত হয়েছিলেন এক বিচারপতি।
আরও পডু়ন: এ তো ‘রাজনৈতিক বিচার’, হতাশ বিন্দুরা
আরও পড়ুন: নির্দেশ নয়, তবে হতেই পারে তদন্ত, সুপ্রিম কোর্টের রাফাল-রায়ে চাঙ্গা দু’পক্ষই
বিচারপতি নরিম্যান এবং বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের মতে, শবরীমালা মামলার সময়ে মুসলিম এবং পার্সি মহিলাদের ধর্মাচরণ সংক্রান্ত কোনও আর্জি এই আদালতে আসেনি। কাজেই পুনর্বিবেচনার আর্জিগুলি ঋতুযোগ্য মহিলাদের শবরীমালায় প্রবেশের বিষয়টিতেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু প্রধান বিচারপতি-সহ তিন বিচারপতি মনে করছেন, বিষয়টি আরও ব্যাপ্ত। তাঁদের বক্তব্য, ধর্মাচরণ নিয়ে বারবার মাথাচাড়া দেওয়া প্রশ্নগুলির নিষ্পত্তি ঘটাবে বৃহত্তর বেঞ্চ। ধর্মাচরণের স্বাধীনতার সঙ্গে মৌলিক অধিকার, বিশেষত সাম্যের অধিকারের দ্বন্দ্বের মতো মোট সাতটি বিষয়ের প্রশ্ন সেই বেঞ্চের কাছে রেখেছেন তাঁরা। কোনও ধর্মাচরণের বিষয়ে খোঁজখবরের এক্তিয়ার নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। শবরীমালা অ্যাকশন কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক এস জে আর কুমার আদালতের রায়ে ‘বিরাট জয়’ দেখছেন। মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশের বাধা দূর করতে গত বছরেই সক্রিয় হয়েছিল পিনারাই বিজয়নের প্রশাসন। আজ কেরল সরকার জানিয়েছে, রায় নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি থাকায় আইনি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবে তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy