ফাইল চিত্র।
রাহুল গাঁধীর দিকে সরাসরি আঙুল না তুললেও, গুলাম নবি আজাদ-কপিল সিব্বলের মতো নেতারা এত দিন ঠারে ঠারে তাঁর ‘এই আছি, এই নেই’ নীতি নিয়েই প্রশ্ন তুলছিলেন। তাঁদের দাবি ছিল, কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাকে সর্ব ক্ষণ সক্রিয় থাকতে হবে।
এ বার কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ নেতাদের মনের কথাই খোলসা করে বলে দিলেন এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পওয়ার। তাঁর মতে, রাহুলের মধ্যে ‘ধারাবাহিকতার অভাব’ রয়েছে। পুণেতে এক অনুষ্ঠানে শরদ পওয়ারকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, দেশ কি রাহুল গাঁধীকে নেতা হিসেবে মেনে নিতে তৈরি? পওয়ার উত্তর দেন, “এ বিষয়ে অনেকের মনেই প্রশ্ন রয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে।”
পওয়ার আগেও বলেছেন, রাহুলকে মাঠে নামতে হবে। গোটা দেশ সফর করতে হবে। দলের সকলের সঙ্গে কথা বলতে হবে। সবাইকে সঙ্গে নিতে হবে। কিন্তু কিছুদিনের জন্য সক্রিয় হয়েই রাহুল ফের উধাও হয়ে যান বলে কংগ্রেসের নেতাদের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। পওয়ার সেই ‘ধারাবাহিকতার অভাব’ নিয়ে প্রশ্ন তোলায় কংগ্রেস নেতারা বলছেন, পওয়ার কংগ্রেসকে ভিতর থেকে চেনেন। তিনি ঠিকই বলেছেন। শুধু রাহুল নয়। এখন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার মধ্যেও একই অভাব দেখা যাচ্ছে।
রাহুল-প্রিয়ঙ্কা এক সঙ্গে হাথরসে দলিত নির্যাতিতা তরুণীর বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে রাহুল বা প্রিয়ঙ্কা কাউকেই মাঠে নামতে দেখা যায়নি। রাহুল বিহারে কয়েক বার ভোটপ্রচারে গিয়েছিলেন। প্রিয়ঙ্কা বিহার তো দূর, তাঁর দায়িত্বে থাকা উত্তরপ্রদেশের উপনির্বাচনেও যাননি। গত বছরের ডিসেম্বরের পর থেকেই তাঁকে সে ভাবে উত্তরপ্রদেশে দেখা যায়নি। বিহার ভোটে কংগ্রেসের খারাপ ফল বেশ ক’টি রাজ্য হয়ে হায়দরাবাদের পুরভোটেও অব্যাহত রয়েছে। এখানে দেড়শো আসনের মধ্যে বড়জোর ২টি আসন পেতে পারে কংগ্রেস। দায় স্বীকার করে তেলঙ্গানা প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি এন উত্তমকুমার রেড্ডি ইস্তফা দেওয়ার পরে রাহুল ঘনিষ্ট নেতা, তামিলনাড়ুর দায়িত্বপ্রাপ্ত মানিকম টেগোরকে সে রাজ্যে পাঠানো হচ্ছে।
শুক্রবার প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশ রাজ্য কংগ্রেসের তফসিলি জাতি শাখার সম্মেলনে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন। গত অক্টোবরে ওই দলিত শাখার সভাপতি অলোক কুমারকে উত্তরপ্রদেশ পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তাঁর মুক্তির পরেই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রিয়ঙ্কা বলেন, সামাজিক ন্যায়ের স্বার্থে, দলিতদের বিরুদ্ধে অপরাধ রুখতে প্রতিটি গ্রামে দলিত শাখায় দলের নতুন নেতাকর্মী তৈরি
করতে হবে।
প্রিয়ঙ্কা এই সংগঠন তৈরির উপরে জোর দিলেও কংগ্রেস নেতারা বলছেন, তাঁর পক্ষে দিল্লিতে বসে উত্তরপ্রদেশে দল চালানো সম্ভব নয়। প্রিয়ঙ্কা এর আগে লখনউতে গিয়ে থাকবেন বলে শোনা গিয়েছিল। কিন্তু লোদী রোডের সরকারি বাংলো ছাড়ার পরে এখন তিনি গুরুগ্রামের ফ্ল্যাটে থাকেন। এর পর দিল্লির খান মার্কেটের সামনে সুজন সিংহ পার্কে বাড়ি ভাড়া নেবেন। প্রিয়ঙ্কার ঘনিষ্ঠ শিবিরের অবশ্য দাবি, তাঁর জন্য লখনউ ও প্রয়াগরাজ (ইলাহাবাদ)-এ বাড়ির খোঁজ চলছে। জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসেই প্রিয়ঙ্কা উত্তরপ্রদেশে যাবেন।
আর রাহুল? তাঁর ঘনিষ্ঠ শিবির বলছে, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে কংগ্রেস সভাপতি পদে নির্বাচনের পরেই রাহুল পুরোপুরি সক্রিয় হবেন। রাহুল নিজেই কংগ্রেসের পথে বাধা হয়ে উঠছেন কি না সেই প্রশ্নে পওয়ার বলেন, ‘‘যে কোনও পার্টির নেতৃত্ব দলের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতার উপরে নির্ভর করে। আমার সঙ্গে সনিয়া গাঁধী ও পরিবারের মতভেদ ছিল। কিন্তু এখনও কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের মধ্যে গাঁধী-নেহরু পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা-ভালবাসা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy