Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘মনের কথা’ আর বললেন না গগৈ

অযোধ্যা জমি মামলার রায় দিয়েছেন সবে গত কাল। জেড প্লাস পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে নিরাপত্তা। পরের দিনই সোজা নিজের ডিব্রুগড়ের বাড়িতে এলেন প্রধান বিচারপতি।

 সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। ছবি: পিটিআই।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৫৫
Share: Save:

গত সপ্তাহে মনের অনেক কথা বলেছিলেন। তুলেছিলেন বেশ কিছু সংবেদনশীল বিষয়। অবসরের দোরগোড়ায় এসে আজ আর তেমন কিছু বললেন না প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। অবসরের পরে নিজের রাজ্য অসমেই থিতু হতে চান তিনি। অবসর জীবনের জন্য সকলের শুভেচ্ছা চাইলেন তিনি।

অযোধ্যা জমি মামলার রায় দিয়েছেন সবে গত কাল। জেড প্লাস পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে নিরাপত্তা। পরের দিনই সোজা নিজের ডিব্রুগড়ের বাড়িতে এলেন প্রধান বিচারপতি। বিকেলে আসেন গুয়াহাটি। ‘কোর্টস অব ইন্ডিয়া: পাস্ট টু প্রেজেন্ট’ বইয়ের অসমিয়া অনুবাদ প্রকাশের অনুষ্ঠানে। সেখানে বললেন, ‘‘এটাই আমার শেষ জনসভা। গত সপ্তাহে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল সেন্টারে বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে মনের অনেক কথা বলেছি। আজ কোনও সংবেদনশীল বিষয় নিয়ে বলব না।’’ নিজের ভূমিকা সম্পর্কে বিচারপতি গগৈয়ের মন্তব্য, ‘‘আমরা বিচারপতি। রায় দেওয়াই আমাদের কাজ। তার মাধ্যমে আমরা তেমন কোনও বড় অবদান রাখি না। কিন্তু আদালতের চার দেওয়াল, থামগুলোর আনাচে-কানাচে রয়েছে অনেক ইতিহাস। সেই ঐতিহাসিক দলিলগুলিকে এমন মনোজ্ঞ ভাবে ও বিশদে লিপিবদ্ধ করাই প্রকৃত অবদান। পরের ইনিংসের জন্য সকলের শুভেচ্ছা চাইছি।’’ এই অনুষ্ঠানে ‘আর্কিটেকচার অব জাস্টিস’ ও 'গৌহাটি হাইকোর্ট— হিস্ট্রি অ্যান্ড হেরিটেজ’ বইয়ের বিভিন্ন অংশ পড়ে শোনান প্রধান বিচারপতি।

পরবর্তী প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবদের সম্পাদনাতেই ইংরেজিতে ‘কোর্টস অব ইন্ডিয়া: পাস্ট টু প্রেজেন্ট’ বইটি প্রকাশিত হয়েছিল। মঞ্চ উপস্থিত বিচারপতি বোবদে বললেন, ‘‘গগৈয়ের নেতৃত্ব দানের ক্ষমতাকে শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর চরিত্র এতই দৃঢ় ও নিরপেক্ষ যে, তাঁর সামনে কেউ অন্যায় করতে পারে না। তিনি পক্ষপাত দেখিয়েছেন শুধু একটি
ক্ষেত্রে। তা হল অসম নিয়ে। বাবার ভবিষ্যদ্বাণী সফল করা ছেলে অবসরের পরে ঘরের মাটিতেই থিতু হতে চান।’’ তিন দশক আগের কথা। কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কেশব গগৈকে গৌহাটি হাইকোর্টে বসে সহকর্মী কংগ্রেস নেতা আবদুল মুহিব মজুমদার জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ছেলে কবে রাজনীতিতে যোগ দেবে? ইতিহাস নিয়ে পাশ করে ছেলে তখন আইন পড়ছে। বাবা জানান, ছেলে মুখ্যমন্ত্রী হবে না, রাজনীতিও করবে না। দেশের প্রধান বিচারপতি হতে পারে সে। সেটাই হয়েছে। রবিবার সেই পদ থেকে অবসর নেবেন ছেলে রঞ্জন।

আরও পড়ুন: শবরীমালায় কী হবে, প্রশ্ন

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অরুণ মিশ্রর মতে, ‘‘অযোধ্যা নিয়ে এত কম সময়ে সর্বজনগ্রাহ্য সহস্রাধিক পাতার রায়দান অবিশ্বাস্য কাজ ছিল। দেশ তাঁকে চিরকাল মনে রাখবে।’’ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি শ্রীপতি রবীন্দ্র ভাট ও বিচারপতি হৃষিকেশ রায় বলেন, ‘‘এত দীর্ঘ, বিতর্কিত, জটিল বিচার প্রক্রিয়ার রায় দানের ক্ষেত্রে গোটা আদালত এক মতে, এক সুরে কথা বলছে— এই ঘটনা ভারতের আইন ব্যবস্থায় নজিরবিহীন। রায়ের কৃতিত্বকে কুর্নিশ জানাতে প্রেক্ষাগৃহে থাকা সকলে দীর্ঘ করতালি দিয়ে গগৈকে অভিনন্দন জানান। মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বলেন, ‘‘অযোধ্যার ঐতিহাসিক রায়ের জন্য গোটা দেশ তো বটেই আমরা অসমীয়রা আরও গর্বিত।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Case Ranjan Gogoi CJI Supreme Court
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE