Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
President

খোদ রাষ্ট্রপতি সরব চিনের সমালোচনায় 

সেনা ও বিদেশ মন্ত্রক পর্যায়ে দু’দেশের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হলেও লাদাখ সীমান্তে অনুপ্রবেশের প্রায় একশো দিন পরেও সেনা সরাতে রাজি নয় চিন।

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০২০ ০৪:৪৫
Share: Save:

নাম না-করে চিনের সম্প্রসারণবাদী রাজনীতির সমালোচনায় সরব হলেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। স্বাধীনতা দিবসের আগের সন্ধ্যায় দেশবাসীর উদ্দেশে বার্তায় রাষ্ট্রপতি বললেন, “বর্তমান সময়ে গোটা পৃথিবী যখন বিশ্বকে একটিই পরিবার মনে করছে, তখন আমাদের প্রতিবেশী দেশ তাদের সম্প্রাসরণমূলক নীতিকে কৌশলে বাস্তবায়িত করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে।”

সুর চড়িয়েছেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহও। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক-সন্ধ্যায় সশস্ত্রবাহিনীগুলির উদ্দেশে এক বার্তায় রাজনাথ বলেছেন, “আপনারা মোতায়েন থাকলে, যারাই ভারতের এক ইঞ্চি জমি দখল করুক, তাদের গুরুতর ফল ভুগতে হবে। এবং তারা ভুগতে থাকবে। ইতিহাস এর সাক্ষী রয়েছে।” রাজনাথ কোনও দেশের নাম করেননি। তবে রাজধানীতে দু’টি জল্পনা। এক, ভুগতে থাকবে বলতে কি আগামী দিনে চিনের বিরুদ্ধে আরও অর্থনৈতিক পদক্ষেপেরই ইঙ্গিত রয়েছে রাজনাথের ঘোষণায়? দুই, এই বার্তা কি শুধুই চিনকে? না কি পাকিস্তানকেও? কারণ, নরেন্দ্র মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ খাস সংসদে দাঁড়িয়ে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরকে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে উল্লেখ করেছেন সাম্প্রতিক অতীতে। কাশ্মীরে পাক দখলদারির পরে দেশটাই দু’টুকরো হয়ে বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে। রাজনাথ কি সেই ইতিহাসই মনে করিয়ে দিয়েছেন ভুগতে থাকা হিসেবে?

রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ অবশ্য সুনির্দিষ্ট ভাবে চিনকেই নিশানা করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “গোটা বিশ্ব যখন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সমস্যা (কোভিড-১৯ অতিমারি)-র বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াইয়ে শামিল হয়েছে, তখন আমাদের প্রতিবেশী দেশ তাদের সম্প্রসারণমূলক পদক্ষেপকে বাস্তবায়িত করার দুঃসাহস দেখাচ্ছে।” তিন সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসেবে রাষ্ট্রপতি এ দিন গত জুন মাসে গালওয়ানে সীমান্ত-সংঘর্ষে নিহত ভারতীয় জওয়ানদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানান। তাঁর কথায়, “সীমান্ত সুরক্ষার কর্তব্য করতে বীর সেনারা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। গোটা দেশ গালওয়ানের শহিদদের প্রণাম জানাচ্ছে। মৃত্যুবরণের মাধ্যমে তাঁরা বুঝিয়ে দিয়েছেন, ভারত শান্তির প্রতি আস্থাশীল। কিন্তু কেউ অশান্তি বাধানোর চেষ্টা করলে, পাল্টা জবাব দিতে পিছপা হয় না এই দেশ।”

আরও পড়ুন: অমিতের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ

সেনা ও বিদেশ মন্ত্রক পর্যায়ে দু’দেশের মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হলেও লাদাখ সীমান্তে অনুপ্রবেশের প্রায় একশো দিন পরেও সেনা সরাতে রাজি নয় চিন। বেজিংয়ের এই মনোভাব নয়াদিল্লি যে আদৌও ভাল ভাবে নিচ্ছে না, সে দেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম মিশ্রি গত কালও তা চিনের কমিউনিস্ট পার্টির পদস্থ কর্তার সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট জানিয়েছেন। বিক্রম আজ দেখা করেন চিনের সেন্ট্রাল মিলিটারি কমিশনার ডিরেক্টর সি গুহোই-এর সঙ্গে। পূর্ব লাদাখে কী ভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে চিন সেনা প্রবেশ করে এসেছে, তা নিয়ে ভারতের অবস্থান জানানো হয় এই সেনাকর্তাকে।

ভারত গোড়া থেকেই বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে মেটানোর চেষ্টা করলেও, চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপত্রে কাল উস্কানি দিয়ে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনা একতরফা সীমান্ত পেরিয়েছিল। তাই ভারত যে দাবি করছে, তা ভিত্তিহীন। আসলে কাদের সেনা সীমান্ত পেরিয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখুক ভারত। যারা সংঘর্ষের পিছনে ছিল, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়ারও দাবি করা হয়েছে ওই মুখপত্রে। বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে ভারত যেন তাদের সেনাকে অনুশাসনে রাখে এবং প্ররোচনা দেওয়া বন্ধ করে। মুখপত্রে বলা হয়েছে, ভারতীয় সেনার ওই অভিযানে দু’দেশের সীমান্ত-চুক্তি লঙ্ঘিত হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দু’দেশের সম্পর্কেও।

অন্য বিষয়গুলি:

President Ram Nath Kovind China
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE