প্রতিবাদ: গাজিপুর সীমানায় কৃষকদের বিক্ষোভ। বৃহস্পতিবার। পিটিআই
অমিত শাহ যাবেন দক্ষিণ দিল্লির মেহরৌলির কিসানগড় গোশালায়। দিল্লির নজফগড়ের কাকরোলায় যাবেন রাজনাথ সিংহ।
শুধু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা প্রতিরক্ষামন্ত্রী নন, বিজেপির সমস্ত সাংসদ, বিধায়ক, জনপ্রতিনিধিদের কাছে নির্দেশ গিয়েছে, বড়দিনে কৃষকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তৃতা শুনতে কোনও না-কোনও জমায়েতে উপস্থিত থাকতে হবে। প্রতিটি ব্লকে কৃষক, আমজনতাকে জমা করে বড় স্ক্রিন লাগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা প্রচারের পরিকল্পনা হয়েছে। বিজেপির লক্ষ্য, এক কোটি মানুষের জমায়েত।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার আগে বৃহস্পতিবার ফের কৃষি মন্ত্রকের যুগ্মসচিব বিবেক আগরওয়াল কৃষক সংগঠনগুলিকে চিঠি পাঠিয়ে জানতে চেয়েছেন, তাঁরা কবে আলোচনায় বসতে চান। কিন্তু তিন কৃষি আইন প্রত্যাহার ও ফসলের দামের আইনি গ্যারান্টির মতো কৃষকদের দাবি নিয়ে ওই চিঠিতে নতুন কোনও প্রস্তাব নেই।
আরও পড়ুন: এগ্রি গোল্ড দুর্নীতিতে ৪ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ইডি-র
তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে দিল্লির সীমানায় কৃষকদের অবরোধ এক মাস হতে চলেছে। কংগ্রেস-সহ বিরোধীদের অভিযোগ, চাষির স্বার্থে নয়, অম্বানী-আদানির মতো শিল্পগোষ্ঠীর স্বার্থে কৃষি-আইন আনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতাকে হাতিয়ার করে বিজেপি পাল্টা প্রচারে নামতে চাইছে দেখে আজ কংগ্রেস নেতারা প্রশ্ন তুলেছেন, মোদী সরকার কৃষকদের সঙ্গে কথা না-বলে বিরোধী দলের মতো আচরণ করছে কেন? রাহুল গাঁধী, শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদব-সহ এগারোটি বিরোধী দলের নেতা আজ বিবৃতি দিয়ে দাবি তুলেছেন, বিরোধীরা কৃষকদের মিথ্যে বোঝাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী ‘ভিত্তিহীন অভিযোগ’ করা বন্ধ করুন।
২৫ ডিসেম্বর প্রয়াত অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিন। মোদী সরকার সাধারণত এই দিনটি ‘সুশাসন দিবস’ হিসেবে পালন করে। কৃষি মন্ত্রকের পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই দিনেই ৯ কোটি কৃষক পরিবারের অ্যাকাউন্টে পিএম-কিসান প্রকল্পের এক কিস্তির ২ হাজার টাকা জমা হবে। তার পরে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন রাজ্যের চাষিদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা বলবেন। বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডা দলের সাংসদ-বিধায়ক, রাজ্য সভাপতিদের নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতিটি ব্লক উন্নয়ন কেন্দ্রে বড় স্ক্রিনের ব্যবস্থা করে প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা শোনার জন্য যত বেশি সম্ভব লোক জোগাড় করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার এক ঘণ্টা আগে থেকেই মোদী সরকারের বিভিন্ন কৃষক দরদি পদক্ষেপ নিয়ে প্রচার শুরু করতে হবে। স্থানীয় ভাষায় পুস্তিকা ছাপিয়েও বিলি করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ব্রিটেনের পরে দক্ষিণ আফ্রিকার স্ট্রেন নিয়ে আতঙ্ক
বিজেপি সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ১৯ হাজার জমায়েত স্থল ঠিক হয়ে গিয়েছে। শুধু উত্তরপ্রদেশেই ৩ হাজার জায়গায় জমায়েত হবে। বিজেপি নেতাদের দাবি, এই জমায়েত ও কৃষকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাপচারিতা থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাবে, দিল্লির সীমানায় আন্দোলন চললেও দেশের কৃষকেরা আসলে মোদী সরকারের সঙ্গেই রয়েছে। বৃহস্পতিবার কৃষিমন্ত্রী নরেন্দ্র সিংহ তোমর কিসান সেনা নামে একটি সংগঠনের জনা কুড়ি সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, সেখানে তোমর বলেন, আন্দোলন এ রকমই চলবে। তা সামলেও নেওয়া হবে।
কিসান সেনা-র ব্যানারে কৃষি আইনের সমর্থনে বিজেপি কর্মীরা রাস্তায় নামবেন বলে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলি মনে করছে। মোদী সরকার লোক দেখানোর জন্য বার বার কৃষক নেতাদের আলোচনায় ডাকছে। কিন্তু আসলে চাষিদের মধ্যে বিভাজন তৈরির চেষ্টা করছে। এক কৃষক নেতা বলেন, হরিয়ানার কানওয়াল সিংহ চৌহানের নেতৃত্বে যে ২০ জন তোমরের সঙ্গে দেখা করেন, তার মধ্যে ১৭ জনই বিজেপির নেতা-কর্মী। বাকি তিন জন হরিয়ানার পুরভোটে টিকিটপ্রার্থী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy