‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র
অযোধ্যা শুনানি শেষ। আগামী মাসেই রায়। তার আগে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে সেই প্রসঙ্গ টেনে সম্প্রীতি ও ঐক্যের বার্তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের উল্লেখ করে সেই সময় দেশবাসী যে ভাবে ঐক্যের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন, তার প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে সেই সময় একাধিক স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ভূমিকার সমালোচনাও করেছেন তিনি। পাশাপাশি ইন্দিরা গাঁধীকে শ্রদ্ধা, সর্দার বল্লভ ভাই পটেলের জন্মদিনে ‘রান ফর ইউনিটি’তে যোগদানের আহ্বানও জানিয়েছেন মোদী। দেশবাসীকে জানিয়েছেন দীপাবলির শুভেচ্ছা।
অযোধ্যায় বিতর্কিত জমি মামলা দীর্ঘদিন ধরেই সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। কয়েক মাস আগেই মধ্যস্থতাকারী নিয়োগ করেছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু তাঁরাও বিষয়টির সুষ্ঠু মীমাংসা করতে পারেননি। তার পরে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ অযোধ্যা মামলা প্রতিদিন শুনানির নির্দেশ দেন। সেই মতো শুনানি শেষও হয়েছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি সুপ্রিম কোর্ট রায় দেবে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
প্রতি মাসের শেষ রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে দেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, উৎসব-অনুষ্ঠানে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা অভিনন্দন জানান। অক্টোবরের ‘মন কি বাত’-এ তাই উঠে এল অযোধ্যা মামলার কথা। ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে এলাহাবাদ হাইকোর্ট অযোধ্যার বিতর্কিত জমিকে তিন ভাগে ভাগ করার রায় দিয়েছিল। সেই সময় দেশবাসী যে ভাবে ঐক্য ও সম্প্রীতির নজির তৈরি করেছিলেন, তার যেমন প্রশংসা করেছেন মোদী, তেমনই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর সমালোচনা করতেও ছাড়েননি।
এ দিন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘২০১০ সালে যখন এলাহাবাদ হাইকোর্ট রাম জন্মভূমি নিয়ে রায় শুনিয়েছিল, সেই দিনগুলিকে এক বার স্মরণ করুন। রায়ের আগে কোথা কোথা থেকে লোক চলে এসেছিল। বিভিন্ন গোষ্ঠী নিজেদের স্বার্থসিদ্ধার জন্য উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছিল। পরিবেশ উত্তপ্ত করার জন্য কি কি ধরনের ভাষা বলা হচ্ছিল। কিছু বাক্যবাগীশ কী কী সব দায়িত্বজ্ঞানহীন কথা বলেছিল, আমাদের সব মনে আছে। এটা সাত থেকে ১০ দিন চলেছিল। কিন্তু যেই রায় হল, এক আশ্চর্য ও আনন্দদায়ক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সরকার, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, বিদ্বজ্জন, বিভিন্ন সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, সাধু সন্তরা অত্যন্ত সংযমী, সাবধানী ও পরিণত বক্তব্য পেশ করেছিলেন। ...আদালতের রায়কে অত্যন্ত গৌরবপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন দেশবাসী এবং কোথাও উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হতে দেননি। এটা আমাদের শক্তি দেয়।’’
আরও পড়ুন: নির্জোট সম্মেলনেও কাশ্মীর কাঁদুনি পাকিস্তানের, সন্ত্রাসের ভরকেন্দ্র পাকিস্তান, পাল্টা তোপ ভারতের
দেশবাসীকে দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে এ দিনের মন কি বাত শুরু করেন প্রধানমন্ত্র। ‘আলো, সদ্ভাবনা প্রকাশিত হোক, শত্রুভাব দূর হোক— এই দীপাবলিতে এটাই হোক প্রার্থনা, বলেন মোদী। আগামী ৩১ অক্টোবর সর্দার বল্লভভাই পটেলের জন্মজয়ন্তী। লৌহমানব দেশের জন্য কি কি করেছেন, তার বেশ কিছু উদাহরণ দিয়েছেন। এই দিনটিতে ‘রান ফর ইউনিটি’র আয়োজন করা হয়। তাতে সব শ্রেণির, সব প্রান্তের মানুষকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন মোদী।
ওই দিনই আবার ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুবার্ষিকী। সেই ঘটনা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এই দিনেই ইন্দিরা গাঁধীকে হত্যা করা হয়েছিল। দেশবাসীর মনে এক বিরাট অকস্মাৎ আঘাত লেগেছিল। আজ তাঁকেও আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।
আরও পড়ুন: হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিলেন খট্টর, উপমুখ্যমন্ত্রী হলেন দুষ্মন্ত
প্রতিটি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানেই মোদীর বক্তব্যে ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ আলাদা গুরুত্ব পায়। সম্প্রতি সিয়াচেনে এই অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। সেটা উল্লেখ করতে গিয়েই মোদী বলেন, ‘‘দেশের সবচেয়ে উঁচু যুদ্ধক্ষেত্র সিয়াচেন। তাপমাত্রা শূন্য থেকে ৫০-৬০ ডিগ্রি মাইনাসে চলে যায়। হাওয়ায় অক্সিজেন খুব কম থাকে। এই পরিবেশে শুধু সেখানে দিনের পর দিন ডিউটি করাই এক বিরাট যুদ্ধ। কিন্তু সেখানেও স্বচ্ছ ভারত অভিযান শুরু করেছে সেনা, তার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই।’’
সব শেষে ফের দেশবাসীকে দীপাবলির আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা, স্থানীয় জিনিসপত্র কিনুন। দেখুন মহাত্মা গাঁধীর স্বপ্ন সার্থক করতে আমরাও কত বড় ভূমিকা নিতে পারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy