মন্দিরের শিলান্যাসে সরযূ নদীর তীরে স্বর্ণযুগের সূচনা হল বলে দাবি প্রধানমন্ত্রীর।
সরয়ূ নদীর তীরে স্বর্ণযুগের সূচনা হল। অযোধ্যায় রামমন্দিরের শিলান্যাসর দিনটিকে এ ভাবেই ব্যাখ্যা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘‘বহু দিনের প্রতীক্ষা শেষ। এত দিন তাঁবুতে মাথা গুঁজে ছিলেন রামলালা। এ বার তাঁর জন্য সুবিশাল মন্দির নির্মিত হবে। বহু শতক ধরে যে ভাঙা-গড়ার খেলা চলে আসছে, আজ রামজন্মভূমি তা থেকে মুক্ত হল। সরযূ নদীর তীরে সূচনা হল স্বর্ণযুগের।’’
২৯ বছর পর এ দিন অযোধ্যায় পা রাখেন নরেন্দ্র মোদী। রামমন্দিরের শিলান্যাসের দিনটিকে স্বাধীনতা দিবসের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, ‘‘সারা দেশ স্বাধীনতা সংগ্রামে যোগ দিয়েছিল। মন্দিরের জন্যও অনেকে বলিদান দিয়েছে। এত দিনে তাঁকে অপেক্ষা শেষ হল। ১৫ অগস্ট যেমন স্বাধীনতার প্রতীক। আজকের দিনটি তেমনই ত্যাগ, সঙ্কল্প ও সংঘর্ষের প্রতীক।’’
শুধু মাত্র ভারতেই নয়, গোটা পৃথিবীতে আজ রামের জয়ধ্বনি শোনা যাচ্ছে বলে দাবি করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘আজ গোটা দেশ রামময়, রোমাঞ্চিত। পৃথিবীর সর্বত্র রামের ধ্বনি শোনা যাচ্ছে। এই রামমন্দির আমাদের সংস্কৃতির আধুনিক প্রতীক। আমাদের রাষ্ট্রীয় ভাবনার প্রতীক। সারা পৃথিবীর মানুষ এখানে আসবেন। এই মন্দিরের মাধ্যমে বর্তমানের সঙ্গে অতীতের যোগসূত্র স্থাপিত হবে।’’
রূপার ইটে শিলান্যাস মন্দিরের।
আরও পড়ুন: রূপার ইট দিয়ে রামমন্দিরের শিলান্যাস করলেন মোদী
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘রাম আমাদের মনে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছেন। সব কাজে রামই আমাদের প্রেরণা। আজ সারা দেশের মানুষ রামমন্দির নির্মাণে শরিক হয়েছেন। রামের চরিত্রের কেন্দ্রবিন্দু হল সত্যপালন। জীবনের এমন কোনও ক্ষেত্র নেই যেখানে রাম আমাদের কাছে প্রেরণা নন। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যই ভারতের বৈশিষ্ট। ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে তাই রামায়ণের ভিন্ন ভিন্ন গাথা রয়েছে। ভারতের বাইরেও বিভিন্ন দেশে রামায়ণ রয়েছে। সর্বত্রই রাম একই ভাবে পূজনীয়।’’
দেশের সংস্কৃতির সঙ্গে রাম এতটাই জড়িয়ে যে কোনও ভাবেই তাঁকে আলাদা করা সম্ভব নয় বলে এ দিন জানান মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘রাম আমাদের মনের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছেন উনি। প্রভুর কী অদ্ভূত শক্তি দেখুন, ইমারত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। কিন্তু তাতেও কিছু হয়নি। রামের অস্তিত্ব মিটিয়ে দেওয়ার সবরকম চেষ্টা হয়েছিল, কিন্তু রাম আমাদের মন জুড়ে রয়েছেন রাম। আমাদের সংস্কৃতির আধার তিনি।’’
আরও পড়ুন: ‘বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য’, অযোধ্যা নিয়ে উন্মাদনার মধ্যেই বার্তা মমতার
দেখুন ভূমিপূজা থেকে শিলান্যাসের গোটা অনুষ্ঠান।
সমস্ত দেশবাসীর সমর্থন ছিল বলেই রামমন্দিরের নির্মাণের পথ প্রশস্ত হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘স্বাধীনতা সংগ্রামে মহাত্মা গাঁধী যেমন দলিত এবং জনজাতি মানুষের সমর্থন পেয়েছিলে, একই ভাবে দেশের সমস্ত মানুষের সমর্থন ছিল বলেই রামমন্দির নির্মাণের কাজ শুরু করা গিয়েছে। প্রত্যেকেই রাম। প্রত্যেকের মধ্যেই রাম রয়েছেন।’
করোনা পরিস্থিতিতে রামমন্দিরের নির্মাণ ঘিরে সমালোচনার মুখে পড়েছে কেন্দ্র। তবে এ দিন অনুষ্ঠানস্থলে সামাজিক দূরত্ববিধি মেনেই অতিথিদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মাস্ক পরেই ভূমিপূজায় অংশ নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘করোনার জন্য এই অনুষ্ঠান অন্য ভাবে করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশের পরেই আমরা চিন্তা করেছিলাম। আমরা চেয়েছিলাম, সবাই যেন শান্তিতে অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy