Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
PM-CARES FUND

পাঁচ দিনে তিন হাজার কোটি পিএম কেয়ার্সে, কাদের টাকা, প্রশ্ন চিদম্বরমের

দু’লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে তহবিলটি খোলা হয়। পাঁচ দিনের মধ্যে দেশ-বিদেশ থেকে ৩ হাজার ৭৫ কোটি ৮৫ লক্ষ ৩২ হাজার ৪৫ টাকা জমা পড়ে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:১৩
Share: Save:

যাত্রা শুরু হয়েছিল মাত্র দু’লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে। কিন্তু দেশ-বিদেশ থেকে মাত্র পাঁচ দিনেই তাতে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি জমা পড়ে। তথ্য জানার আইনে এর আগে তথ্য দিতে অস্বীকার করলেও, অতিমারিতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য গঠিত ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিল নিয়ে এ বার এমনই তথ্য প্রকাশ করল প্রধানমন্ত্রীর দফতর

করোনা সঙ্কট সামাল দিতে চলতি বছরের ২৭ মার্চ ‘পিএম কেয়ার্স’ তহবিলটি গঠন করা হয়। তার পর ৩১ মার্চ পর্যন্ত তাতে কত টাকা জমা পড়ে, ‘পিএম কেয়ার্স’ ওয়েবসাইটে সম্প্রতি তার হিসাব প্রকাশ করেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।

তাতে দেখা গিয়েছে দু’লক্ষ ২৫ হাজার টাকা নিয়ে তহবিলটি খোলা হয়। পাঁচ দিনের মধ্যে দেশ-বিদেশ থেকে ৩ হাজার ৭৫ কোটি ৮৫ লক্ষ ৩২ হাজার ৪৫ টাকা জমা পড়ে। এর মধ্যে বিদেশি অনুদান মাত্র ৩৯ লক্ষ ৬৭ হাজার ৭৪৮ টাকা। বাকি পুরোটাই দেশের মানুষের অনুদান।

চিদম্বরমের টুইট।

আরও পড়ুন: বাদল অধিবেশনে সরকারকে কোনও প্রশ্ন নয়! গর্জে উঠল বিরোধী শিবির

ওই টাকার উপর ৩৫ লক্ষ ৩২ হাজার ৭২৮ টাকা সুদও জমা হয়। বিদেশি অনুদানের উপর আরও ৫২৫ টাকার সুদ মেলে। তাতেই পাঁচ দিনে ওই টাকার অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৭৬ কোটি ৬২ লক্ষ ৫৮ হাজার ৯৬ টাকা। ওই টাকা থেকে কর বাবদ ২ হাজার ৪৯ টাকা কাটা হয়। তাতে মোট অর্থের পরিমাণ হয় ৩ হাজার ৭৬ কোটি ৬২ লক্ষ ৫৬ হাজার ৪৭ টাকা।

তবে ওই পাঁচ দিনে জমা পড়া মোট টাকার হিসাব দেখানো হলেও, দেশ-বিদেশ থেকে যাঁরা ওই তহবিলে টাকা জমা দিয়েছেন, তাঁদের নাম ও পরিচয় খোলসা করেনি প্রধানমন্ত্রীর দফতর, যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী তথা প্রবীণ কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম।

বুধবার টুইটারে চিদম্বরম লেখেন, ‘‘পিএম কেয়ার্স ফান্ডের হিসেবে দেখা গিয়েছে, ২৬ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত, পাঁচ দিনে ৩ হাজার ৭৬ কোটি টাকা জমা পড়েছে। কিন্তু যে দয়ালু মানুষ জন অনুদান দিয়েছেন, তাঁদের নাম প্রকাশ করা হবে না কেন? অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বা ট্রাস্টে যদি কেউ নির্ধারিত সীমার বেশি টাকা অনুদান দেন, সে ক্ষেত্রে অনুদানকারীদের নাম প্রকাশ করা বাধ্যতামূলক। শুধুমাত্র পিএম কেয়ার্স ফান্ডকে ছাড় দেওয়া হচ্ছে কেন?’’

চিদম্বরম আরও লেখেন, ‘‘যিনি দান গ্রহণ করেছেন, তাঁকে সবাই চেনেন। ট্রাস্টিদেরও চেনেন সকলে। তাহলে অনুদানকারীদের নাম প্রকাশে ভয় কিসের?’’

আরও পড়ুন: বিজেপি অফিসে ৫৩ বার ফোন, মরিশাসে যৌন হেনস্থা, সুশান্তের বন্ধু সন্দীপের গতিবিধি নিয়ে রহস্য ঘনীভূত​

করোনার জেরে উদ্ভুত অতিমারি সামাল দিতে মার্চ মাসের শেষ দিকে প্রাইম মিনিস্টার্স সিটিজেন অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যান্ড রিলিফ ইন ইমার্জেন্সি সিচুয়েশন্স বা ‘পিএম কেয়ার্স’ ফান্ড বা তহবিল গঠন করে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। মূলত কোভিডের ফলে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্যই সেটি গঠন করা হয়। পদাধিকার বলে প্রধানমন্ত্রী ওই ফান্ডের চেয়ারম্যান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী তহবিলের ট্রাস্টি হন।

কিন্তু দেশে যে কোনও ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য জাতীয় ত্রাণ তহবিল (ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিলিফ ফান্ড বা এনডিআরএফ) থাকতে ফের কেন আরও একটি ফান্ড গঠন করা হল, তা নিয়ে শুরু থেকেই প্রশ্ন তুলে আসছেন বিরোধীরা। ‘পিএম কেয়ার্স’-এ জমা পড়া অর্থ প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে হস্তান্তর করার আর্জি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদনও জমা পড়ে, শীর্ষ আদালতে যা খারিজ হয়ে যায়। জুন মাসে তথ্য জানার আইনে ওই তহবিল সম্পর্কে তথ্য চেয়ে আবেদন জমা পড়ে। কিন্তু ওই তহবিল নিয়ে কোনওরকম তথ্য দিতে অস্বীকার করে প্রধানমন্ত্রীর দফতর।

তার পর আচমকাই ‘পিএম কেয়ার্স’ ওয়েবসাইটে পাঁচ দিনের হিসাব তুলে ধরা হল। তাতে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের যুগ্ম সচিব শ্রীকর কে পরদেশি ‘পিএম কেয়ার্স’-এর সচিব হিসেবে এবং গুজরাত ক্যাডারের আইএএস অফিসার তথা প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিব হার্দিক শাহ তহবিলের ডেপুটি সচিব হিসেবে স্বাক্ষর করেছেন।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE