Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
NOTA

মহারাষ্ট্রে তিন কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে, হরিয়ানায় ছ’টি কেন্দ্রে নির্ণায়ক ভূমিকায় নোটা

ভোটযন্ত্রে একদম নীচের বোতামটি ‘নোটা’র, যার অর্থ হল কোনো নেতাকেই পছন্দ নয়।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:৪২
Share: Save:

রাজনীতিকদের অপছন্দ করছেন এমন মানুষের পাল্লা ক্রমশ কি ভারী হচ্ছে? অল্প কয়েকটি আসনে হলেও ভোটযুদ্ধে নেতাদের বেগ দিল নোটা। সদ্য সমাপ্ত হরিয়ানামহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর এমনই ছবি সামনে এল। তাতে দেখা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের তিন বিধানসভা কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে নোটা। আবার হরিয়ানার ছয় কেন্দ্রেও জয়-পরাজয়ে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেছে।

ভোটযন্ত্রে একদম নীচের বোতামটি নোটার, যার অর্থ হল কোনো নেতাকেই পছন্দ নয়। নির্বাচনে নাম লেখানো কোনও নেতাকেই পছন্দ না হলে, নোটায় ভোট দেন সাধারণ মানুষ। বৃহস্পতিবার দুই রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর দেখা গিয়েছে, মহারাষ্ট্রের লাতুর (গ্রামীণ) এলাকা থেকে জয়ী হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিলাসরাও দেশমুখের ছেলে তথা কংগ্রেস নেতা ধীরজ বিলাসরাও দেশমুখ। ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ভোট পেয়েছেন তিনি। মাত্র ১৩ হাজার ৩৩৫ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী শিবসেনা প্রার্থী, যাঁকে ছাপিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে নোটা। সেখানে ২৭ হাজার ২৮৭ ভোট পড়েছে নোটায়।

একই ভাবে মহারাষ্ট্রের পালুস-কোড়েগাঁও কেন্দ্রে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে নোটা। সেখানে কংগ্রেস এবং শিবসেনার মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলেও, প্রাপ্ত ভোটের ১০ শতাংশই গিয়েছে নোটায়। সেখানে এক লক্ষ ৭১ হাজার ভোট পেয়ে কংগ্রেস প্রার্থী কদম বিশ্বজিৎ পতঙ্গরাও জয়ী হয়েছেন। আট হাজার ৯৭৬ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শিবসেনা। আর তাদের ছাপিয়ে ২০ হাজার ৬৩১ ভোট গিয়েছে নোটায়।

আরও পড়ুন: ৫৬টি আসনে জয় নিশ্চিত করে, আদিত্য ঠাকরের জন্য কুর্সির আধখানা চাইছেন উদ্ধব​

অক্কলকুয়া বিধানসভা আসনেও শিবসেনাকে ছাপিয়ে চার হাজার ৮৫৬ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থান দখল করেছে নোটা। সেখানে জয়ী হয়েছেন কংগ্রেসের কেসি পড়ভি।

তবে মহারাষ্ট্রে যেখানে বিজয়ী পক্ষ মোট প্রাপ্ত ভোটের ৬৫ শতাংশ পেয়ে জয়ী হয়েছে, হরিয়ানার ছয় কেন্দ্রে নোটাই জয়-পরাজয়ের নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেখানকার থানেশ্বর কেন্দ্রে বিজেপির সুভাষ সুধা কংগ্রেসের অশোক কুমার অরোরাকে মাত্র ৮৪২ ভোটে পরাজিত করেন। ওই কেন্দ্রে নোটার প্রাপ্ত ভোট ছিল ৯৫১। একই ভাবে সিরসায় নির্দল প্রার্থী গোকুল সেতিয়াকে ৬০২ ভোটে পরাজিত করেছেন হরিয়ানা লোকহিত পার্টির গোপাল কান্ডা। সেখানে ৫৭৯ ভোট পেয়েছে নোটা।

হরিয়ানার রতিয়া কেন্দ্রে বিজেপির লক্ষ্মণ নামা কংগ্রেসের জার্নেল সিংহকে ১২১৬ ভোটে হারিয়েছেন। নোটা পেয়েছে ১০৮৬ ভোট। বড়খালে কংগ্রেসের বিজয়প্রতাপ সিংহকে ২৫৪৫ ভোটে হারান বিজেপির সীমা ত্রিখা। সেখানে নোটা পায় ২২৭৪ ভোট। কৈথলে বিজেপির লীলা রামের কাছে ১২৪৬ ভোটে পরাজিত হন বিজেপির মুখপাত্র তথা দলের অভিজ্ঞ নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা। সেখানে ৫৬১ আসন পায় নোটা। নির্দল প্রার্থীদের দখলে যায় ১৮০০ ভোট। পুনহানায় কংগ্রেসের মহম্মদ ইলিয়াসকে ৮১৬ ভোটে পরাজিত করেন নির্দল প্রার্থী রহিশ খান। সেখানে নোটায় ৬১১ ভোট পড়েছে।

আরও পড়ুন: এক্সক্লুসিভ অভিজিৎ: পণ্ডিতরা যখন দৈববাণী করেন, তখন সেটা বেশি বিপজ্জনক​

এমনকি বৃহস্পতিবার এই তিন রাজ্যে আম আদমি পার্টি (আপ)-র চেয়েও বেশি ভোট পেয়েছে নোটা। তাই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ভারতীয় রাজনীতিতে নোটা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। লড়াইটা আর নেতা বনাম নেতায় থেমে নেই, বরং তা নেতা বনাম জনতায় পরিণত হয়েছে। অপছন্দের নেতাদের ভোট দেওয়ার চেয়ে নোটায় ভোট দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করছেন তাঁরা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE