টু প্লাস টু বৈঠকের আগে। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে
লাদাখ নিয়ে বেজিংকে কড়া বার্তা। ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় একযোগে কাজ করার আশ্বাস। ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে আমেরিকার এমন পদক্ষেপে বেজায় চটেছে চিন। আমেরিকাকে ‘তৃতীয় পক্ষ’ হিসেবে উল্লেখ করে নয়াদিল্লিতে চিনা দূতাবাস এক বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যায় ‘তৃতীয় পক্ষ’-এর কোনও জায়গা নেই। ভারতীয় উপমহাদেশে আমেরিকা নিজেদের আধিপত্য বাড়াতে চাইছে বলেও তোপ দেগেছে বেজিং।
ভারতের সঙ্গে ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকে যোগ দিতে সোমবার ভারতে এসেছেন আমেরিকার বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো এবং প্রতিরক্ষা সচিব মার্ক টি এসপার। মঙ্গলবার প্রথমে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। সেখানে সামরিক ও প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে দু’দেশের পারস্পরিক বোঝাপড়া আরও বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা হয়। তার পর তাঁরা বৈঠকে বসেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত ডোভালের সঙ্গে। এনএসএ-র সঙ্গে বৈঠকে পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-চিন উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা হয়। এর পরে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে পম্পেয়ো ভারতের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে চিনকে নিশানা করে বলেন, ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ওয়াশিংটন সব সময়ই পাশে থাকবে নয়াদিল্লির। যে কোনও রকমের ‘বিপদ’ থেকে রক্ষা করতে একযোগে কাজ করবে দুই দেশ।
পম্পেয়োর এই বার্তার পরেই বুধবার বিবৃতি দিয়ে চিনের বক্তব্য, ‘‘সীমান্ত সমস্যা ভারত-চিনের দ্বিপাক্ষিক সমস্যা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে সেনা সরাতে এবং স্থিতাবস্থা ফেরাতে কূটনৈতিক ও সামরিক মাধ্যমে আলোচনা চলছে। নিজেদের মধ্যে এই সমস্যা সঠিক ভাবে মেটানোর ক্ষমতা রয়েছে নয়াদিল্লি ও বেজিংয়ের। সেখানে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কোনও জায়গা নেই।’’
আরও পড়ুন: নাম নিল না নয়াদিল্লি, চিনকে তোপ পম্পেয়োদের
বেজিংয়ের অভিযোগ, ভারতীয় উপমহাদেশে কর্তৃত্ব বাড়ানোর উদ্দেশ্যেই এ ভাবে হস্তক্ষেপ করতে চাইছে আমেরিকা। দূতাবাসের বক্তব্য, উপমহাদেশের দেশগুলির মধ্যে একে অন্যের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়িয়ে তার ফায়দা তুলতে চাইছে হোয়াইট হাউস। একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়িয়ে দিয়ে নিজেদের কর্তৃত্ব ও আধিপত্য জাহির করতে চাইছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক কখনও তৃতীয় পক্ষের স্বার্থে হওয়া উচিত নয় বলেও বিবৃতিতে মন্তব্য করেছে বেজিং।
আরও পড়ুন: দৈনিক সুস্থতার হার সর্বোচ্চ, দেশে সক্রিয় করোনা রোগী কমে ৬ লক্ষ
মঙ্গলবার এনএস-র সঙ্গে পম্পেয়োর বৈঠকে মূলত পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার উত্তেজনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উঠে এসেছে গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষ সংক্রান্ত বিষয়ও। নয়াদিল্লি-বেজিং টানাপড়েনে আমেরিকা যে ভারতের পক্ষে এবং চিনের ‘বিপদ’ থেকে রক্ষা করতে ভারত-আমেরিকার একযোগে কাজ করবে, এমন বার্তা দিয়েছিলেন পম্পেয়ো। তাতে চিনের জবাব, ‘‘তথাকথিত চিনা বিপদের কথা উল্লেখে করে আমেরিকা আসলে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে সারা বিশ্বে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে চাইছে। বাধা সৃষ্টি করছে চিনের উন্নয়নে।"
প্রসঙ্গত এই ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকেই ভারত-আমেরিকা বেসিক এক্সচেঞ্জ অ্যান্ড কো-অপারেশন এগ্রিমেন্ট (বিইসিএ) স্বাক্ষর হয়েছে। এই চুক্তির মাধ্যমে স্থির হয়েছে, সামরিক প্রযুক্তি ও নির্দিষ্ট কিছু স্যাটেলাইটের তথ্য আদানপ্রদান করবে দুই দেশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy