অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
বিধ্বস্ত অর্থনীতি নিয়ে শুক্রবার প্রশ্ন তুলেছেন ‘ঘরের লোক’। বেহাল অর্থনীতির দায় ভগবানের কাঁধে চাপানোর জন্য কটাক্ষ করেছেন নিজের স্বামী! তার চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে ভিডিয়ো-অনুষ্ঠানের মঞ্চে দেশের অর্থনীতির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে কার্যত একটি শব্দও উচ্চারণ করলেন না অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।
মন্ত্রিসভায় তাঁর অন্য কয়েক জন সঙ্গী অবশ্য চুপ থাকেননি। সহজে ব্যবসা করার পথ মসৃণ করতে সংস্কারের মাপকাঠিতে ২০১৯ সালে কোন রাজ্য কোথায় দাঁড়িয়ে, শনিবার সেই বার্ষিক তালিকা প্রকাশের অনুষ্ঠানে মোদী মন্ত্রিসভার শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গয়াল যেমন দাবি করলেন, বিশ্বের কঠোরতম লকডাউনের পরে বেশ কিছু ক্ষেত্র যে এত তাড়াতাড়ি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করবে, তা অনেকেই আঁচ করতে পারেননি। বিমান পরিবহণমন্ত্রী হরদীপ সিংহের মুখে আবার শোনা গিয়েছে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠার কথা। কিন্তু সেখানে অর্থমন্ত্রী হয়েও এই সব বিষয়ে কার্যত চুপ রইলেন নির্মলা।
অর্থমন্ত্রী শুধু দাবি করলেন, ভারতের সংস্কারে আস্থা অটুট বলেই লকডাউনের মধ্যেও মোটা অঙ্কের বিদেশি লগ্নি এসেছে দেশে। সেই সঙ্গে দাবি করেছেন, প্রধানমন্ত্রী করোনার সঙ্কটকে সুযোগে রূপান্তরিত করতে চান বলেই ২০ লক্ষ কোটি টাকার আত্মনির্ভর প্রকল্পে প্রায় প্রতিটি সুবিধাই কোনও-না-কোনও সংস্কারের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু ওইটুকুই। ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতি হয়ে ওঠার স্বপ্ন ফেরি থেকে শুরু করে জিডিপির দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর আশ্বাসের মতো বিষয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি সীতারামন।
আরও পড়ুন: লাদাখে রানওয়ে তৈরি করছে চিন
আর্থিক বছরের প্রথম তিন মাসে (এপ্রিল-জুন) জিডিপি সঙ্কুচিত হয়েছে ২৩.৯%। অর্থ মন্ত্রক মাসিক রিপোর্টে স্বীকার করেছে, এই হার অন্য বড় মাপের অর্থনীতির সঙ্কোচনের তুলনায় বেশি। কিন্তু অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আগেভাগেই বলে রেখেছিলেন, কোভিড আসলে দৈবদুর্বিপাক বা ভগবানের মার। এর ধাক্কায় অর্থনীতির সঙ্কোচনও হতে পারে।
গোড়া থেকেই বিরোধীদের বক্তব্য, অর্থনীতিতে ঝিমুনি চলছে লকডাউনের অনেক আগে থেকে। সেই অভিযোগ আরও ঝাঁঝালো স্বরে তুলে নির্মলার স্বামী পরকাল প্রভাকরের কটাক্ষ, “আসল ‘দৈবদুর্বিপাক’ হল, দেশের অর্থনীতির চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সরকারের মধ্যে সুসংহত ভাবনাচিন্তার অভাব। কোভিড তো দেরিতে এসেছে।” একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, “২০১৯ সালের অক্টোবরেই বলেছিলাম যে, সরকার বাস্তব অস্বীকার করছে। জিডিপি-র ২৩.৯% সঙ্কোচনে তা ঠিক প্রমাণিত হল।” সেই সঙ্গেই তাঁর আর্জি, “ভগবানের দোহাই, এবার তো অন্তত কিছু করুন!”
কিন্তু প্রশ্ন হল, কে করবে, কী করবে? যেমন পীযূষ গয়াল বহু ক্ষেত্র ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বললেও, সেই সব ক্ষেত্রের নাম মুখেও আনেননি। আর ৫ লক্ষ কোটি ডলারে পৌঁছনোর রাস্তা প্রসঙ্গে হরদীপের মুখে শুধু প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারত হয়ে ওঠার ডাক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy