ছবি: পিটিআই।
ভোটের সময়ে ইভিএম বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময়ে ত্রাণসামগ্রী যে-ভাবে দেশের প্রত্যন্ততম প্রান্তটির মানুষের কাছেও পৌঁছে দেওয়া হয়, করোনাভাইরাসের টিকা বণ্টনের জন্যও সেই রকম বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সরকারের পাশাপাশি সমাজের সর্ব স্তরের মানুষকে এই কাজে যুক্ত হওয়ার আর্জি জানালেন তিনি।
দু’টি টিকার দ্বিতীয় পর্যায় এবং একটির তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা চলছে দেশে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন জানিয়েছেন, মাস ছয়েকের মধ্যে করোনার প্রতিষেধক হাতে এসে যাবে বলে তিনি আশাবাদী। এই পরিস্থিতিতে সেই টিকা সংরক্ষণ ও সুষ্ঠু বণ্টনই এখন সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মোদী সরকারের কাছে। সেই কাজের গতিপ্রকৃতি খতিয়ে দেখতে তিন দিনের মধ্যে শনিবার দ্বিতীয় বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী— যা বেনজির। ভ্যাকসিন বণ্টনে কোনও মহলে যাতে বিন্দুমাত্র ক্ষোভের সঞ্চার না-হয়, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করতে চাইছেন মোদী।
সে জন্য এ দিন তিনি বার বার করে মনে করিয়ে দিয়েছেন দেশের ব্যাপ্তি ও বিশালত্বের কথাটি। ভোটকর্মীরা ভোটারদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত যন্ত্রবন্দি করে যেমন দেশের সব চেয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলটি থেকে পরম যত্নে নিয়ে আসেন, বৈঠকে উপস্থিত স্বাস্থ্যমন্ত্রী, নীতি আয়োগের সদস্য (স্বাস্থ্য) বিনোদ পল, মুখ্য বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কে বিজয়রাঘবন ও সংশ্লিষ্ট কর্তাদের সেটি মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। কিংবা বন্যা বা ভূমিকম্পের সময়ে উদ্ধারকারী দল শত বাধা ডিঙিয়ে যেমন ঠিক পৌঁছে যান দুর্গতদের কাছে, প্রধানমন্ত্রীর কথায়— সেই মানসিকতা নিয়েই করোনার টিকা বণ্টনের কাজটি করতে হবে।
আরও পড়ুন: কৃষি আইনে দুর্বল হয়েছে ভিত: রাহুল
আরও পড়ুন: নবরাত্রির শুভেচ্ছায় নারীকে শ্রদ্ধা রাহুলের
বাস্তবেই টিকা বিলির বিষয়টি মস্ত বড় ভাঁজ কেন্দ্রীয় সরকারের কপালে। পান থেকে চুন খসলে বিরোধীরা তো তর্জনী তুলবেই, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক উদ্বিগ্ন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সম্ভাব্য অবনতি নিয়ে। বিষয়টি এমনই স্পর্শকাতর, টিকা বিলি নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ থেকে বড় মাপের সংঘর্ষও ঘটে যেতে পারে। দেশে বিভিন্ন এলাকার বিভিন্ন ধরনের জনচরিত্র রয়েছে। কোনও ‘বিশেষ এলাকায়’
টিকা না-পৌঁছলে তার নানা রকম অর্থ করা হতে পারে। প্রশাসনিক সূত্রের মতে, এই কারণেই করোনার টিকা বণ্টনের বিষয়টিকে সরকার এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। ধারাবাহিক বৈঠকে দেশ জুড়ে সুষ্ঠু ভাবে টিকা বণ্টনের একটা সন্তোষজনক পরিকল্পনা তৈরি করার কাজে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী।
সামনে পেয়ে দেশের কোভিড-পরিস্থিতির কিছু ইতিবাচক গতিপ্রকৃতি এ দিন প্রধানমন্ত্রীকে জানান স্বাস্থ্য কর্তারা। গত তিন সপ্তাহে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমে সুস্থতার সংখ্যা যে লক্ষণীয় ভাবে বেড়েছে, তা শুনে মোদীর মুখে হাসি ফোটে বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা। আসন্ন উৎসবের মরসুমেও এই ইতিবাচক গতিপ্রকৃতি ধরে রাখার উপরে জোর দেন তিনি। বলেন, উৎসবের উদ্যাপন যাতে বাঁধ না-ভাঙে তা নিশ্চিত করতে হবে। সতর্কতায় ঢিলেমি দেওয়ার অবকাশ নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy