প্রিয়ঙ্কা-ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, মাস দুয়েক আগে হোয়াটসঅ্যাপে আড়ি পাতা সংক্রান্ত বার্তা পান কংগ্রেস নেত্রী।
লোকসভা ভোটের সময় প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার ফোনে ‘আড়ি পেতেছিল’ নরেন্দ্র মোদী সরকার। আজ এই বিস্ফোরক দাবি করল কংগ্রেস। সেই সঙ্গেই কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপিকে ‘ভারতীয় জাসুস (গুপ্তচর) পার্টি’ বলে তাদের বিদ্রুপ, ‘অব কি বার, জাসুস সরকার’!
কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রফুল্ল পটেল জানিয়েছেন, তাঁদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ যখন ‘হ্যাক’ হওয়া মোবাইলে সতর্কবার্তা পাঠাচ্ছিল, তখন এমনই একটি বার্তা পেয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরাও।’’ কিন্তু ঠিক কবে সেই বার্তা পেয়েছিলেন প্রিয়ঙ্কা, তার পরেও কেন এত দিন চুপ ছিলেন, তা নিয়ে মন্তব্য করেননি রণদীপ। তিনি জানান, ফোন ‘হ্যাক’ হয়েছে, সরাসরি এমন কোনও বার্তা প্রিয়ঙ্কার হোয়াটসঅ্যাপে আসেনি। অন্যরা যেমন সতর্কবার্তা পেয়েছিলেন, প্রিয়ঙ্কাও তেমনই একটি পেয়েছিলেন।
প্রিয়ঙ্কা-ঘনিষ্ঠ এক নেতা জানান, মাস দুয়েক আগে হোয়াটসঅ্যাপে আড়ি পাতা সংক্রান্ত বার্তা পান কংগ্রেস নেত্রী। তখন এর অর্থ বুঝতে না পেরে সেটি তিনি মুছে দেন। একই সময়ে বিদেশের কিছু অজানা নম্বর থেকেও ফোন আসছিল। কংগ্রেসের বক্তব্য, বাকিরা বলার পরে সেই বার্তাটির মানে যে আড়ি পাতা, তা বুঝেছেন প্রিয়ঙ্কা। তাই দল এখন বিষয়টি সামনে আনছে।
আরও পড়ুন: আমরা ন্যায় চাই, সুপ্রিম কোর্টে ন্যায়ই হবে: অযোধ্যা রায়ের আগে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য শাহনওয়াজের
Haven’t we seen Congress imagining things that don’t exist? Remember them claiming that Rahul Gandhi’s life was in danger when a green light, off a video camera, flashed on his face during a media briefing. Well, that is the level of their leaders’ credibility in public life... https://t.co/S7FHOzuOzm
— Amit Malviya (@amitmalviya) November 3, 2019
বিজেপির দাবি, হোয়াটসঅ্যাপ আগে জানিয়েছে, কোনও রাজনৈতিক নেতার ফোনে আড়ি পাতার কথা তাদের জানা নেই। দলের এক নেতার মতে, ‘‘মমতা প্রায়ই দাবি করেন যে, তাঁর ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে। আর প্রফুল্ল পটেল প্রকাশ্যে বলেছেন, তাঁর ফোনে আড়ি পাতা হয়নি।’’ বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি মোর্চার প্রধান অমিত মালবীয় বলেন, ‘‘যে ঘটনার অস্তিত্বই নেই, কংগ্রেস সেটিই কল্পনা করে! এই তো ওই নেতাদের বিশ্বাসযোগ্যতা!’’
কংগ্রেসের পাঁচ প্রশ্নের মুখে মোদী সরকার
ব্যাঙ্ককে আসিয়ান সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী। রবিবার। ছবি: রয়টার্স।
• ভারত সরকারের তরফে কোন মন্ত্রক বা কে এই ‘পেগেসাস’ স্পাইওয়্যার কিনেছেন?
• এটা কেনার ছাড়পত্র কে দিয়েছেন? নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ না অজিত ডোভাল?
• এপ্রিল-মে থেকেই কেন্দ্র স্পাইওয়্যার কেনার বিষয়ে জানত। তার পরেও তারা চুপ ছিল কেন?
• ‘টেলিগ্রাফ আইন’ ও ‘তথ্যপ্রযুক্তি আইন’-এর আওতায় কী পদক্ষেপ করা হবে এখন?
• লোকসভা ভোটের সময় কোন তথ্য জানতে আড়ি পাতছিল সরকার?
কিন্তু কংগ্রেস আজ নতুন নথি তুলে দাবি করেছে, এ বছর এপ্রিল-মে ও সেপ্টেম্বরের গোড়ায় হোয়াটসঅ্যাপ কর্তৃপক্ষ দু’বার লিখিত ভাবে সরকারকে ফোনে আড়ি পাতার ঘটনা জানান। কংগ্রেস এ নিয়ে সরব হওয়ার পরে সরকারি সূত্র দাবি করে, হোয়াটসঅ্যাপ জানায়নি যে, ইজ়রায়েলি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থা এনএসও-র থেকে ‘পেগেসাস’ স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে আড়ি পাতা হচ্ছে। কিন্তু নতুন নথি তুলে কংগ্রেসের অভিযোগ, এপ্রিল-মে মাসে এনএসও-পেগেসাস যোগের কথা কেন্দ্রকে জানায় হোয়াটসঅ্যাপ। এনএসও এই স্পাইওয়্যার কোনও বেসরকারি সংস্থাকে বিক্রি করতে পারে না। সেই অর্থে ভারতে শুধু কেন্দ্রীয় সরকারকেই তারা এটি বিক্রি করেছে। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে কাঠগড়ায় তুলে আজ পাঁচটি প্রশ্নও ছুড়েছে কংগ্রেস।
রণদীপ বলেন, ‘‘এর পরেও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ অগস্ট ও সেপ্টেম্বরে হোয়াটসঅ্যাপের সিইও এবং ফেসবুকের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করেন। কিন্তু এ নিয়ে চুপ থাকেন! কেন এখনও প্রধানমন্ত্রী চুপ? কেন শুধুই ‘সরকারি সূত্র’-র আড়ালে কথা বলা হচ্ছে? কেন মন্ত্রীরা সামনে আসছেন না? নতুন নথি বলছে, সরকারি-বেসরকারি মোবাইল সংস্থাগুলির সঙ্গেই হ্যাক হয়েছে ‘ন্যাশনাল ইন্টারনেট ব্যাকবোন’ও। যার অর্থ, সরকারি তন্ত্রের যে কোনও দফতরে আড়ি পাতা হয়েছে।’’ কাল বিরোধীদের বৈঠকে এই বিষয়টি তুলবেন সনিয়া গাঁধী। আনন্দ শর্মা এবং শশী তারুরের নেতৃত্বে সংসদের স্বরাষ্ট্র ও তথ্য-প্রযুক্তি স্থায়ী কমিটিও এর তদন্ত করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy