Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
National News

লাইভ: হরিয়ানায় ফের এগিয়ে গেল বিজেপি, লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে কংগ্রেস

এ বারের নির্বাচন ঘিরে হরিয়ানার সাধারণ মানুষের মধ্যেও তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। ২০১৪-র তুলনায় এ বছর কম ভোট পড়েছে বলে মেনেছে নির্বাচন কমিশনও।

সংবাদ সংস্থা
চণ্ডীগড় শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:০০
Share: Save:

গেরুয়া ঝড়ের বদলে, হরিয়ানায় এখন রীতিমতো লড়তে হচ্ছে বিজেপিকে। প্রত্যাশা ছাড়িয়ে সেখানে তাদের কড়া টক্কর দিচ্ছে কংগ্রেস। সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সেখানে ৪০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। কংগ্রেস এগিয়ে রয়েছে ৩১টি আসনে। ১০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে স্থানীয় জননায়ক জনতা পার্টি (জেজেপি) ।

বিজেপিকে ছাপিয়ে সরকার গঠনের দাবি জানাতে ইতিমধ্যেই জেজেপির সঙ্গে হাত মেলানোয় আগ্রহ প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। বিজেপির তরফেও আপ্রাণ চেষ্টা চলছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পদটি ছেড়ে না দিলে সমঝোতায় আসার প্রশ্নই ওঠে না বলে জানিয়ে দিয়েছে জেজেপি।

অন্য দিকে, অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে ২০১৪-য় যে হরিয়ানায় পদ্ম ফোটাতে সক্ষম হয়েছিল বিজেপি, সেখানে গেরুয়া শিবিরের বর্তমান অবস্থা নিয়ে ইতিমধ্যেই কাটাছেঁড়া শুরু হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর-সহ দলীয় নেতাদের দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

দেশজুড়ে জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে, নরেন্দ্র মোদীর জনপ্রিয়তা এবং হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিতে ভর করে, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে এ বছর দ্বিতীয় বারের জন্য বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় ফিরেছে। কিন্তু গত পাঁচ মাসে একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে তাদের। বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারে হাজারও প্রতিশ্রুতি থাকলেও, কৃষকদের মুখে হাসি কতটা ফুটেছে তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

তার উপর বাদ সেধেছে অর্থনৈতিক মন্দা। চাহিদার অভাবে ধুঁকছে শিল্পক্ষেত্র। তার জেরে গত কয়েক মাসে কাজ হারিয়েছেন বহু মানুষ। এর ফলে মনোহরলাল খট্টর নিজে তো বটেই , নির্বাচনী প্রচারে নরেন্দ্র মোদীকে নামিয়েও বিজেপি তেমন সুবিধা করতে পারেনি বলে মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। তাই ওই অংশের মতে, ৯০ আসনের হরিয়ানা বিধানসভায় ৪৬টি আসন পেতে বিজেপিকে হিমশিম খেতে হবে।

তবে কংগ্রেসের জন্যও যে ছবিটা খুব আশাপ্রদ হতে পারে, এমনটা কেউ বলেননি। বরং বলা হয়েছে, ৩০ থেকে ৪২টির মতো আসন পেতে পারে তারা। সে ক্ষেত্রে দুষ্মন্ত চৌটালার জননায়ক জনতা পার্টি (‌জেজেপি)‌-র মতো আঞ্চলিক দলকে পাশে পেলে, সরকার গঠনে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় কংগ্রেসের।

তবে এ ব্যাপারে কংগ্রেসের চেয়ে বিজেপি যে বেশি সক্রিয় তাতে সন্দেহ নেই। তাতে আবার উল্টোটাও হতে পারে। আসন সংখ্যা কম থাকলেও, কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে আগেভাগে আঞ্চলিক দলগুলিকে পাশে এনে সরকার গঠনের দাবি জানাতে পারে বিজেপি।

তবে নিজেদের জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। ভোট দিতে গিয়েই বিরোধীদের 'হেরো' বলে উল্লেখ করেছিলেন তিনি। বিজেপির প্রতাপ দেখে কংগ্রেস–সহ বিরোধীরা ময়দান ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। যদিও তাঁর দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির প্রবীণ নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা। দলের তরফে প্রচারে গা-ছাড়া মনোভাব থাকলেও, তাঁরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন বলে আত্মবিশ্বাসী তিনি। জেজেপির সঙ্গে হাত মেলানোয় আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তিনি।

অন্য দিকে, এ বারের নির্বাচন ঘিরে হরিয়ানার সাধারণ মানুষের মধ্যেও তেমন উৎসাহ দেখা যায়নি। ২০১৪-র তুলনায় এ বছর কম ভোট পড়েছে বলে মেনেছে নির্বাচন কমিশনও। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর দু’লক্ষ আট হাজার নতুন ভোটার ছিল হরিয়ানায়, যার মধ্যে শুধুমাত্র গুরুগ্রামেই নতুন ভোটারের সংখ্যা ছিল ৬৫ হাজার ১৪১ জন। এর পরেও মঙ্গলবার হরিয়ানায় ৬৫.৭৫ শতাংশ ভোট পড়ে। গুরুগ্রামের মতো শহরে ভোট পড়ে ৫১.২০ শতাংশ। সেখানকার বাদশাহপুর, সোহনা, পটৌডি-র মতো নির্বাচনী কেন্দ্রে ভোট পড়ে যথাক্রমে ৪৫ শতাংশ, ৫৯ শতাংশ এবং ৫৯ শতাংশ করে।

ভোট কম পড়ায় তাই বুধবার নতুন করে জিন্দ জেলার উচানা কালান নির্বাচনী কেন্দ্রের ৭১ নম্বর বুথে, ঝাজ্জরের বেরির ১৬১ নম্বর বুথে, নারনউলের ২৮ নম্বর বুথে, রেওয়ারির কোসলির ১৮ নম্বর বুথে এবং ফরিদাবাদের প্রিথলার ১১৩ নম্বর বুথে নতুন করে ভোটগ্রহণ হয়।

এখন ফলাফল কার পক্ষে যায়, সেদিকেই তাকিয়ে হরিয়ানা-সহ দেশের মানুষ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE