প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে। —ফাইল চিত্র
ফাঁসির আদেশ দেওয়ার সঙ্গে তা কার্যকর করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডে আজ বলেন, ‘‘সব কিছুর জন্য সীমাহীন লড়াই করা যায় না।’’ নির্ভয়া মামলার দোষীদের ফাঁসি কবে হবে, তা নিয়ে টালবাহানার মধ্যে তাঁর এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। নির্ভয়া-কাণ্ডের অভিযুক্তদের এক এক জনের হয়ে এক এক সময় তাঁদের আইনজীবীরা রায় সংশোধনের আর্জি জানাচ্ছেন। রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনও আলাদা আলাদা সময়ে জমা পড়ছে। ইতিমধ্যেই এক বার মৃত্যু পরোয়ানা জারি হয়েও তা পিছিয়ে গিয়েছে।
আজ উত্তরপ্রদেশের একটি খুনের ঘটনায় ফাঁসির আদেশ পুনর্বিবেচনার আর্জির মামলায় সেই প্রসঙ্গ টেনে এনে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সাম্প্রতিক ঘটনায় যেমনটা দেখা যাচ্ছে, দোষী সাব্যস্ত হওয়া বন্দিরা যেন মনে না করে যখন খুশি ফাঁসির আদেশকে চ্যালেঞ্জ জানানো যাবে।’’
বুধবারই সুপ্রিম কোর্টে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আর্জি জানিয়েছে, ফাঁসির রায় ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে সাজা সংশোধনের আর্জি বা কিউরেটিভ পিটিশন জমার সময়সীমা স্থির করা হোক। মৃত্যু পরোয়ানা জারির সাত দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আর্জি জানানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছে কেন্দ্র। আজ সেই প্রসঙ্গ তুলে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, এখন যে নিয়ম রয়েছে, তাতে পুরোপুরি দোষীদের অধিকারের দিকটি দেখা হয়েছে। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘শুধু অভিযুক্ত বা দোষীদের অধিকার নয়, সুপ্রিম কোর্টকে নির্যাতিতাদের অধিকারের দিকটিও দেখতে হবে।’’
উত্তরপ্রদেশের আমরোহার শবনম ও সেলিম মিলে ২০০৮-এ শবনমের পরিবারের সাত জনকে খুন করেছিল। শবনম সেলিমকে বিয়ে করতে চাইলেও পরিবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলেই এই খুন। সেলিমের হয়ে আইনজীবী আনন্দ গ্রোভার ফাঁসি রদের আর্জি জানিয়ে বলেন, অপরাধের সময় সেলিম একেবারে অশিক্ষিত ছিল। এখন সে জেলে ডিগ্রি অর্জন করেছে। স্নাতকোত্তর পড়াশোনা করছে। সে শুধরে গিয়েছে। শবনমের আইনজীবী মীনাক্ষি অরোরাও যুক্তি দেন, সে এখন শুধরে গিয়েছে। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সকলের আত্মাই জন্মের সময় পবিত্র থাকে। কেউ অপরাধী হয়ে জন্মায় না।’’ কিন্তু একই সঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ফাঁসির নির্দেশের পরে কেউ শুধরে গেলে তাকে কি রেহাই দেওয়া যায়? মেহতা বলেন, এই যুক্তি মানলে কোনও ফাঁসিই হবে না। কেউ নিজের বাবা-মাকে খুন করে নিজেকে অনাথ বলে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারে না। প্রধান বিচারপতি এর পর বলেন, ‘‘সাজা দেওয়ার ক্ষেত্রে সংশোধনের সম্ভাবনা একটা গুরুত্বপূর্ণ দিক। কিন্তু ফাঁসির সাজাপ্রাপ্তরা কেমন আচরণ করছে, তার ভিত্তিতে রায় বদলাতে শুরু করলে এমন আর্জির বন্যা বয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy