Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kerala

পঞ্জাবের পথে কেরল, বিধানসভায় পাশ কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাবনা

কৃষক আন্দোলনকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে পিনারাই বলেন, ‘‘তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার না করলে দুর্ভিক্ষের দিকে এগোবে কেরল।’’

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। —ফাইল চিত্র

কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। —ফাইল চিত্র

সংবাদ সংস্থা
তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০২০ ১২:০২
Share: Save:

শুরু হয়েছিল পঞ্জাব দিয়ে। তার পর একাধিক রাজ্যে কেন্দ্রের কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাবনা পাশ হয়েছে বিধানসভায়। এ বার সেই পথে হাঁটল কেরলের বাম সরকারও। বৃহস্পতিবার সে রাজ্যের বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে সর্বসম্মত ভাবে পাশ হয়ে গেল তিনটি কৃষি আইন বিরোধী প্রস্তাবনা। দিল্লিতে কৃষকদের আন্দোলনকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই দাবি করেছেন, কেন্দ্রের তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহার না করলে দুর্ভিক্ষের দিকে এগোবে কেরল।

অধিবেশনে প্রস্তাবনা পাশ করাতে কোনও বেগ পেতে হয়নি কেরল সরকারকে। বিরোধী কংগ্রেসও প্রস্তাবনা সমর্থন করেছে। ফলে সর্বসম্মত ভাবে পাশ হয়ে গিয়েছে প্রস্তাবনা। প্রস্তাবনা পাশের পর পিনারাই বলেন, “এমন একটা প্রক্রিয়া থাকা উচিত, যাতে কেন্দ্র কৃষকদের কাছ থেকে খাদ্যশস্য সংগ্রহ করবে এবং নামমাত্র দামে গরিব, অভাবী মানুষকে দেবে। কিন্তু তার পরিবর্তে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে কৃষিপণ্যের ব্যবসা করার ছাড়পত্র দিচ্ছে। ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য দিতে চাইছে না সরকার।’’

পাশাপাশি দিল্লিতে কৃষকদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই আন্দোলন চলতে থাকলে তার মারাত্মক প্রভাব পড়বে কেরলে। রাজ্যের সাধারণ মানুষের কাছে কৃষিপণ্য আসা বন্ধ হয়ে গেলে রাজ্যে দুর্ভিক্ষের দিকে অগ্রসর হবে। এই সব বিষয়কে মাথায় রেখেই কেন্দ্রকে তিনটি বিলই প্রত্যাহার করে কৃষকদের দাবি দাওয়া মেনে নেওয়ার আর্জি জানাচ্ছে কেরল বিধানসভা।’’

আরও পড়ুন: চাপের মুখে দর কষাকষিতেও মোদী সরকারের ‘নরম সুর’

যদিও অধিবেশন ডাকা নিয়ে কেরল সরকারের সঙ্গে রাজভবনের সঙ্ঘাত চরমে উঠেছিল। গত ২৩ ডিসেম্বর এক দিনের বিশেষ অধিবেশন ডাকার অনুমতি চেয়ে রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খানকে চিঠি দিলেও তিনি তা খারিজ করে দিয়েছিলেন। কী ধরনের জরুরি অবস্থার জন্য এত সংক্ষিপ্ত অধিবেশনের প্রয়োজন হল মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তার জবাব চেয়েছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী তার সদুত্তর দিতে পারেননি। পাশাপাশি তিনি বলেন, মুখ্যমন্ত্রী এমন একটি সমস্যার জন্য বিশেষ অধিবেশন ডাকতে চাইছেন, যার কোনও সমাধান তাঁর কাছে নেই। কিন্তু তার পরেও ফের রাজভবনে প্রস্তাব পাঠান পিনারাই। একই সঙ্গে সরকারের যুক্তি ছিল, মন্ত্রী পরিষদের সুপারিশ মানতে বাধ্য রাজ্যপাল। শেষ পর্যন্ত সেই সঙ্ঘাতের আবহ কাটিয়ে অনুমোদন দেন রাজ্যপাল।

আরও পড়ুন: ‘কুপুত্র’ শুভেন্দুর সঙ্গে বিধানসভায় লড়তে তৈরি হচ্ছেন ‘নন্দীগ্রামের মা’

তবে কেন্দ্রীয় কোনও আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাবনা পাশ করলেও তা কার্যকর করতে সাংবিধানিক জটিলতা রয়েছে। বিধানসভায় পাশ হওয়া প্রস্তাবনায় রাষ্ট্রপতির সই প্রয়োজন হয়। প্রস্তাবনা পাশ হওয়ার পর প্রথমে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের রাজ্যপাল তাতে অনুমোদন দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠান। রাষ্ট্রপতি সিলমোহর দিলে তবেই সেই প্রস্তাবনা কার্যকর হয়।

সংসদে তিনটি কৃষি বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হওয়ার পরে পরেই পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ বিধানসভায় বিশেষ অধিবেশন ডেকে কেন্দ্রীয় আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাবনা পাশ করেন। সনিয়া গাঁধীও কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিতে একই রকম প্রস্তাবনা পাশের নির্দেশ দেন। সেই মতো কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিও পদক্ষেপ করেছে।

অন্য দিকে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে দিল্লিতে টানা প্রায় দেড় মাস ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন কৃষকরা। কেন্দ্রের সঙ্গে কৃষক নেতাদের ৭ দফা আলোচনার পরেও কোনও সমাধানসূত্র বেরোয়নি। এখনও কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতেই অনড় কৃষকরা। আর এই আন্দোলনের নেতৃত্বস্থানীয়দের মধ্যে অগ্রগণ্য বাম মনোভাবাপন্ন কৃষক সংগঠনগুলি। কেরলের বাম সরকার আগেই কৃষকদের আন্দোলনের পাশে দাঁড়িয়েছিল। এ বার সরকারি ভাবে কৃষক আইনকে তাঁর রাজ্যে কার্যত অকেজো করার পথে হাঁটলেন পিনারাই বিজয়ন।

অন্য বিষয়গুলি:

Kerala Farm Law Pinarayi Vijayan Kerala Assembly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy