বিধানসভার মধ্যে ভিডিয়ো দেখছেন লক্ষ্মণ সাভাদি এবং অন্য় বিধায়ক। ২০১২ সালে। —ফাইল চিত্র
কংগ্রেস-জেডিএস জোট সরকারের পতনের পর গত ২৬ জুলাই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নিয়েছিলেন বি এস ইয়েদুরাপ্পা। কিন্তু ওই দিন আর কোনও মন্ত্রীর নাম ঘোষণা হয়নি। এক মাস পর যখন মন্ত্রিসভা গঠন করলেন ইয়েদুরাপ্পা, তাতেও পিছু ছাড়ল না বিতর্ক। তিন উপ-মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে এমন এক জনকে আনলেন, যিনি সাত বছর আগে বিধানসভার ভরা অধিবেশন কক্ষে বসেই পর্ন ভিডিয়ো দেখার ঘটনায় অভিযুক্ত। সেই লক্ষ্মণ সাভাদি আবার বিধায়কও নন। ওই ভিডিয়ো কাণ্ডে আরও এক অভিযুক্তকেও মন্ত্রিসভায় এনেছেন ইয়েদুরাপ্পা। এই ঘটনায় ‘স্তম্ভিত’ বিরোধীরা। দলের অভ্যন্তরেও এ নিয়ে বেজায় অস্বস্তিতে ইয়েদুরাপ্পা তথা বিজেপি।
কী হয়েছিল সেই সময়? ২০১২ সালের ঘটনা। চলছিল কর্নাটক বিধানসভার অধিবেশন। অধিবেশন চলাকালীনই বিধানসভার মধ্যে পর্নোগ্রাফি দেখার অভিযোগ উঠেছিল বিধায়ক ও মন্ত্রী লক্ষ্মণ সাভাদি, সি সি পাতিল এবং কৃষ্ণ পালেমার। ওই ঘটনা নিয়ে তখন সারা দেশ তোলাপাড় হয়েছিল। যদিও তাঁদের সাফাই ছিল, মেঙ্গালুরুর রেভ পার্টি কেলেঙ্কারি নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার প্রস্তুতি চলছিল। সেই আলোচনার জন্যই রেভ পার্টি সম্পর্কে আরও জানার জন্যই ওই ভিডিয়ো দেখছিলেন। কিন্তু তাতেও বিতর্ক থামেনি। শেষ পর্যন্ত ইস্তফা দিতে হয়েছিল তিন মন্ত্রীকে।
এ বার ইয়েদুরাপ্পার মন্ত্রিসভায় সেই তিন জনের মধ্যে ফের জায়গা করে নিয়েছেন লক্ষ্মণ সাভাদি। তাঁকে উপ-মুখ্যমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসিয়েছেন ইয়েদুরাপ্পা। দায়িত্ব দিয়েছেন পরিবহণ বিভাগের। গত বছর বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থী মহেশ কুমাত্তালির কাছে হেরে যান সাভাদি। অন্য দুই উপ মুখ্যমন্ত্রী হয়েছেন গোবিন্দ কারজোল এবং অশ্বনাথ নারায়ণ। সিসি পাতিলও মন্ত্রীর শপথ নিয়েছেন, তবে তাঁর দফতর এখনও বণ্টন হয়নি।
সারা দেশে বিতর্কের ঝড় ওঠা বিধানসভায় পর্ন ভিডিয়ো কাণ্ডে অভিযুক্ত এবং বিধায়ক না হওয়া সত্ত্বেও কেন সেই সাভাদিকেই উপ-মুখ্যমন্ত্রী করলেন ইয়েদুরাপ্পা? দলত্যাগ করে বিধায়ক পদ খোয়ানো কংগ্রেস নেতা রমেশ জারাকিহোলির ঘনিষ্ঠ বন্ধু এই সাভাদি। এই রমেশ জারাকিহোলি আবার কংগ্রেস-জেডিএস সরকার ফেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন। তাঁর পরামর্শেই ডজনখানেক বিধায়ক কর্নাটকের জোট সরকার ছেড়েছিলেন বলে খবর। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করেন, রমেশের এই বিদ্রোহী হয়ে ওঠার পিছনে মন্ত্রণাদাতা ছিলেন তাঁর ‘বন্ধু’ সাভাদিই। আর উপ-মুখ্যমন্ত্রীর পদে বসিয়ে এ বার তাঁকে পুরস্কার দিলেন ইয়েদুরাপ্পা— ব্যাখ্যা পর্যবেক্ষকদের।
আরও পড়ুন: প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ, তিন দিন ধরে খোঁজ নেই তরুণীর!
আরও পড়ুন: আমাজন বাঁচাতে জি-৭-এর বিপুল পরিমাণ অর্থসাহায্য ফেরাল ব্রাজিল, আক্রমণ ফ্রান্সকে
ইয়েদুরাপ্পা পুরস্কার দিলেও ছাড়ছেন না বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই সিদ্ধান্তে তাঁরা ‘স্তম্ভিত’। দল এবং মন্ত্রিসভার অভ্যন্তরেও এ নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। ইয়েদুরাপ্পা ঘনিষ্ঠ বিজেপির মহিলা বিধায়ক এম পি রেনুকাচার্য খোলাখুলিই প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘কী এমন প্রয়োজনীয়তা ছিল যে নির্বাচনে হেরে যাওয়া সত্ত্বেও ওঁকে (লক্ষ্মণ সাভাদি)মন্ত্রী করার?’’
সাভাদি নিজে অবশ্য এ সবে কান দিতে রাজি নন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘জাতীয় ও রাজ্য নেতৃত্ব আমাকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী করেছেন, তাঁরা আমার উপর আস্থা রেখেছেন। আমি পদ নিতে চাইনি। বর্ষীয়ান নেতারাই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy