জেএনইউ-তে হামলার ঘটনায় চিন্তিত অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেএনইউ ক্যাম্পাসে ‘গেরুয়া’ হামলার সুদূরপ্রসারী প্রভাব দেখা যেতে পারে। ওই ঘটনার পর বিশ্ববাসীর কাছে দেশের ভাবমূর্তি নিয়েও চিন্তিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এমনটাই মনে করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর প্রাক্তনী অভিজিতের মতে, এই হামলার ঘটনায় নাৎসি জমানার পরিণত হওয়ার আগেকার বছরগুলিতে জার্মানির সঙ্গে মিল খুঁজে পাচ্ছেন তিনি।
রবিবার ভরসন্ধ্যায় জেএনইউ-তে মুখোশধারী গুন্ডাদের তাণ্ডবের পর গোটা বিশ্বের নজর কার্যত ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ঘুরে গিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে অনেকের মতোই চিন্তিত অভিজিৎ। এ দিন অভিজিৎ বলেন, ‘‘আমার মনে হয়ে বিশ্বের দরবারে দেশের ভাবমূর্তি নিয়ে যে ভারতীয়রা সহানুভূতিসম্পন্ন, তাঁদের চিন্তিত হওয়া উচিত। জার্মানি যখন নাৎসি জমানায় রূপান্তরিত হচ্ছিল, সেই সব বছরগুলির ছায়াই যেন দেখা যাচ্ছে।’’
গত সন্ধ্যায় জেএনইউ ক্যাম্পাসের ভিতর ঢুকে তাণ্ডব চালান মুখোশধারী গুন্ডারা। অভিযোগ, লাঠি-লোহার রড-পাথর নিয়ে ছাত্রীদের হস্টেলে ঢুকে ভাঙচুর, মারধর করেন তাঁরা। গুন্ডাদের হামলা থেকে রেহাই পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও। ওই ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ অন্তত ২৮ জনের আহত হওয়ার খবর মিলেছে। হামলার অভিযোগ উঠেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র বিরুদ্ধে। যদিও সে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি প্রেসিডেন্ট দুর্গেশ কুমার। গোটা ঘটনায় পড়ুয়াদেরকেই দোষারোপ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এম জগদেশ কুমার। যা খণ্ডন করেছে জেএনইউ ছাত্র সংসদ। তবে এই অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের মাঝে যাতে আসল ঘটনা চাপা না পড়ে যায় সে দিকে নজর দিতে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দায়িত্ব নিতে হবে বলে মনে করেন অভিজিৎ। তাঁর কথায়, ‘‘যা ঘটেছে সেটার আসল সত্যটা কী, তা খুঁজে বার করার দায়িত্ব সরকারের এবং পাল্টা অভিযোগের সমবেত স্বরে তা যেন ডুবে যেতে দেওয়া না হয়।’’
আরও পড়ুন: জেএনইউ: পড়ুয়াদের উপরই হামলার দায় চাপালেন উপাচার্য, তাঁর অপসারণের দাবি অধ্যাপকদের একাংশের
আরও পড়ুন: জেএনইউ: দেশজুড়ে প্রতিবাদ মিছিল, এবিভিপি-র বিরুদ্ধে স্লোগান, দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি
জেএনইউ-তে পড়ুয়া থাকাকালীন ছাত্র রাজনীতিতে রীতিমতো সক্রিয় ছিলেন অভিজিৎ। ১৯৮৩-তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘেরাও করায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ওই ঘটনায় দশ দিন তিহাড় জেলেও থাকতে হয়েছে তাঁকে। গত কালের হামলায় জখম পড়ুয়াদের শারীরিক অবস্থা নিয়েও চিন্তিত অভিজিৎ। হামলার পর একাধিক ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা গিয়েছে রক্তাক্ত পড়ুয়া-শিক্ষকদের। তাঁদের সুস্থতা কামনা করেছেন তিনি। অভিজিৎ বলেন, ‘‘যাঁরা জখম হয়েছেন, তাঁদের নিয়ে আমি সত্যিই চিন্তিত। আশা করি, সকলেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy