Advertisement
১৯ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

সংক্রমণ বেড়েছে, কমেছে সাংবাদিক বৈঠক

আগে যেখানে একই দিনে স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের তরফে আলাদা করে সাংবাদিক বৈঠক হত, সেখানে গত দু’সপ্তাহে কার্যত মুখে কুলুপ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২০ ০১:০৮
Share: Save:

দেশে করোনা-সংক্রমিতের সংখ্যা যত বেড়েছে, তত কমেছে সরকারি সাংবাদিক বৈঠক।

আগে যেখানে একই দিনে স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের তরফে আলাদা করে সাংবাদিক বৈঠক হত, সেখানে গত দু’সপ্তাহে কার্যত মুখে কুলুপ স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। ওই মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল তো দূর, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মুখ খোলেননি হর্ষ বর্ধনও। উল্টে গত দু’সপ্তাহ ধরে দিল্লির করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অতিসক্রিয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অনেকের মতে, সেই কারণেই সম্ভবত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের এই ‘পরিকল্পিত নীরবতা’। এমনকি, নীরব ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-ও। তবে, গত তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ থাকার পরে স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক আজ হয়েছে।

পরিসংখ্যান বলছে, স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের নেতৃত্বে ৩ ফেব্রুয়ারি গঠিত ওই মন্ত্রীগোষ্ঠী ফেব্রুয়ারিতে দু’বার, মার্চে (আক্রান্তের সংখ্যা হাজারের বেশি) ৭ বার, এপ্রিলে (আক্রান্তের সংখ্যা ২১ হাজারের বেশি) ৩ বার, মে মাসে (আক্রান্তের সংখ্যা ১ লক্ষের কাছাকাছি) দু’বার ও জুনে (আজ আক্রান্তের সংখ্যা ৪.৯০ লক্ষ) এখনও পর্যন্ত মাত্র একটি বৈঠক করেছে।

অথচ দেশে রোগীর সংখ্যা ফি-দিন রেকর্ড ভাঙছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৮ হাজারের বেশি মানুষ। অন্য দেশে করোনা-সংক্রমণের রেখচিত্র যখন ক্রমশ নিম্নমুখী হতে শুরু করেছে, তখন ভারতে উল্টো ছবি। অধিকাংশ কন্টেনমেন্ট জ়োনে গোষ্ঠী-সংক্রমণ শুরু হয়ে গিয়েছে বলেই মত স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। শুরুতে সংক্রমিতের সংখ্যা যখন কম ছিল, তখন সপ্তাহের সাত দিনই সাংবাদিক বৈঠক করে সরকারের সাফল্য প্রচার করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। কিন্তু লকডাউন শিথিল হতেই যত সংক্রমিতের সংখ্যা বেড়েছে, তখন প্রথম ধাপে সাত দিনের জায়গায় চার দিন, তার পরে সপ্তাহে এক দিন বৈঠক হয়েছে। গত দু’সপ্তাহে তা-ও হয়নি। বিরোধীদের মতে, সমালোচনামূলক কড়া প্রশ্ন যাতে না-আসে, সেই জন্যই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দৈনন্দিন সাংবাদিক বৈঠক।

আরও পড়ুন: কালো ত্রিপলের নয়া চিনা ছাউনি, গালওয়ানের নতুন ছবি

সরকারের নীরবতা নিয়ে সরব হয়েছেন রাহুল গাঁধী। এ প্রসঙ্গে টুইটে তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ দেশের নতুন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়়েছে। কিন্তু সরকারের কোনও পরিকল্পনা নেই। প্রধানমন্ত্রী নীরব। তিনি অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াই করার পরিবর্তে আত্মসমর্পণ করেছেন।’ স্বাস্থ্য বিষয়ক মন্ত্রিগোষ্ঠীর বৈঠক কেন ক্রমশ কমে এসেছে, তা নিয়েও সরব তিনি। রাহুল গাঁধীর অভিযোগের জবাবে অবশ্য আজ প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, ‘‘অন্যান্য অনেক দেশের থেকে ভারতের পরিস্থিতি ভাল। ইতালিতে প্রতি দশ লক্ষে মৃতের সখ্যা ৫৭৪, আমেরিকা, ব্রিটেন, স্পেন বা ফ্রান্সের সংখ্যাও ভারতের চেয়ে বেশি। সেখানে ভারতে গ্রামীণ ভারত যেখানে ৮৫ কোটি ভারতবাসী থাকেন, সেখানে করোনার সংক্রমণ পৌঁছয়নি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে।’’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বা স্বাস্থ্যকর্তারা নীরব হলেও, গত দু’সপ্তাহে সক্রিয়তা বেড়ে গিয়েছে অমিত শাহের। এই মুহূর্তে দিল্লির করোনা-পরিস্থিতি সামলানোর দায়িত্বে রয়েছেন তিনি। কিন্তু এ-ও ঠিক, অতিমারির এই ‘বিপর্যয়’ সামলানোর ক্ষেত্রে নোডাল সংস্থা— অমিতেরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তাই রাজনীতির অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, অমিতের অতিসক্রিয়তা দেখেই কি নীরব হয়ে গিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক? সরকারি সূত্রের অবশ্য বক্তব্য, রোজ প্রেস-বিবৃতি দেওয়া হচ্ছে। যখন যা নীতি নেওয়া হচ্ছে, তা অবিলম্বে জনসমক্ষেও আনছে কেন্দ্র।

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Covid-19
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy