Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

ঘোড়া, আস্তাবল ও জকিকে নিয়ে চর্চা

এই প্রশ্নের জবাবেই ফের ঘুরপাক খাচ্ছে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’ (হর্স ট্রেডিং) শব্দগুচ্ছ। কিন্তু যে ঘোড়া কেনা হচ্ছে, তার ‘আস্তাবল’ কোথায়? 

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৮
Share: Save:

মহারাষ্ট্রে মোট আসন ২৮৮। সরকার গড়তে চাই ১৪৫। আর আজ শরদ পওয়ার, উদ্ধব ঠাকরে আর সনিয়া গাঁধীর দল হাজির করল ১৬২ জন বিধায়ককে। তা হলে দেবেন্দ্র ফডণবীস আর অজিত পওয়ারের কাছে আছেন ক’জন? কী করে সরকার বাঁচিয়ে রাখার ব্যাপারে এত আত্মবিশ্বাস?

এই প্রশ্নের জবাবেই ফের ঘুরপাক খাচ্ছে ‘ঘোড়া কেনাবেচা’ (হর্স ট্রেডিং) শব্দগুচ্ছ। কিন্তু যে ঘোড়া কেনা হচ্ছে, তার ‘আস্তাবল’ কোথায়?

এই ‘আস্তাবল’ নিয়েই আজ তরজা তুঙ্গে উঠল। সকালে যার উল্লেখ হল সুপ্রিম কোর্টে। মহারাষ্ট্র নিয়ে চলছিল শুনানি। তখন উঠে এল ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বললেন, ‘‘আদৌ ঘোড়া কেনাবেচা হচ্ছে না। বরং একটি আস্ত আস্তাবল অন্য দিকে চলে যাচ্ছে।’’ জবাবে আবার শিবসেনার আইনজীবী কপিল সিব্বল বললেন, ‘‘আস্তাবল এখনও আছে। শুধু জকি পালিয়ে গিয়েছেন।’’ কপিলের ইঙ্গিত, বিরোধী শিবির অটুট রয়েছে। কিন্তু একমাত্র অজিত পাওয়ার এনসিপি ছেড়ে গিয়েছেন।

দুপুরে টেলিভিশনের পর্দায় হঠাৎ খবর, অমিত শাহও না কি তুষার মেহতার সুরেই মন্তব্য করেছেন। মহারাষ্ট্রে ঘোড়া কেনাবেচার অভিযোগ নিয়ে আজ সংসদে তুলকালাম এবং গাঁধী মূর্তির সামনে প্রতিবাদ–ধর্না প্রসঙ্গে অমিত বলেছেন, ‘‘কোন ঘোড়া কেনাবেচার কথা বলছেন তাঁরা? গোটা আস্তাবলই তো নিয়ে গিয়েছে। যখন বিজেপির সঙ্গে লড়ে উদ্ধব ঠাকরেকে তারা নিয়ে গেল, গণতন্ত্রকে হত্যা তখনই করা হয়েছে।’’ পরে কোনও চ্যানেলেই অমিতকথনের খবর আর দেখা যায়নি। কেন? ‘অজ্ঞাত’কারণ নিয়ে চর্চা চলেছে দিনভর।

কেন ঘোড়া

ঘোড়া কেনাবেচা কথাটা এসেছিল আমেরিকা থেকে। ঘোড়ার বাজারে ন্যায্য দাম ঠিকঠাক যাচাই করা যেত না। কারচুপি চলত। সেই সূত্রে উনিশ শতকের শেষে লেনদেনের দুর্নীতি বোঝাতে ‘হর্স ট্রেডিং’ কথাটা চালু হয়। পরে এক দলের রাজনীতিককে আর এক দলের কিনে নেওয়াকে এই শব্দবন্ধ দিয়ে অভিহিত করা শুরু হয়। এই শব্দবন্ধ জনপ্রিয় হওয়ার পিছনে রয়েছে ‘ডেভিড হ্যারম’ নামে একটি বই। ১৮৯৮ সালে প্রকাশিত বইয়ের লেখক এডওয়ার্ড নোইজ় ওয়েস্টকট। নিউ ইয়র্ক প্রদেশের সিরাকিউস-এর ব্যাঙ্কার ছিলেন তিনি। উপন্যাসের নায়ক ডেভিড হ্যারম ব্যাঙ্কার, ঘোড়া কেনাবেচাও করে। এবং সেই ব্যবসার কারচুপি নিয়ে সে
ছিল অকপট।

ঘোড়া কেনাবেচার কথা অবশ্য নানা ভাবেই এসেছে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে। শিবসেনার সঞ্জয় রাউত অভিযোগ করেন, ‘‘বিধায়ক কিনতে ‘অপারেশন পদ্ম’ চলছে। চারজন মিলে সেটি করছে। সিবিআই, ইডি, আয়কর ও পুলিশ।’’ বিজেপির দানভে পাটিলের জবাব, ‘‘সঞ্জয় রাউতের মানসিক হাসপাতালে যাওয়ার সময় এসেছে। কোনও ‘অপারেশন পদ্ম’ নেই। আমাদের যথেষ্ট বিধায়ক আছেন সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য।’’ মোদী সরকারের মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি আবার শরদ পওয়ারকে বিঁধে বলছেন, ‘‘শরদ পওয়ার বড় খেলোয়াড়। কিন্তু পিচ্ছিল পিচে দৌড়তে গিয়ে রান আউট হবেন।’’ শিবসেনা, কংগ্রেস ঘুরে বিজেপিতে আসা নারায়ণ রানেকে আজও অন্য দলের বিধায়ক ভাঙানোর কথা জিজ্ঞাসা করা হয়। জবাব আসে, ‘‘সকলের সঙ্গে আমার যোগাযোগ আছে। বিজেপির জন্য সব করতে পারি।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy