Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
India-China Clash

চিনের নয়া শিবির, সেনা বাড়াচ্ছে ভারত, লাদাখে জমি ফিরবে কি?

দিল্লির সামরিক নীতি হল, নিজে থেকে আগ্রাসী পদক্ষেপ নয়। কিন্তু খারাপ পরিস্থিতিতে সাজসরঞ্জামে যাতে ঘাটতি না হয়, তার ব্যবস্থা করে রাখা। 

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২০ ০৩:১৯
Share: Save:

পূর্ব লাদাখে সব রকম খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। পৌঁছে গিয়েছে ৪৫ হাজার সেনা, টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক, জমি থেকে আকাশমুখী ক্ষেপণাস্ত্র। বসেছে এয়ার সার্ভেল্যান্স সিস্টেম। এরই মধ্যে গালওয়ান উপত্যকায় নতুন করে চিনের আরও ১৬টি সেনা ছাউনির ছবি ধরা পড়েছে সাম্প্রতিক উপগ্রহচিত্রে।

গত ২২ জুনের উপগ্রহচিত্রে গালওয়ানে চিনের তৈরি পাকা পরিকাঠামোর হদিস মিলেছিল। এ বার খবরে প্রকাশ, ২৫ ও ২৬ তারিখের ছবিতে আরও ১৬টি কালো ত্রিপলে ঢাকা সেনাছাউনি দেখা যাচ্ছে, যা আগের ছবিতে ছিল না। অর্থাৎ চিন সেনা মোতায়েন বাড়িয়েই চলেছে। এমতাবস্থায় দিল্লির সামরিক নীতি হল, নিজে থেকে আগ্রাসী পদক্ষেপ নয়। কিন্তু খারাপ পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সাজসরঞ্জামে যাতে ঘাটতি না হয়, তার ব্যবস্থা করে রাখা।

বিরোধী রাজনৈতিক শিবির প্রশ্ন তুলছে, সে না হয় হল। কিন্তু চিনা সেনা যে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ১৮ কিলোমিটার ভিতরে ঢুকে তাঁবু গেড়ে রয়েছে, তাদের ফেরত পাঠানোর কোনও উপায় কি আদৌ রয়েছে? সেটা না থাকলে সেনা-প্রস্তুতির ফিরিস্তি দিয়ে অতি-জাতীয়তাবাদী দেখনদারির অর্থ কী? বিরোধীদের মতে, ভারত এখন যে সামরিক প্রস্তুতি নিচ্ছে, তার লক্ষ্য মূলত হল, চিন যাতে নতুন করে আর জমি দখল করতে না পারে। ফিঙ্গার চার থেকে আট এবং গালওয়ান উপত্যকার মতো এলাকা যাতে হাতছাড়া না হয়। কিন্তু গালওয়ানে দখল হওয়া কয়েকশো বর্গ কিলোমিটার জমির কী হবে?

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক নীরব। তারা সেনা ও সরঞ্জাম মোতায়েন পৌঁছনো, লাদাখের দৌলত বেগ ওল্ডি, ফুকচে, নায়োমা এয়ারস্ট্রিপ সক্রিয় করা, ৬৫টি পেট্রোলিং পয়েন্টে বাড়তি সেনা মোতায়েন নিয়ে কথা বলছে। কিন্তু হৃত জমির পুনরুদ্ধারে কী করা হবে, তা নিয়ে জবাব নেই। কূটনৈতিক স্তরে নানা ভাবে চিনকে ফিরে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু এত সহজে ভবি যে ভুলবে না, তা ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করছেন সরকারি কর্তারাই। দু’দিন আগে চিনের সঙ্গে যুগ্মসচিব স্তরে বৈঠকের পরে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রেও জানানো হয়, এই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি, দ্রুত মেটার নয়।

দিল্লি খুব ভাল করে বুঝতে পারছে, এই মুহূর্তে এই সংঘাতের আশু সমাধান নেই। দু’টি বৃহৎ পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ কার্যত অসম্ভব। সেটা এমনকি চিনেরও লক্ষ্য নয়। চিনের লক্ষ্য, দৌলত বেগ ওল্ডি সড়কের বাকি থাকা ১৮ কিলোমিটার রাস্তা যাতে শেষ না করেই ফিরে যায় ভারত। কারণ ওই সড়কের সুবাদে কারাকোরাম পাস আর অন্য দিকে আকসাই চিন ভারতীয় সেনার নাগালে আসুক, তা চায় না বেজিং। ভারতের উপর সেই চাপ বাড়াতেই গালওয়ান উপত্যকা আঁকড়ে পড়ে থাকার নীতি নিয়েছে চিন। জট কাটাতে দীর্ঘমেয়াদি আলোচনা ছাড়া বিকল্প নেই বলেই ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।

আরও পড়ুন: বিরোধী খবর! কোপে পিটিআই

জুনের একাধিক সামরিক ও কূটনৈতিক বৈঠকে দু’দেশের সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে চোখে চোখ রেখে দাঁড়ানোর অবস্থান থেকে সরে আসতে রাজি হয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, ভারতের সাফল্য এখনও ওইটুকুই। গালওয়ানের দাবি থেকে সরে আসার ব্যাপারে চিনের মৌখিক প্রতিশ্রুতি পাওয়া যায়নি। উল্টে গালওয়ান এবং প্যাংগং এলাকায় পরিকাঠামো বাড়িয়েই চলেছে চিন।

অন্য বিষয়গুলি:

India-China Clash Indian Army Ladakh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy