ধাপে ধাপে এলএসি থেকে সেনা ফিরিয়ে নিয়েছে ভারত-চিন দু’পক্ষই।—ছবি সংগৃহীত।
উত্তেজনার আঁচ আরও কিছুটা কমার ইঙ্গিত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) পরিস্থিতি সহজ করতে ভারত ও চিনের বাহিনী ‘ইতিবাচক ঐকমত্য’ রূপায়ণ করা শুরু করেছে— বলল চিন। বুধবার ভারতীয় এবং চিনা বাহিনীর মধ্যে ডিভিশনাল কম্যান্ডার স্তরের বৈঠক হয়েছে। সে বৈঠকে কী আলোচনা হল, তা এখনও জানায়নি দিল্লি। কিন্তু এর আগে ৬ জুন যে কোর কম্যান্ডার স্তরের বৈঠক হয়েছিল, সেই বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই এলএসি থেকে বাহিনী প্রত্যাহার করা চলছে বলে বেজিং এ দিন জানিয়েছে।
পূর্ব লাদাখে সঙ্ঘাতের কেন্দ্র হিসেবে যে ৪টি এলাকার নাম উঠে এসেছে, সেগুলি হল পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ (গলওয়ান উপত্যকা), পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৫ এবং পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৭ (হট স্প্রিং এলাকা) এবং প্যাংগং লেকের কাছে ফিঙ্গার-৪। মূলত এই ৪টি অঞ্চলেই পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থান করছিল ভারতীয় ও চিনা বাহিনী। চিন সীমা লঙ্ঘন করে এগিয়ে এসেছিল বলেই দিল্লির অভিযোগ। ওই সব এলাকা থেকে চিনকে ফিরতে বাধ্য করার জন্যই দ্রুত বড়সড় বাহিনী পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল লাদাখের ওই সব এলাকায়।
ভারতীয় বাহিনী যে এত দ্রুত এত বড় পদক্ষেপ করবে, চিন তা ভাবেনি বলে প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মত। গলওয়ান উপত্যকায় চিনের তৈরি করা অস্থায়ী শিবিরকে ভারত তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলেছে বলেও খবর আসছিল। এলএসি-তে ভারত-চিনের মধ্যে এই উত্তেজনার খবর আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ তৈরি করেছিল। একাধিক বৃহৎ শক্তি চিনকে সতর্কবার্তা দিতে শুরু করেছিল। সেই আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি এবং ভারতের কঠোর সামরিক অবস্থানের কথা মাথায় রেখেই হোক অথবা পুরোদস্তুর সামরিক সঙ্ঘাত এড়ানোর ইচ্ছায়, চিন কিন্তু এলএসি-তে উত্তেজনা কমানোর উপরেই জোর দিল আপাতত। ৬ জুন যে বৈঠক দুই বাহিনীর কোর কম্যান্ডারদের মধ্যে হয়েছিল, সেই বৈঠকের খবর বাইরে আসতে সময় লেগেছে। কিন্তু ওই বৈঠকেই যে উত্তেজনা কমানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা ক্রমশ স্পষ্ট হয়েছে। ধাপে ধাপে এলএসি থেকে সেনা ফিরিয়ে নিয়েছে দু’পক্ষই।
আরও পড়ুন: টুইটারে কেউ এ সব প্রশ্ন করে? লাদাখ নিয়ে মোদীকে বেঁধায় রাহুলের সমালোচনা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
মঙ্গলবারই নয়াদিল্লি সূত্রে জানানো হয়েছিল যে, এলএসি-তে যে সব এলাকায় উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল, সেগুলির অধিকাংশ থেকেই বাহিনী প্রত্যাহার করে নিয়েছে চিন ও ভারত। বুধবার চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং বলেছেন, ‘‘সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি চিন ও ভারতের কূটনৈতিক ও সামরিক কর্তৃপক্ষের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে এবং ইতিবাচক ঐকমত্যে পৌঁছনো গিয়েছে।’’ দু’পক্ষই এখন সীমান্তে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে পদক্ষেপ করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
আরও পড়ুন: দেরিতে বোধোদয় মোদীর, গ্রামীণ ভারতকে বাঁচাতে পারে মনরেগা-ই
ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪ (গলওয়ান উপত্যকা), পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৫ এবং পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৭ (হট স্প্রিং এলাকা) থেকে বাহিনী ফিরিয়ে নিয়েছে দু’দেশই। ওই এলাকা থেকে ২-৩ কিলোমিটার করে পিছিয়ে নেওয়া হয়েছে বাহিনীকে। তবে প্যাংগং-এর কাছে ফিঙ্গার-৪ এলাকায় পরিস্থিতি এখনও বদলায়নি বলে খবর। চিনা বাহিনী ওই এলাকা ছেড়ে এখনও পিছিয়ে যায়নি বলে জানা যাচ্ছে। ফলে ভারতীয় বাহিনীও মুখোমুখি অবস্থানে অনড়। তবে ফিঙ্গার-৪-এর পরিস্থিতি সম্পর্কে দিল্লি বা বেজিং-এর তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy