বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। —ফাইল চিত্র।
অতিমারির ছ’মাসে দেশে বড় রাজনৈতিক অস্থিরতা বিশেষ তৈরি না-হলেও, বিদেশনীতির প্রশ্নে একের পর এক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি মোদী সরকার। প্রতিবেশী প্রশ্নে কিছুটা উদ্বেগও তৈরি হয়েছে সাউথ ব্লকে। এই অবস্থায় এক দিকে যেমন বিদেশ মন্ত্রক বর্হিবিশ্বে সহযোগিতার বার্তা দিতে চাইছে। একই সঙ্গে দেশের ভিতরেও বিদেশনীতির প্রশ্নে ভাবমূর্তি স্পষ্ট করতে চাইছে। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স নামে একটি থিংক ট্যাঙ্ক আয়োজিত ভিডিয়ো সম্মেলনে এই দ্বিমুখী কৌশলের দিকেই জোর দিলেন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা।
বিদেশসচিব সেখানে ভারত কী ভাবে অতিমারির সময় প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাণিজ্যিক এবং স্বাস্থ্য-পরিষেবা সংক্রান্ত সংযোগ বজায় রেখে যাচ্ছে তার ব্যাখ্যা করেন। বলেন, “আত্মনির্ভর ভারত মানে বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গে বিচ্ছিন্ন করা নয়, বরং ভিন্ রাষ্ট্রের কাাছে নিজের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বাড়ানো এবং আন্তর্জাতিক জোগান ব্যবস্থায় নিজেদের অবদান রাখা।” পাশাপাশি চিন প্রশ্নে কড়া অবস্থান নিয়ে শ্রিংলা জানালেন, কোনও অবস্থায়ই ভারত নিজের সার্বভৌমত্বে আঁচ পড়তে দেবে না।
লাদাখ প্রশ্নেও এই প্রথম বিস্তারিত ভাবে মুখ খুলেছেন বিদেশসচিব। তাঁর কথায়, “প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যা ঘটেছে, তা অভূতপূর্ব। ১৯৬২-র পরে এমনটা আর ঘটেনি। চিন একক ভাবে সীমান্তের স্থিতাবস্থা বিঘ্ন করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু ভারত তার সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতার প্রশ্নে কোনও সমঝোতা করবে না।” তিনি বলেন, “অতিমারির মধ্যেও সামরিক স্তরে এবং কূটনৈতিক ভাবে কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে চিনের সঙ্গে। ভারত আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর পক্ষে। সীমান্তে চিনের সঙ্গে সংঘাত যে সার্বিক ভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে পড়েছে, তা স্পষ্ট করতে চেয়ে বিদেশসচিব বলেছেন, “যতক্ষণ না সীমান্তের সঙ্কটমোচন হবে, চিনের সঙ্গে আগের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়।”
আরও পড়ুন: ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় কিছুটা উত্তেজনা রয়েছে’, বলছেন সেনাপ্রধান
আরও পড়ুন: ২০২১-এর মাঝামাঝির আগে ব্যাপক হারে কোভিড টিকা আসার সম্ভাবনা কম: হু
শুধু চিন নয়, বাংলাদেশ এবং নেপাল প্রসঙ্গেও ভারতের বন্ধুত্বের পতাকাটি উঁচুতে তুলে ধরতে চেয়েছে সাউথ ব্লক। বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তাৎপযপূর্ণ ভাবে বিদেশসচিব বলেন, “আমি এই অতিমারির মধ্যে প্রথম এবং একমাত্র সফরটি করেছি ঢাকায়। আমি গেলাম কারণ কোভিডের ফলে সব থমকে রয়েছে। কোনও খবরও প্রকাশ্যে আসছে না। হয়তো কোনও দ্বিধা-সন্দেহ এই অন্তর্বর্তী সময়ে তৈরি হতে পারে। আমার সফরে প্রধানমর হসিনার সঙ্গে দারুণ কথাবার্তা হয়েছে। আরও জনা পঞ্চাশেক মানুষের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।”
নেপালের সঙ্গে সম্প্রতি কূটনৈতিক দ্বৈরথ হয়ে গেল ভারতের। ভারতীয় ভূখণ্ডের তিনটি অংশকে নেপাল তাদের রাজনৈতিক মানচিত্রের অন্তর্ভুক্ত করা নিয়ে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। নেপালের পিছনে চিন রয়েছে, এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক শিবির। বিদেশসচিব বিষয়টি থেকে তিক্ততা কমাতে এবং কাঠমান্ডুকে বার্তা দিতে চেয়ে মোদী সরকারের কাছে নেপালের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেছেন। জানান যে এই অতিমারির মধ্যেও বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানে ভারতের বাণিজ্যিক সরবরাহ অক্ষুণ্ণ ছিল। করোনা সংক্রান্ত কিটও ধারাবাহিক ভাবে পাঠানো হয়েছে এই দেশগুলিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy