ফাইল চিত্র।
প্রথম ধাপ সমাপ্ত। পরবর্তী ধাপের সেনা প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা করতে কাল ফের সেনা কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত ও চিন। কাল ওই বৈঠকটি হবে পূর্ব লাদাখের চুসুল সীমান্তে। গত মে মাস থেকে এটি চতুর্থ পর্যায়ের বৈঠক। সেনা সূত্রের মতে, ডেপসাং এলাকা ও প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার পাঁচ থেকে আট পর্যন্ত চিন সেনার প্রত্যাহার নিয়ে আলোচনা তো হবেই। তা ছাড়া গালওয়ান উপত্যকায় বিভিন্ন পেট্রোলিং পয়েন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বাফার এলাকায় নজরদারির প্রোটোকল তৈরি ও সীমান্তে সেনা উপস্থিতি ধাপে ধাপে কমানো নিয়েও আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
চুসুলে কাল সকাল সাড়ে দশটা থেকে বৈঠকটি শুরু হওয়ার কথা। ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করবেন সেনার ১৪ কোরের কমান্ডার লেফটেনান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ ও চিনের পক্ষ থেকে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ জিংজিয়াং মিলিটারি প্রদেশের কমান্ডার মেজর জেনারেল লিউ লিন। আগের বৈঠকটি হয়েছিল ৩০ জুন। সেই বৈঠকের ফল যথেষ্ট ইতিবাচক বলেই মনে করছে নয়াদিল্লি। কারণ তার পরেই গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট (পিপি) ১৪, হট স্প্রিং (পিপি ১৫) ও ঘোগরা (পিপি ১৭ ও ১৭এ) থেকে পিছু হটে চিন সেনা। দু’দিকের সেনা পিছু হটে মাঝে তৈরি হয় বাফার জ়োন। অন্য দিকে প্যাংগং লেকের উত্তরে ফিঙ্গার ৪ থেকে সরে যায় চিন সেনা। যদিও এখনও ফিঙ্গার পাঁচ থেকে আট নিজেদের দখলে রেখেছে চিন।
এই পরিস্থিতিতে কালকের বৈঠকে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। সেনা সূত্রের মতে, ফিঙ্গার পাঁচ থেকে আট পর্যন্ত চিন সেনা প্রত্যাহার নিশ্চিত করলে তবেই এপ্রিল মাসের আগেকার স্থিতাবস্থা ফেরানো সম্ভব হবে। ফলে ওই এলাকাগুলি থেকে সেনা সরানোর প্রশ্নে চাপ বাড়াবে ভারত। যে ভাবে গত দু’মাসে ওই এলাকায় পাকা রাস্তা, নজরদারি পোস্ট, সেনা ছাউনি বানিয়ে ঘাঁটি গেড়ে রয়েছে চিন, তাতে কতটা তারা ছাড়তে রাজি হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে প্রাক্তন সেনানীদের মধ্যেও। তাঁরা মনে করছেন, চিনের গতিবিধি থেকেই স্পষ্ট ওই এলাকায় দীর্ঘমেয়াদি অবস্থানের লক্ষ্যেই ফিঙ্গার ঘাঁটি বানিয়েছে চিন। গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত এলাকাগুলিতে নজরদারি চালিয়েছে ভারতীয় সেনা। চিন যদি শেষ পর্যন্ত সরতে রাজি না হয়, সে ক্ষেত্রে মুখ পুড়বে মোদী সরকারের।
আরও পড়ুন: কংগ্রেস হাইকমান্ডের কি আর দলের উপরে ‘কমান্ড’ নেই? প্রশ্ন তুলে দিল ‘বিদ্রোহ’
প্যাংগং-এর ফিঙ্গারগুলি ছাড়া ডেপসাং-এ চিন সেনা যে এগিয়ে এসেছে, তা-ও প্রত্যাহারের দাবি বৈঠকে তুলতে চলেছে ভারত। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার সঙ্গে সমান্তরালে দৌড়ানো দৌলত বেগ ওল্ডি সড়ক এখন চিনের গলার কাঁটা। ওই সড়কে ভারতকে চাপে রাখতে ডেপসাং এলাকায় অনেকটাই এগিয়ে এসেছে চিন সেনা। অনেক প্রাক্তন সেনানীর মতে, ওই এলাকাতেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ড দখল করে রয়েছে চিন। কালকের বৈঠকে ওই এলাকাটি থেকেও যাতে চিন সেনা পিছিয়ে যায়, তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। সীমান্ত এলাকায় দুই দেশ যে প্রচুর সেনা, ভারী কামান, ফাইটার জেট, মিসাইল সিস্টেম জমা করেছে সেগুলি ধাপে ধাপে প্রত্যাহার করা নিয়েও কথা হতে পারে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন ইন্দিরা, আল্পসের বরফ গলতেই ‘ব্রেকিং নিউজ’!
গত ৩০ জুনের বৈঠকের শর্ত মেনে গালওয়ান উপত্যকার পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪, হট স্প্রিং ও ঘোগরা এলাকায় পিছিয়ে গিয়েছে দুই দেশ। ভারতীয় সেনা পিছিয়েছে ১.৫ কিলোমিটার ও চিন সেনা সরেছে দুই কিলোমিটার। ফলে মাঝে যে তিন কিলোমিটার বাফার জ়োন তৈরি হয়েছে, তাতে কী ভাবে দু’দেশ সেনা নজরদারি চালাবে তা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা কাল। প্রাক্তন সেনানীদের মতে, উত্তেজনা কমাতে বাফার জ়োন তৈরি করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাফার জ়োনে দীর্ঘকালীন অনুপস্থিতি হলে ফের ওই এলাকা হাতছাড়া হওয়ার ভয় রয়েছে। সেটি মাথায় রেখেই আলোচনায় বসা উচিত বলেই মত তাঁদের।
এ দিকে গত কয়েক দিনের মতোই আজও প্রধানমন্ত্রীর নাম না করে আক্রমণ শানিয়ে রাহুল গাঁধী বলেন, ওই ব্যক্তি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে মিথ্যা কথা বলছেন। যার খেসারত দিতে হচ্ছে দেশবাসীকে। ভারত-চিন সংঘাত নিয়ে তিনি তাঁর বিস্তারিত মতামত জানিয়ে আগামিকাল একটি ভিডিয়োও প্রকাশ করবেন। রাহুলের দাবি, দেশের সংবাদমাধ্যম ফ্যাসিবাদী নিয়ন্ত্রণে চলে গিয়েছে। প্রকৃত সত্য
প্রকাশের দায়েই তিনি ভিডিয়ো-সিরিজ আনতে চলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy