লাদাখের উদ্দেশে ভারতীয় সেনা। বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের গান্ডারবলে। ছবি- রয়টার্স।
গলওয়ানের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় (এলএসি) সঙ্ঘর্ষের পরিস্থিতি মোকাবিলার কৌশল বদলাতে পারে সেনা। গত কয়েক দশক ধরেই চিন সীমান্তে মোতায়েন সেনানীদের প্রতি অলিখিত নির্দেশ রয়েছে, কোনও অবস্থাতেই প্রথমে গুলি চালানো চলবে না। কিন্তু সেনার একটি সূত্র জানাচ্ছে, চিনা ফৌজের হামলায় এক কর্নেল-সহ ২০ জন সেনার মৃত্যুর প্রেক্ষিতে সেই সিদ্ধান্ত ‘পর্যালোচনা’র সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ, সোমবার রাতে চিনা বাহিনী গুলি না-চালালেও পেরেক বসানো লাঠি আর ধারাল অস্ত্র নিয়ে টহলদার ভারতীয় সেনার উপর পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছিল। সে ক্ষেত্রে আত্মরক্ষার প্রয়োজনে প্রথমে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের আগাম অনুমতি থাকলে ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কম হতো বলে মনে করছেন সেনা আধকারিকদের একাংশ।
সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে প্রত্যাঘাতের দ্রুত অনুমতির জন্য উপযুক্ত বন্দোবস্তের প্রয়োজনীয়তা উঠে এসেছে আলোচনায়। সাম্প্রতিক সময়ে এলএসি-তে দু’তরফের সেনার হাতাহাতি, পাথর ছোড়াছুড়ি এমনকি লাঠালাঠিও হয়েছে। তাতে অল্পবিস্তর জখম হওয়ার খবরও মিলেছে। কিন্তু গলওয়ানের ঘটনায় স্পষ্ট, ‘হ্যান্ড টু হ্যান্ড কমব্যাট’কে রক্তক্ষয়ী করে তোলার জন্য পিপলস লিবারেশন আর্মির পূর্বপ্রস্তুতি ছিল। অতীতে অধিকৃত তিব্বতে বৌদ্ধদের বিক্ষোভ বা জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলিমদের প্রতিবাদ আন্দোলন দমন করতে পেরেক বসানো লাঠি ব্যবহার করেছে চিন সেনা। সোমবার রাতে ১৬ বিহার রেজিমেন্টের অফিসার ও জওয়ানদের বিরুদ্ধেও একই অস্ত্র প্রয়োগ করে তারা।
যদিও ভারতীয় সেনার সময়োচিত প্রতিরোধে রক্ত ঝরেছে হামলাকারী শিবিরেও। ভারতীয় সেনা সূত্র উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের দাবি, ঘটনায় চিনের প্রায় ৪৫ জন সেনা হতাহত হয়েছে। যদিও চিনের তরফে হতাহতের কথা স্বীকার করা হলেও তার সংখ্যা কত, তা স্পষ্ট করা হযনি। কিন্তু সে দেশের সরকারি সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসের এডিটর গত কালই কয়েক জন চিন সেনার নিহত ও আহত হওয়ার খবর জানিয়েছিলেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহও এদিন টুইট করে বলেন, ‘‘সেনাদের বীরত্ব ও বলিদান দেশ কখনওই ভুলবে না।’’
আরও পড়ুন- হোঁচট খেলে হাত টেনে ধরার লোক পায়নি সুশান্ত, লিখলেন সুজিত সরকার
আরও পড়ুন- ‘আমি যদি তোমার ভেঙে যাওয়া মনটাকে জোড়া দিতে পারতাম... ’
কিন্তু ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়ানোর জন্য রণকৌশলগত কিছু পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের অনেকেই। একটি সূত্রের খবর, গলওয়ানের সংঘর্ষে গুরুতর জখম ১৭ জন সেনাকে প্রতিকূল আবহাওয়া ও উচ্চতাজনিত কারণে সময়মতো উদ্ধার করে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয়নি। ফলে তাঁদের মৃত্যু হয়। শুধু লাদাখ নয়, গালওয়ানের ঘটনার জেরে সিকিম এবং অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তেও যে কোনও সময় উত্তেজনা ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ড্রাগনের নিঃশ্বাস ঝেড়ে ফেলতে তাই কার্যকরী ব্যবস্থা নেওয়ার ভাবনা এখন সেনার অন্দরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy