Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
Puducherry

হাতগাড়ি ঠেলে প্রৌঢ়কে নিয়ে হাসপাতালে পরিবার, চূড়ান্ত অমানবিকতার ছবি পুদুচেরিতে

কাছে মোবাইল ফোন না থাকায় কাউকে ফোন করতে পারেনি ওই পরিবার।

এ ভাবেই হাতগাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ওই প্রৌঢ়কে। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

এ ভাবেই হাতগাড়িতে চাপিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় ওই প্রৌঢ়কে। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
পুদুচেরি শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:৪০
Share: Save:

হাতগাড়িতে শীর্ণকায় প্রৌঢ়কে নিয়ে হাসপাতালে দৌড়চ্ছে পরিবার। সব দেখেও সাহায্য করতে এগিয়ে এলেন না কেউ। পকেট থেকে মোবাইল বার করে ফটাফট ছবি তুললেও, ফোন করে অ্যাম্বুল্যান্স ডাকার গরজ দেখাল না এক জনও। তার জেরে মাঝ রাস্তাতেই প্রাণ হারালেন ওই প্রৌঢ়। তবে সেখানেও গাড়ি জুটল না একটা। সেই হাতগাড়িতেই তাঁর মৃতদেহ নিয়ে ফিরল পরিবার।

বুধবার পুদুচেরির সুথুকেনিতে এমনই অমানবিকতার ছবি ধরা পড়ল। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রৌঢ়ের নাম সুব্রমণি। তামিলনাড়ুর বিল্লুপুরমের বাসিন্দা তিনি। কয়েক দিন আগে স্ত্রীর সঙ্গে পুদুচেরিতে শ্যালিকার বাড়িতে এসেছিলেন। দীর্ঘ দিন ধরে যক্ষ্মায় ভুগছিলেন তিনি। বুধবার আচমকাই শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে, অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান।

কাছে মোবাইল ফোন না থাকায় কাউকে ফোন করতে পারেনি ওই পরিবার। আবার এমন পরিস্থিতিতে যে অ্যাম্বুল্যান্সকে খবর দিতে হয়, তা-ও জানা ছিল না তাদের। তাই বাড়িতে রাখা হাতগাড়িতেই ওই প্রৌঢ়কে তুলে চার কিলোমিটার দূরে হাসপাতালের পথে রওনা দেন তাঁর স্ত্রী, শ্যালিকা এবং শ্যালিকার স্বামী। রাস্তায় তাঁদের দেখে অনেকেই ছবি তোলেন। কিন্তু সাহায্য করতে এগিয়ে আসেননি কেউ।

আরও পড়ুন: কর্নাটকে বিধায়ক ভাঙানোর কলকাঠি অমিতেরই! ফাঁস ইয়েদুরাপ্পার অডিয়ো রেকর্ড​

তাই হাতগাড়ি ঠেলেই হাসপাতালে পৌঁছয় ওই পরিবার। সেখানে ওই ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু তাতেও বিড়ম্বনা কাটেনি। বরং তাদের পক্ষে তামিলনাড়ুর বাড়িতে ওই বৃদ্ধর দেহ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন হাসপাতালের কর্মীরা। বলা হয়, হাসপাতাল থেকে তাঁদের বাড়ির দূরত্ব ২৫ কিলোমিটার। পুদুচেরির সীমানা ছাড়িয়ে সেখানে ঢোকার অনুমতি নেই হাসপাতালের কোনও গাড়ির।

অগত্যা ফের হাতগাড়িতেই দেহ তুলেই রওনা দেয় ওই সুব্রমণির পরিবার। বেশ কিছুটা রাস্তা পেরনোর পর স্থানীয় পুলিশ অফিসার জে মুরুগানন্দনের তাঁদের দেখতে পান। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে ফোন করে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেন তিনি।

আরও পড়ুন: সন্দেশখালিতে দুষ্কৃতী ধরতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ ৩ পুলিশ, চলছে ধরপাকড়​

একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জে মুরুগানন্দন বলেন, ‘‘ইরুলা উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত ওই পরিবার পেশায় দিনমজুর। মোবাইল ফোনের সামর্থ্যও নেই ওদের। রাস্তায় যারা ছবি তুলছিলেন, তাঁদের মধ্যে কেউ যদি অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে দিতেন, তা হলে হয়তো বা বেঁচেও যেতেন ওই প্রৌঢ়। কেউ গরজ দেখাননি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Puducherry Cart Hospital Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE