নাসিরুদ্দিন শাহ এবং ইমরান খান। —ফাইল চিত্র।
অসহিষ্ণুতা নিয়ে মুখ খোলার পরেই অজমেঢ় সাহিত্য উৎসব থেকে বাদ পড়েছে নাসিরুদ্দিন শাহর অনুষ্ঠান। নাসিরকে দেশদ্রোহী বলে গাল পেড়ে গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের টিকিট কেটে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এই আবহে শনিবার বাউন্সার ছুড়লেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
লাহৌরে এ দিন এক অনুষ্ঠানে ইমরান বলেন, ‘‘আমি মোদী সরকারকে দেখিয়ে দেব, কী ভাবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে হয়।’’ নাসিরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, ‘‘ভারতে তো অনেকেই বলছেন, সেখানে নাগরিক হিসেবে এখন সংখ্যালঘুদের সমান দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে না।’’
ইমরানের এই মন্তব্য নাসির-বিতর্কে স্বাভাবিক ভাবেই নতুন মাত্রা যোগ করল। অনেকে বলছেন, ইমরান মুখ খোলায় গেরুয়া শিবিরেরই সুবিধা হবে। নাসিরের মতো কণ্ঠস্বরকে আরও বেশি করে পাকিস্তানপন্থী বলে প্রচার করার অস্ত্র পেয়ে যাবে তারা। অন্য দিকে আর একটি মহলের মত হল, ইমরান সুচতুর ভাবে এই আবহে নিজের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করে দেখানোর চেষ্টা করছেন। সন্ত্রাস দমন প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক মহলে তাঁর যে চাপ বাড়ছে, তার মোকাবিলায় তিনি উদারমনস্ক, নয়া পাকিস্তানের ছবি আঁকার চেষ্টা করছেন।
আরও পড়ুন: আদালতে টিকবে কি নজরদারি নির্দেশ?
এখানে এ দিন নাসিরকে বিঁধে মুখ খুলেছেন তাঁর এক সময়কার সহ-অভিনেতা, বর্তমানে বিজেপি-ঘনিষ্ঠ অনুপম খের। অনুপম বলেন, ‘‘এ দেশে স্বাধীনতার তো অভাব নেই। এখানে সেনাবাহিনীকে হেনস্থা করা যায়, বায়ুসেনাপ্রধানকে কুকথা বলা যায়, সেনাকে তাক করে পাথর ছোড়া যায়...আর কত স্বাধীনতা চাই?’’ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুখতার আব্বাস নকভি কিঞ্চিৎ নরম সুরে আখেরে একই কথা বলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘নাসিরের সন্তানদের ভয়ের কারণ নেই। সহিষ্ণুতা দেশের ডিএনএ-তে রয়েছে। তিলকে তাল করা হচ্ছে।’’ ইমরানের বক্তব্য শোনার পরে তাঁরা আরও সুর চড়ান কি না, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা। একমাত্র রিচা চাড্ডা ছাড়া বলিউডের আর কেউই এখনও সে ভাবে নাসিরের পাশে দাঁড়াননি।
তবে বামপন্থী বিশিষ্ট জনেদের একটা বড় অংশ নাসিরের সমর্খনে মুখ খুলেছেন। মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপরে যে আক্রমণ নেমে আসছে, তার নিন্দা করে বিবৃতি দিয়েছে ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘ। বাংলায় অনুরূপ একটি বিবৃতিতে সই করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সব্যসাচী চক্রবর্তী, শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়, পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, কৌশিক সেন, মেঘনাদ ভট্টাচার্য, অরুণ মুখোপাধ্যায়, অশোক মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌতও টুইট করেছেন এ দিন। তাঁর দাবি, সাহিত্য উৎসব থেকে নাসিরকে দূরে রাখার সিদ্ধান্তটা একান্ত ভাবে আয়োজকদের। এবং সেটা ‘দুর্ভাগ্যজনক’ সিদ্ধান্ত। অর্থাৎ গহলৌত বুঝিয়ে দিতে চান, এর সঙ্গে রাজ্যের নবনিযুক্ত কংগ্রেস সরকারের কোনও যোগ নেই। টুইটে তিনি লিখেছেন, ‘‘ঘটনাটা দুর্ভাগ্যজনক। প্রশাসন উৎসবে শান্তি বজায় রাখতে প্রস্তুত ছিল। সরকার ব্যক্তির অধিকার ও স্বাধীনতাকে সম্মান করে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy