প্রতীকী ছবি।
সময় যত গড়াচ্ছে, অর্থনীতিতে মন্দার ছায়া আরও গভীর হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন যত দীর্ঘ হচ্ছে, তাল মিলিয়ে কমছে সম্ভাব্য আর্থিক বৃদ্ধির হার। কমাতে কমাতে চলতি আর্থিক বছরে ভারতের সম্ভাব্য জিডিপি বৃদ্ধির হার শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনল সমীক্ষক সংস্থা মুডিজ। অর্থাৎ মুডিজ-এর পূর্বাভাস, এ বছর দেশে কোনও বৃদ্ধিই হবে না। তবে ২০২১-২২ আর্থিক বছর থেকে ফের আর্থিক বৃদ্ধির চাকা ঘুরতে শুরু করতে পারে, এবং ২০২২-২৩ সালে ফিরে আসতে পারে স্থিতাবস্থা— সমীক্ষায় ইঙ্গিত মুডিজ-এর।
মুডিজ-এর আগের সমীক্ষা রিপোর্টে রাজকোষের ঘাটতি ২০২১ সালে ৩.৫ শতাংশ বলা হয়েছিল। কিন্তু এ বারের সমীক্ষায় সেই ঘাটতি আরও বেড়ে ৫.৫ শতাংশ হতে পারে বলে অশনি সঙ্কেত মুডিজ-এর রিপোর্টে। রিপোর্টের বক্তব্য, ‘‘কোভিড-১৯ এর প্রকোপে স্থিতিশীল অর্থনৈতিক অবস্থা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যেতে পারে।’’ তবে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হার বেড়ে ৬.৬ শতাংশে পৌঁছতে পারে বলেও সমীক্ষায় উঠে এসেছে।
মুডিজ-এর সমীক্ষায় কেন এত নীচে নেমে গেল বৃদ্ধির হার? সংস্থার যুক্তি, ‘‘গ্রামীণ অর্থনীতিতে দীর্ঘস্থায়ী চাপ, খুব কম কর্মসংস্থান তৈরি, এবং সাম্প্রতিক নন ব্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে নগদের জোগান কমে যাওয়াতেই অর্থনীতি আরও দুর্বল হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’’ অর্থাৎ টানা লকডাউনের জেরে শিল্পোৎপাদনে ঘাটতি, শ্রমিক শ্রেণির আয় প্রায় শূন্যে নেমে আসা, বেকারত্ব বৃদ্ধি, ব্যাঙ্ক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির হাতে নগদের অভাবের মতো বহু বিষয়কেই ইঙ্গিত করছ এই রিপোর্ট।
আরও পড়ুন: মদের ‘হোম ডেলিভারি’ নিয়ে ভাবা উচিত রাজ্যগুলির, পরামর্শ সুপ্রিম কোর্টের
আরও দুর্দশার ইঙ্গিত দিয়ে মুডিজের বক্তব্য, আর্থিক বৃদ্ধির হার আশানুরূপ না হলে সরকারকে বিপুল ঘাটতি বাজেট করতে হবে এবং তাতে সরকারের দেনা বাড়বে। ফলে রাজকোষের অবস্থা আরও করুণ হবে।
আরও পড়ুন: লকডাউনের মধ্যেই তৃতীয় লগ্নি জিয়োয়, মুকেশের সংস্থায় ১১ হাজার কোটি ঢালছে মার্কিন সংস্থা
করোনাভাইরাসের জেরে সারা বিশ্বের অর্থনীতিই ধুঁকছে। অনেকেই বলছেন, ২০০৮ সালের মন্দাকে ছাপিয়ে এ বার ১৯৩০ সালের মহামন্দার (দ্য গ্রেট ডিপ্রেশন) দিকে এগোচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। কোভিড-১৯ সংক্রমণের নিরিখে ভারত এখনও উন্নত দেশগুলির তুলনায় এখনও ভাল জায়গায় থাকলেও টানা লকডাউন এবং করোনার মোকাবিলায় অন্যান্য ব্যবস্থা গ্রহণের জেরে দেশের অর্থনীতিতে যে তার বিপুল প্রভাব পড়বে, তার আঁচ পাওয়া গেল আরও একবার। অর্থনীতিবিদদের অনেকেরই আশঙ্কা করোনাভাইরাসের প্রকোপ দীর্ঘস্থায়ী হলে জিডিপি বৃদ্ধির হার ঋণাত্মক হয়ে যাওয়াও অসম্ভব নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy